ডিওডোরেন্টে অনীহা? এই প্রাকৃতিক উপকরণগুলো দিতে পারেন

ডিওডোরেন্টের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন প্রাকৃতিক উপকরণমডেল: মার্শিয়া, কৃতজ্ঞতা:যাত্রা, ছবি: সুমন ইউসুফ

বছরের অধিকাংশ সময়জুড়েই নিত্যসঙ্গী হয়ে আমাদের সঙ্গে থাকে ঘাম। কারও কম, কারওবা বেশি, এই যা পার্থক্য। ঘামের দুর্গন্ধের কথাও তাই মাথায় রাখতে হয়। অনেকেই ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করেন। তবে রাসায়নিক সমৃদ্ধ এই অনুষঙ্গ ব্যবহারের ফলে কারও ত্বক কালো হয়ে যায়, কারও বা হয় চুলকানি বা অস্বস্তি। এসব কারণে কেউ কেউ এগুলোর বিকল্পও খোঁজেন।

ঘামের দুর্গন্ধ এড়াতে গোসল করতে হবে খুব ভালো করে, শরীর রাখতে হবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। গোসলের সময় এবং গোসলের পর কিছু প্রাকৃতিক উপকরণ ব্যবহার করে ঘামের দুর্গন্ধ কমানো যায়, ধরে রাখা যায় সতেজতা। গোসলের একদম শেষ ধাপে এক মগ পানিতে দেড় চা-চামচ কর্পূর মিশিয়ে নিন। চুল ধোয়ার শেষ পর্যায়ে এই পানিটুকুই ব্যবহার করুন। এরপর মাথায় আর পানি ঢালা যাবে না। গোসলের শেষ ধাপে শরীরে ঢালার জন্য মগের পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে নিন এক কাপ, সঙ্গে যোগ করুন এক কাপ পুদিনা পাতার রস। এই পানি শরীরে ঢালার পরও আলাদাভাবে আর পানি ঢালবেন না। ডিওডোরেন্টের বিকল্প হিসেবে এমন নানা প্রাকৃতিক উপকরণ ব্যবহারের পরামর্শ দিলেন হার্বস আয়ুর্বেদিক ক্লিনিকের আয়ুর্বেদিক রূপবিশেষজ্ঞ আফরিন মৌসুমি।

প্রকৃতির পরশ

• সমপরিমাণ নিমপাতা, পুদিনাপাতা ও তুলসীপাতা মিশিয়ে নিন। পাতাগুলো পানিতে দিয়ে জ্বাল দিন। সবুজ রং বের হলে নামিয়ে ঠান্ডা করুন। এরপর ছেঁকে ডিপ ফ্রিজে কিউব আকারে জমিয়ে রাখুন। রোজ গোসলের সময় শেষ ধাপে শরীরে ঢালার জন্য একটি করে কিউব বের করে এক মগ পানিতে ছেড়ে দিতে পারেন। শরীরে ঢালার আগে ভালোভাবে পানিতে মিশিয়ে নিন। তরল সাবানের সঙ্গে সমপরিমাণ লেবুর রস কিংবা সাদা ভিনেগার মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন। শ্যাম্পুর সঙ্গেও একইভাবে লেবুর রস বা ভিনেগার মিশিয়ে ব্যবহার করা যায়।

ছবি: সুমন ইউসুফ

ডিওডোরেন্টের বিকল্প

শরীরের যেসব অংশ বেশি ঘামে, যেমন বগল, কুঁচকি, সেসব অংশে ব্যবহারের জন্য ডিওডোরেন্টের বিকল্প দিলেন আফরিন মৌসুমি—

• ডাঁটা ফেলে পুদিনাপাতা ব্লেন্ড করে রস করে নিন। এক কাপ রস নিয়ে জ্বাল দিন। ঘন হয়ে এলে সঙ্গে তিন কাপ গোলাপজল যোগ করুন। আবার জ্বাল দিন। ভালোভাবে ফুটে উঠলে নামিয়ে ঠান্ডা করে স্প্রে বোতলে করে ফ্রিজে রাখুন। ফ্রিজে সপ্তাহখানেক ভালো থাকবে। চাইলে এই অনুপাত একটু বেশি পরিমাণে তৈরি করে কিউব আকারে ডিপ ফ্রিজেও জমিয়ে রাখতে পারেন। শরীরের যেসব অংশ বেশি ঘামে, গোসলের পর কিংবা সকালে বের হওয়ার আগে সেসব অংশে স্প্রে করে এটি ব্যবহার করতে পারেন। কিংবা কিউব বের করে সেসব অংশে ঘষে নিয়ে তোয়ালে দিয়ে আলতোভাবে মুছে নিতে পারেন। সারা দিন সতেজ অনুভব করবেন।

• এক কাপ গোলাপজল, আধা চা-চামচ কর্পূর এবং সিকি চা-চামচ মেন্থল মিশিয়ে স্প্রে বোতলে করে ফ্রিজে রেখে দিন। এটিও গোসলের পর কিংবা সকালে বের হওয়ার আগে স্প্রে করে নিতে পারেন। বার হিসেবেও কর্পূর কিনতে পাওয়া যায়। পানিতে ভিজিয়ে বগলের নিচে ব্যবহার করতে পারেন।

পাউডারের বিকল্প

অবশেষে প্রাকৃতিক পাউডার ব্যবহার করতে পারেন পুরো শরীরে। এক টেবিল চামচ কর্পূর এবং এক চা-চামচ মেন্থল ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। সঙ্গে নিন খাঁটি শঙ্খগুঁড়া এক কাপ। মিশ্রণটি বায়ুরোধী পাত্রে সংরক্ষণ করুন। রোজ গোসলের পর পুরো শরীরে আলতোভাবে বুলিয়ে নিন।