টিনএজারদের ত্বকের যত্ন

প্রতীকী ছবিছবি: পেকজেলসডটকম

বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের বড় একটি শারীরিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এ সময় মানসিক পরিবর্তনও হতে শুরু করে। আর টিনএজ বয়সটা উচ্ছলতার। কোন পোশাকটা তাকে মানাবে, কেমন হেয়ারস্টাইলে ভালো দেখাবে, সেসব নিয়েও কৌতূহলের শেষ থাকে না। এর কারণে ত্বক, চুল, মেকআপের বিষয়গুলোর প্রতি নজর দিতে হবে এ সময় থেকেই। নিজের পছন্দ–অপছন্দের বিষয়গুলো জানার পাশাপাশি সঠিক উপায়ে পরিচর্যার বিষয়েও জানা থাকা প্রয়োজন। এ বয়সে ত্বকে নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। যেমন—ব্রণ ওঠা, ত্বক তৈলাক্ত হয়ে যাওয়া। কিশোর বয়সে হরমোনের পরিবর্তনের জন্য ত্বকের গ্রন্থিগুলো বেশি তেল নিঃসরণ করে। ত্বকের ছিদ্রে তেল–ময়লা ঢুকে ব্ল্যাকহেডসের উৎপাত বাড়ে। এ সময় ত্বকের কোন ক্ষতি সারাজীবনের জন্য স্থায়ী হয়ে যেতে পারে! প্রাপ্তবয়স্কদের থেকে টিনএজারদের সৌন্দর্যচর্চা একেবারেই ভিন্ন। টিনএজারদের ত্বকের ধরন বড়দের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। এদের ত্বক খুবই কোমল ও সেনসেটিভ হয়। কয়েকটি নিয়ম মেনে চলতে পারলে সারা বছর ত্বকের নানা সমস্যা সহজেই এড়িয়ে চলা সম্ভব।

ত্বকের ধরন জানা

ত্বক পরিচর্যার প্রাথমিক ধাপ হলো নিজের ত্বক সম্পর্কে ধারণা থাকা। টিস্যুর সাহায্যে ত্বকের ধরন অর্থাৎ ত্বক তৈলাক্ত, শুষ্ক না মিশ্র, তা পরীক্ষা করা যায়। সাধারণত যাদের ত্বক তৈলাক্ত তাদের মুখের টি-জোন অর্থাৎ কপাল, নাক ও থুতনির অংশে তেল চিটচিটে ভাব থাকে। থাই টিস্যু ব্যবহার করে ত্বকের ধরন পরীক্ষা করে নিন।

ছবি: পেকজেলসডটকম

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা

ঘুম থেকে উঠে এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ত্বক ক্লিন করা খুবই জরুরি। কারণ, জমে থাকা তেল, ঘাম, ময়লা ত্বকের ক্ষতি করে। সব সময় ভালো মানের ক্লিনজার ব্যবহার করবেন। ফেস জোরে জোরে ঘষা থেকে বিরত থাকবেন।

ঘুমাতে যাওয়ার আগে মেকআপ তোলা

নিজেকে আয়নার সামনে সুন্দর করে প্রেজেন্ট করতে সবারই ভালো লাগে। আর টিনএজারদের সাজগোজের প্রতি অতিমাত্রায় ঝোঁক থাকে। প্রায়ই বিভিন্ন প্রোগ্রামে ভারী মেকআপ করে এই বয়সের মেয়েরা। প্রোগ্রাম শেষে বাসায় ফিরে ক্লান্ত হয়ে সোজা চলে যায় বেডে। কিন্তু এটা একদমই করা যাবে না। ঘুমানোর আগে অবশ্যই ভালো করে পুরো মুখ পরিষ্কার করতে হবে।

ছবি: পেকজেলসডটকম

পাঁচ মিনিট মালিশ করুন

রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় ত্বক ভালো করে ময়েশ্চারাইজ করা জরুরি। তবে যেকোনো ময়েশ্চারাইজার দিয়ে নয়, ভালো কোনো নাইট ক্রিম দিয়ে মুখের ত্বকে মিনিট পাঁচেক মালিশ করুন। এতে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে।

দুই সপ্তাহে একবার স্ক্র্যাব

বেশির ভাগ সময় টিনএজারদের ত্বক ব্লক হয়ে যায় ধুলা–ময়লায়। আর সেই ধুলা–ময়লায় ঘাম বসে স্কিন বাজেভাবে ব্লক হয়ে যায়। তাই দুই সপ্তাহে অন্তত একবার স্ক্র্যাব করুন। এটি ঘরেই করতে পারেন। ১ চা–চামুচ মধুর সঙ্গে অল্প পরিমাণ চালের গুঁড়া কিংবা চিনি মিশিয়ে অলতো করে ৫ মিনিট ধরে ঘষতে হবে। এরপর ঠান্ডা পানির সাহায্যে মুখ পরিষ্কার করবেন।

ছবি: পেকজেলসডটকম

ফেসমাস্ক ব্যবহার

সপ্তাহে অন্তত একদিন ফেসমাস্ক ব্যবহারে আপনার স্কিনে এনে দেবে অফুরন্ত জেল্লা। স্কিন দেখাবে টান টান আর ঝলমলে। স্কিনের ধরন অনুযায়ী ফেসমাস্কও আলাদা হয়। বাইরের কেনা ফেসমাস্কের চেয়ে বাসায় তৈরি করা ফেসমাস্ক বেশি কার্যকর। আপনি এটির মিশ্রণ তৈরি করতে পারেন হলুদ, বেসন, লেবুর রস, মধু, কাঁচা দুধ, মুলতানি মাটি, টমেটো দিয়ে। এর থেকে পছন্দসই উপাদান মিলিয়ে মাস্ক বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।

ব্যবহার করুন সানস্কিন

প্রতিদিন সানব্লক বা সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে
ছবি: পেকজেলসডটকম

হেলদি এবং ট্যান ফ্রি স্কিন পেতে প্রতিদিন সানব্লক বা সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। এটা ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা করে। অন্যথায় রোদপোড়াভাব ও পরে বয়সের ছাপ পড়ার মতো সমস্যা দেখা যায়। বাইরে যাওয়ার আগে ভালো করে সানস্ক্রিন মালিশের প্রয়োজন আছে। বাইরে থেকে এসে ভালো করে মুখ ক্লিন করা অবশ্যক।

প্রচুর পানি পান করুন

সারা দিন প্রচুর পানি পান করতে হবে
ছবি: পেকজেলসডটকম

পানির অপর নাম জীবন। পানি পান করলে যেমন জীবন বাঁচে না, তেমনি ত্বকও। তাই সারা দিন প্রচুর পানি পান করুন। সকালের শুরুটা করুন পানি পানের মাধ্যমে। সারা দিনে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।

চিকিৎসকের পরামর্শ নিন

স্কিনের নানা সমস্যা যেমন পিম্পল, ব্রেক আউট, র‌্যাশ ইত্যাদি হলে কারও থেকে শুনে বা নিজে নিজে কিছু একটা কিনে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।