চুল দ্রুত বড় করার ৯টি উপায়
পাতলা চুল ঘন করতে চাইছেন? কিংবা চাইছেন দ্রুত বড় করতে? তাহলে নিচের ৯টি নিয়ম আপনার জন্য।
চুল ঘন, মজবুত ও বড় করতে বেশ ধৈর্য দরকার নিঃসন্দেহে। তবে কিছু উপায় মানলে তুলনামূলকভাবে দ্রুত বড় করা সম্ভব। গড়ে আমাদের চুল মাসে প্রায় আধা ইঞ্চি করে বাড়ে। অর্থাৎ বছরে প্রায় ছয় ইঞ্চি।
তবে ব্যক্তিভেদে এর কমবেশি হতে পারে। অন্যদিকে গবেষণা অনুসারে, আমরা প্রতিদিন ৫০-১০০টি চুল হারিয়ে ফেলি। তাই নিচের নিয়মগুলো মেনে চলুন, চুলের বৃদ্ধি করুন দ্রুততর।
নিয়মিত চুলের আগা ছাঁটুন
নিয়মিত চুল ছাঁটাই আপনার চুলের সুস্থ-স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। চুল ছাটলে ডগা ফাটার সমস্যা থাকবে না। চুল ভেঙে যাওয়ার সমস্যা গোড়ার দিকে ছড়িয়ে পড়বে না।
চুলের ডগা ফাটা বা ভেঙে যাওয়া মানেই চুল শ্রীহীন হয়ে পড়া এবং চুলের ঘনত্ব কমে যাওয়া। কোঁকড়ানো, ক্ষতিগ্রস্ত চুলের আগা ছেটে দিলে চুল স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও ঝরঝরে হবে। চুল বাড়বে দ্রুত।
প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খান
সুন্দর চুলের গঠন শুরু হয় শরীরের ভেতর থেকে। তাই চুল মজবুত করতে প্রতিদিন প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খান। যেমন ডিম, তেলযুক্ত মাছ, শিম, বরবটি, বাদাম, গোটা শস্য, মুরগির মাংস ইত্যাদি। আপনার প্রতিটি চুলই কেরাটিন দিয়ে তৈরি।
কেরাটিন মূলত কঠিন ধরনের প্রোটিন, যা আপনার নখ ও ত্বক তৈরির উপাদান। যদি আপনি প্রোটিন কম খান, তাহলে শরীর আরও গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ থেকে প্রোটিন শোষণ করবে। আপনার চুল হবে ক্ষতিগ্রস্ত।
চুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করুন
প্রোটিন নেওয়ার পরিমাণ বাড়াতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে মাল্টিভিটামিন নিতে পারেন। এমন ভিটামিন বেছে নিতে পারেন, যেটি বিশেষভাবে ত্বক, নখ ও চুলের জন্য উপকারী। চুলের বৃদ্ধি ও চুল পড়া রোধে এসব ভিটামিন ও পুষ্টি উপাদান বিশেষভাবে জরুরি—
ভিটামিন এ
ভিটামিন সি
ভিটামিন ই
জিংক
আয়রন
ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড
চুলের বৃদ্ধির জন্য সেরাম ব্যবহার করুন
ভালো মানের হেয়ার সেরাম চুলের বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। চুল ঘন ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করে।
প্রতি সপ্তাহে হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করুন
প্রতি সপ্তাহে হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করলে চুলে জট বাঁধে না, চুলের পানির চাহিদা পূরণ করে, চুল রুক্ষ হয় না। হেয়ার মাস্ক লাগিয়ে একটি কুসুম গরম তোয়ালে দিয়ে পাঁচ মিনিটের জন্য চুল মুড়িয়ে রাখুন।
ধোয়ার পর চুলের যত্ন নিন
ভেজা অবস্থায় চুল সবচেয়ে নাজুক থাকে। চুল ভেজা থাকলে কোনো স্টাইল করার আগে অবশ্যই শুকিয়ে নেবেন। নরম তোয়ালে দিয়ে চুল আলতো করে মুছে শুকিয়ে নিন। ঘষবেন না বা টানবেন না। চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত ধীরে ধীরে আঁচড়ে নিন।
চুলের জটে চিরুনি আটকে গেলে টানাটানি করবেন না। তাৎক্ষণিকভাবে চুলের জট ছাড়াতে এবং ভঙ্গুর চুলের গুচ্ছকে সুরক্ষিত রাখতে চুল ধোয়ার পর লিভ-ইন কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
অতিরিক্ত তাপ থেকে চুলকে রক্ষা করুন
চুলের স্টাইল করার জন্য অনেকেই বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেন। যন্ত্রগুলো ব্যবহার করার সময় সেসবের তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে রাখা উত্তম। চুলকে তাপ থেকে বাঁচাতে হিট প্রটেকশন স্প্রে ব্যবহার করুন।
ব্লো ড্রাই করার সময় চুল ৮০ শতাংশ ড্রাই করা হয়ে গেলেই ড্রায়ার বন্ধ করে দিন। বাসা থেকে বের হওয়ার আগে চুলের বাকিটুকু বাতাসে শুকিয়ে নিন।
অতিরিক্ত ঠান্ডা থেকেও চুলকে রক্ষা করুন
অতিরিক্ত গরম ও অতিরিক্ত ঠান্ডা—দুই-ই চুলের জন্য ক্ষতিকর। প্রচণ্ড সূর্যের আলো বা তীব্র ঠান্ডায় হ্যাট ব্যবহার করতে পারেন। বেশি বাতাসে বের হলে চুল পেছনে টেনে বেণি কিংবা খোঁপা বেঁধে নিন। এতে চুল এলোমেলো হবে না। চুলে জট লাগবে না।
রাতে চুল আঁচড়ান
অতিরিক্ত আঁচড়ালে চুল দুর্বল হয়ে যায়। কিন্তু ঘুমের আগে চুলগুলো একটু আঁচড়ে নিলে মাথায় স্বাভাবিকভাবে উৎপন্ন তেল চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়। এতে চুল পানিশূন্য হওয়া থেকে রক্ষা পায়। মাথায় রক্ত সঞ্চালন বাড়ে।
এতে ঘুমানোর সময় চুলে জট লেগে যায় না। ঘুমানোর সময় সিল্কের তৈরি বালিশের কভার ও হেয়ার র্যাপ ব্যবহার করতে পারেন। সুতি ও পলিয়েস্টারের তুলনায় সিল্ক চুলের প্রতি বেশি কোমল। চুল ভেঙে যাওয়া রোধে সিল্ক বেশ সহায়ক।
সূত্র: জন ফ্রিদা ডটকম