টোকিওর মেকআপে নো মেকআপ লুক

‘মানি হেইস্ট’ ভক্তদের মন খারাপ ভাব এখনো কাটেনি। পঞ্চম সিজনের প্রথম পর্বের শেষে টোকিওর মৃত্যুতে অনেক ভক্তই রীতিমতো আহত। মেনে নিতে পারছেন না দলের অন্যদের বাঁচাতে টোকিওর এ মৃত্যু। টোকিওকে যদি মানি হেইস্টের সবচেয়ে জনপ্রিয় চরিত্র বলা হয়, বাড়াবাড়ি হবে না। লা কাসা দে পাপেল বা মানি হেইস্টের টোকিও হলেন ৩২ বছর বয়সী জনপ্রিয় স্প্যানিশ অভিনেত্রী উরসুলা কর্বাতু। যত দিন তিনি মানি হেইস্ট ওয়েব সিরিজেে ছিলেন, তাঁকে সেভাবে অন্যান্য অনুষ্ঠানে বা জনসমাগমে দেখা যায়নি। পঞ্চম সিরিজে মরে গিয়েই ভোগ ম্যাগাজিনকে ১০ মিনিটের এক মেকআপ টিউটোরিয়ালে জানিয়েছেন তাঁর ত্বকের যত্ন আর মেকআপের রহস্য।

কান চলচ্চিত্র উৎসবের লালগালিচায় উরসুলা
ছবি: উরসুলা কর্বাতুর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে নেওয়া

উরসুলা মেকআপ নেন না বা বিশেষ পছন্দ করেন না, যদি এমনটা ভাবেন, তবে আপনি একদম ভুল। এই অভিনেত্রী ভালোবাসেন মেকআপ করতে। প্রচুর মেকআপ ব্যবহার করে তিনি ‘নো মেকআপ লুক’ আনেন। উরসুলা ত্বকে শুরুতে স্ক্র্যাচের ব্যবহার করেন। ১৪ বছর বয়স থেকে নিজেই নিজের মেকআপ করা শুরু করেন তিনি। ত্বকের যত্নে বা মেকআপের ক্ষেত্রে একই প্রসাধন পণ্য বেশি দিন ব্যবহার করেন না। ভিডিওটিতে তিনি জানালেন, ‘আমি মাদ্রিদে থাকি। এখানকার আবহাওয়া খুবই শুষ্ক। এখানে আমি ত্বকের যত্নে যা কিছু ব্যবহার করি, বার্সেলোনায় থাকতে সেগুলো ব্যবহার করার প্রয়োজন হতো না। কেননা, সেখানকার আবহাওয়া ছিল খুবই আর্দ্র। তা ছাড়া আমার ত্বকও তখন অন্য রকম ছিল। আসলে আমি কিছুদিন পরপর বিশেষজ্ঞের মতামত নিয়ে নতুন নতুন পণ্য ব্যবহার করি।’

ভোগের প্রচ্ছদে উরসুলা
ছবি: উরসুলা কর্বাতুর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে নেওয়া

১৬ বছর বয়সে তিনি মেকআপে পারদর্শী হন। ওই সময়টাই তিনি সারা দিন ঘরে বসে মেকআপ করতেন। এরপর মাকে বলতেন বাড়িতে, ছাদে বা উঠানে ছবি তুলে দিতে। তারপর আবার ঘরে এসে মেকআপ তুলে ঘুমিয়ে পড়তেন।

স্ক্র্যাবার ব্যবহারের পর উরসুলা একটা টনিক লাগান মুখে। এরপর চোখের নিচে লাগান ‘আই মাস্ক’। কিছুক্ষণ রেখে আবার তুলে ফেলেন। এরপর মুখে সিরাম ও ময়েশ্চারাইজার লাগান। এরপর চোখের পাপড়ি ঠিক করে নেওয়ার পালা। তারপর ভ্রুটাকে আকার দেন। এতক্ষণ যা বললাম, এটা মাত্র শুরু। এটাকে বলা যায় মেকআপের জন্য ত্বককে তৈরি করার ধাপ।

মেকআপ করতে খুবই ভালোবাসেন এই অভিনেত্রী
ছবি: উরসুলা কর্বাতুর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে নেওয়া

এরপর মুখে শ্যানেলের প্রাইমার ব্যবহার করেন। এটাকে তিনি বলেন ‘সেকেন্ড প্রাইমার’। তিনি সব সময় ত্বকের রঙের এক ধাপ ওপরের আর এক ধাপ নিচের দুটি ফাউন্ডেশন মেশান। তারপর মুখে লাগান। দুটো টোনের দুটো কনসিলার লাগানোর পর ঠোঁটে দেন ময়েশ্চারাইজারের ছোঁয়া। চোখে আইশ্যাডো লাগাতে লাগাতে জানান, হলিউড তারকা নাটালি পোর্টম্যান তাঁর বিউটি আইকন।

‘রিও’র সঙ্গে ‘টোকিও’
ছবি: উরসুলা কর্বাতুর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে নেওয়া

বেশ কয়েক পদের আইশ্যাডো লাগানোর পর উরসুলা সেগুলোকে মেশান। নীল, গোলাপি আর সোনালির মিশেলে তৈরি করেন চকচকে হাইলাইটার। চোখের ওপরে মূলত যে রঙের আইশ্যাডো ব্যবহার করেছেন, সেটার এক ধাপ গাঢ় রঙের শেড দিয়ে কাজলের মতো করে চোখের ওপরে লাগান। এটাকে উরসুলা বলেন, ‘ফেক আই লাইনার’। এরপর তিনি ছড়িয়ে থাকা আইশ্যাডোগুলো একটা কটনবাড দিয়ে সরিয়ে নেন। চোখের নিচের অংশেও একইভাবে আইশ্যাডো লাগান। চোখের পাপড়িগুলো ‘কার্ল’ করে নেন। এরপর তিনি সেখানে মাসকারা দেন। ল্যাশ ব্রাশ দিয়ে সেগুলো ঠিকঠাক করে নেন। মুখের দুই চোয়ালে ব্লাশঅন লাগান।

উরসুলা কর্বাতু
ছবি: উরসুলা কর্বাতুর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে নেওয়া

ঠোঁটটা প্রথমে ম্যাকের লিপ পেনসিল দিয়ে এঁকে নেন। রিয়ানার ফেন্টি বিউটির লিপস্টিক ব্যবহার করেন। এরপর তিনি দুই চোয়ালে, নাকে, কপালে হাইলাইটার ব্যবহার করেন। সবশেষে করেন কেশসজ্জা। চুলে আলতো করে তেল লাগান। আইব্রো পেনসিল দিয়ে ঠোঁটের তিলটা আরও স্পষ্ট আর গাঢ় করে তোলেন। চেহারার অন্যান্য জায়গায় মেকআপে ঢাকা পড়া তিলগুলোকেও স্পষ্ট করে দেন। এভাবেই মেকআপ শেষ করেন এই তারকা!