শিমুল তুলার বালিশ কেন ভালো?

তুলাভেদে দামেও দেখা যায় পার্থক্যছবি: অগ্নিলা আহমেদ

মাথার বালিশ হওয়া চাই এমন, যেন দিন শেষে তাতে মাথা ছোঁয়ালেই মেলে স্বস্তির পরশ, ঘাড় থাকে সুরক্ষিত, সঙ্গে ঘুমটাও হয় ভালো। ক্রেতার চাহিদাভেদে বাজারে পাওয়া যায় নানা রকম বালিশ। বিশেষ করে তুলায় দেখা যায় ভিন্নতা। তুলাভেদে দামেও দেখা যায় পার্থক্য।

বাজারে আছে নানা ধরনের তুলা
ছবি: অগ্নিলা আহমেদ

অনেকে বলেন, বালিশ মানেই শিমুল তুলার হতে হবে। শিমুল তুলা হচ্ছে তুলার রাজা, দাবি করেন তাঁরা। কথা সত্যি। শিমুল তুলার বালিশ যেমন সবচেয়ে আরামদায়ক, তেমনি টেকসই। কিন্তু শিমুল তুলার বালিশ কিনতে গিয়ে ঠেকতে হয় এর চড়া দামে। এই তুলার দাম কেজিপ্রতি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা। এমনকি গুণমানভেদে ৮০০ টাকাও হতে পারে। একটি আদর্শ মাপের মাথার বালিশ তৈরি করতে প্রয়োজন হয় দেড় থেকে দুই কেজি তুলা। সে ক্ষেত্রে একটি বালিশের দাম প্রায় হাজার টাকা কিংবা তারও ওপর চলে যায়।

ভালো তুলার বালিশ আপনাকে ফুরফুরে মেজাজে রাখতে পারে
ছবি: অধুনা

তারপরও শিমুল তুলার বালিশ কেন ভালো সেটা পরে জানাচ্ছি, তার আগে জেনে রাখুন, দাম হাতের নাগালে রেখে বালিশ কিনতে চাইলে তুলায় আপস করতে হবে। তবে এমন নয় যে এতে বালিশের গুণমান খুব একটা খারাপ হবে। বালিশের জন্য শিমুল তুলা ছাড়াও আছে কয়েক জাতের কার্পাস তুলা। কৃষকদের চাষ করা এই তুলা আবার কয়েক প্রকার হয়। রঙেও দেখা যায় ভিন্নতা। মানের পার্থক্যে এই তুলা কেজিপ্রতি ১৫০ থেকে ৫০০ টাকা। দেশি ফাইবার ও কৃত্রিম তুলা প্রতি কেজি পেয়ে যাবেন ২৫০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে।

আদর্শ মাপের মাথার বালিশ তৈরি করতে প্রয়োজন হয় দেড় থেকে দুই কেজি তুলা
ছবি: অগ্নিলা আহমেদ

এর চেয়েও কম খরচে বালিশ তৈরির করতে চাইলে বেছে নিতে পারবেন গার্মেন্টস ঝুট। কেজিপ্রতি এগুলোর দাম মাত্র ৫০ থেকে ৬০ টাকা।

একেবারে নতুন কিছু পরখ করে দেখতে আগ্রহী ব্যক্তিদের জন্য রয়েছে সম্পূর্ণ পাখির পালকের বালিশ। শৌখিন ও অভিজাত এই বালিশ অবশ্য চাইলেই সঙ্গে সঙ্গে কিনতে পারবেন না। ফরমাশ করলে পাখির পালক সংগ্রহ করে বেশ কিছুদিন সময় নিয়ে বানিয়ে দেবে বালিশ ব্যবসায়ীরা। দাম শুরু হবে পাঁচ হাজার টাকা থেকে।

শিমুল তুলার বালিশ কেন ভালো

বিভিন্ন রকম তুলার মধ্যে বালিশ বা লেপ তৈরির জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় শিমুল তুলা। কেন এই তুলার বালিশ এত জনপ্রিয়? জানতে চাইলে বাংলাদেশ তুলা উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, আরামের কারণেই শিমুল তুলা জনপ্রিয়। শিমুল তুলা দিয়ে বানানো বালিশের ফাইবার জড়িয়ে যায় না। এটি সব সময় ফুলে থাকে। অন্য তুলায় বালিশ তৈরি হলে একটা সময় পরে যেমন সেটা জড়িয়ে চুপসে যায়। শিমুল তুলায় সেটা হয় না। বরং শিমুল তুলার বালিশ পুরোনো হলেও একটু রোদ বা গরম পেলেই আবার ফুলে ওঠে।

শিমুল তুলার বালিশ, লেপ বা তোশক শীতের আগেই অনেকে রোদে দিয়ে গরম করে নেন। কিছুটা গরম হওয়ার পর শক্ত কিছু দিয়ে বাড়ি মারলে ফাইবারগুলো আলাদা আলাদা হয়ে আবার ফুলে দ্বিগুণ হয়ে যায়। শিমুল তুলার বালিশে ঘুমালে মাথাটা যেমন ভেতরে চলে যায়, তেমনি ঘাড়ের শিরদাঁড়াটাও সুন্দরভাবে সেট হয়ে সোজা থাকে। তাই চিকিৎসকেরাও এমন বালিশে ঘুমানোর পরামর্শ দেন বলে জানান আখতারুজ্জামান। শিমুল তুলা ব্যবহারের ক্ষেত্রে বীজ ও তুলা একসঙ্গে দিয়ে বালিশ বা লেপ তৈরি করলে সেটা বেশি ভালো হয়।

কোথায় পাবেন

ঢাকায় নীলক্ষেত সিটি করপোরেশন মার্কেট, নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড, গুলশান ডিসিসি মার্কেট, মিরপুর ১০ নম্বর ও ১ নম্বর মার্কেট, রামপুরা, মালিবাগসহ বিভিন্ন এলাকায়।