লাল চুল নিয়ে অজস্র মিথ, সংস্কার-কুসংস্কার চালু রয়েছে। যুগে যুগে মানুষের কাছে সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী আচরণ পেয়ে এসেছেন রাঙাকেশীরা। কারও কাছে ভয়ের পাত্র, কারও কাছে পূজনীয়। কেউ করেছেন ঘৃণা, কেউবা মনে করেছেন সৌভাগ্যের প্রতীক।
প্রাচীন গ্রিকরা মনে করতেন, লাল চুলের মানুষেরা মারা যাওয়ার পর রক্তখেকো ভ্যাম্পায়ার হয়ে যায়। প্রাচীন রোমানরা সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে লাল চুলের দাসদের চড়া মূল্য দিয়ে কিনতেন। মিসরীয়রা বিশ্বাস করতেন, লাল চুলের পুরুষদের আগুনে পুড়িয়ে সেই ছাই মৃত্যুদেবতা ওসাইরিসের সমাধিতে ছিটিয়ে দিলে তিনি তুষ্ট হবেন এবং তাঁদের রক্ষা করবেন।
সেই যুগ গত হলেও ব্যক্তিত্ব বিচারে এখনো লাল চুলের অধিকারীদের মনে করা হয় রাগী এবং কঠিন মানসিকতার মানুষ। নিজের স্বপ্ন ও সাফল্যের ব্যাপারে একরোখা হন তাঁরা। তবে এ কথাও তো অস্বীকারের উপায় নেই যে এখন লাল কেশ মানে বিশেষ সৌন্দর্যের অনুষঙ্গ! দমকা হাওয়ায় ওড়ে যখন ঢেউখেলানো লাল চুল, মনে হয় যেন হাওয়ায় দুলছে আগুনের ফুলকি।
আজ ৫ নভেম্বর, নিজের লাল চুল ভালোবাসার দিন—লাভ ইয়োর রেড হেয়ার ডে। ২০১৫ সালে স্টিফানি ও আদ্রিয়েন নামে আমেরিকান দুই বোনের হাত ধরে দিবসটির চল হয়। তবে এর আগে ২০০৫ সালে নেদারল্যান্ডসে আয়োজিত হয়েছিল ‘রেডহেড ডে ফেস্টিভ্যাল’। ৮০টির অধিক দেশের দর্শনার্থীরা যোগ দিয়েছিলেন তাতে।
আমাদের দেশে অবশ্য লাল চুলের মানুষ খুব একটা দেখা যায় না। কদাচিৎ লালচে চুলের কাউকে দেখলে অন্যদের ভালো লাগলেও তিনি নিজে যেন কিছুটা অস্বস্তিতে ভোগেন। অথচ যাঁদের আছে মাথাভর্তি এমন রাঙা চুল, তাঁদের তো লজ্জায় রাঙা হওয়ার কিছু নেই। বরং বিশেষ এই সৌন্দর্যের জন্য আলাদা আনন্দ তাঁরা পেতেই পারেন।
ডেজ অব দ্য ইয়ার অবলম্বনে