যে অকৃত্রিম উপায়ে ভুরু আর আইল্যাশ ঘন করতে পারবেন

সৌন্দর্যচর্চাকেন্দ্রে আইল্যাশ ও ভুরু ঘন করার সেবাও আছে
মডেল: আয়েশা ফিজা, ছবি: অগ্নিলা আহমেদ

যতজনের সঙ্গে কথা হলো, মোটামুটি সবাই একমত। একজন তো বলেই বসলেন, ‘চোখের ওপর এক জোড়া সমান ও পুরু ভুরু আর দুই চোখে দীর্ঘ ঘন পাপড়ি থাকলে আর কী চাই?’ আসলে কমবেশি সবাই চান চোখজোড়া হয়ে উঠুক সুন্দর। বাইরে যাওয়ার আগে ভুরু আঁকাটা তাই অনেকেরই নিয়মিত কাজ। কিন্তু হালকাভাবে ভুরুজোড়া সাজিয়ে তুলতেও কত কী-ই না লাগে! চাই ভুরু পেনসিল, জেল বা টিন্ট, ব্রাশ ইত্যাদি। অনেকে আজকাল আবার ব্যবহার করছেন ভুরু সোপ।

চোখের পাপড়ি অবশ্য সব সময় সাজিয়ে তোলা হয় না। আলাদা করে নকল পাপড়ি পরা অনেকের কাছে খুব শখের হলেও বিশেষ কোনো অনুষ্ঠান ছাড়া পরা হয় না। প্রতিদিনের এত সব ঝক্কির বদলে একেবারে ‘স্থায়ীভাবেই’ যদি ভুরুটাকে করে তোলা যায় পুরু আর পাপড়িগুলোকে দিঘল? অন্তত কয়েক মাসের জন্য এমন করা গেলে তো সত্যিই বাঁচোয়া। ভুরু ও পাপড়ির এমনই দুটি ‘স্থায়ী’ সাজের পদ্ধতি হলো ভুরু মাইক্রোব্লেডিং ও পাপড়ি এক্সটেনশন।

ভুরু মাইক্রোব্লেডিং

মাইক্রোব্লেডিং করা হচ্ছে
ছবি: অগ্নিলা আহমেদ

বাইরে যাওয়ার আগে প্রতিদিন নিয়ম করে ভুরু আঁকতে না চাইলে বছরে-দেড় বছরে একবার ভুরু মাইক্রোব্লেডিং করিয়ে নিলেই হবে। ভুরু হালকা হলে কিংবা আরও একটু সুন্দর করতে চাইলেও করাতে পারেন মাইক্রোব্লেডিং। এটা অনেকটাই ট্যাঁটু বা উলকির মতো। তবে ট্যাঁটুগানের পরিবর্তে এখানে ব্যবহার করা হয় খুব সূক্ষ্ম ও ক্ষুদ্র সুইওয়ালা একটি বিশেষ যন্ত্র। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ হাতে খুব ভালো মানের ইঙ্ক বা কালি দিয়ে আঁকা হয় ছোট ছোট ভুরু।

মাইক্রোব্লেডিংকরা হয় খুব সূক্ষ্ম ও ক্ষুদ্র সুইওয়ালা একটি বিশেষ যন্ত্র দিয়ে
ছবি: অগ্নিলা আহমেদ

বনানীর পিয়াস বিউটি এসেনশিয়ালসের স্বত্বাধিকারী ও রূপসজ্জাকর পিয়া জামান বলেন, ‘শুনতে ভয়ের মনে হলেও এতে তেমন কোনো ব্যথা নেই। নাম্বিং ক্রিম (ক্ষণস্থায়ীভাবে ত্বক অসাড় করার বিশেষ ক্রিম) দিয়ে নেওয়া হয়, তাই ব্যথা পাওয়ার প্রশ্নই আসে না।’ খুব বেশি অ্যালার্জি না থাকলে এটি যে কেউই করাতে পারবেন, জানান ধানমন্ডির লি-রেন মেকওভার স্যালনের স্বত্বাধিকারী অগ্নিলা হোসেইন। পারলারভেদে খরচ ৩ থেকে ১০ হাজার টাকা।

পাপড়ি এক্সটেনশন

চাইলে চোখের পাপড়ি বাড়াতে পারবেন
ছবি: অগ্নিলা আহমেদ

পাপড়ি বাড়ানোর কাজটাও খুব জটিল কিছু নয়, জানালেন লি-রেন মেকওভার স্যালনের স্বত্বাধিকারী অগ্নিলা হোসেইন, ‘চোখের পাপড়িতে বিশেষ গ্লু বা আঠা দিয়ে খুব নরম ও সিনথেটিক ধাঁচের কৃত্রিম পাপড়ি একটি একটি করে লাগিয়ে দেওয়া হয়। ইচ্ছেমতো পাপড়ির মাপ ও আকার বেছে নেওয়া যায়। একবার করিয়ে নিলে প্রায় দুই মাস ভালো থাকে।’ মাঝেমধ্যে একটি বা দুটি পাপড়ি খুলে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে আবার লাগিয়ে নেওয়া যাবে।

অকৃত্রিম আইল্যাশ
ছবি: অগ্নিলা আহমেদ

হাল ফ্যাশনের এই স্বল্প স্থায়ী রূপসজ্জা পশ্চিমা বিশ্বে অনেক আগে থেকেই চলছে। আজকাল দেশেও নারীরা বেশ আগ্রহী হয়ে উঠছেন, জানালেন ধানমন্ডির বিন্দিয়া এক্সক্লুসিভের স্বত্বাধিকারী ও রূপবিশেষজ্ঞ শারমিন কচি। তিনি বলেন, ‘এ-জাতীয় সেবায় দক্ষতা ও সাবধানতা প্রয়োজন। চাহিদা আছে দেখেই হুট করে এ ধরনের সেবা দেওয়া শুরু করা যাবে না।’ আইল্যাশ এক্সটেনশন যে কেউ করতে পারবেন, জানান রূপসজ্জাকর পিয়া জামান। তিনি বলেন, ব্যথা পাওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই, কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নেই। খরচ হতে পারে ২ থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত।