বাঁশিতে ফুঁ দিতেই রেফারির নকল দাঁত খুলে গেল, তারপর...

কত না বিচিত্র ঘটনার সাক্ষী হয়ে আছে ফুটবল দুনিয়া। এমনই পাঁচটি ঘটনার সন্ধান দিলেন কবীর হোসাইন

সেনেগালের ফুটবলার আলি দিয়া
ছবি: সংগৃহীত

আলি দিয়ার ধাপ্পা

১৯৯৬ সাল। সাউদাম্পটন ফুটবল ক্লাবের ম্যানেজার গ্রায়েম সোওনেসের কাছে একটি ফোন এল। ফোন করেছেন লাইবেরিয়ার কিংবদন্তি ফুটবলার জর্জ উইয়াহ। সেনেগালের ফুটবলার আলি দিয়াকে দলে নিতে অনুরোধ করলেন তিনি। স্বয়ং উইয়াহ ফোন করেছেন, ভরসা রাখলেন ম্যানেজার। আলি দিয়ার সঙ্গে চুক্তি হলো। প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে না পাড়ায় এক মাসের চুক্তি ১৪ দিনের মাথায় বাতিল করতে হলো। পরে জানা গেল, ফোনকলের পুরোটাই ছিল ধাপ্পা। জর্জ উইয়াহ নয়; জর্জ উইয়াহ সেজে ফোন করেছিলেন আলির বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুরা!

ছবি: সংগৃহীত

মাতাল রেফারি

খেলায় বাজে সিদ্ধান্ত দিলে রেফারিকে পাগল, মাতাল—এমন নানা কিছুই বলে থাকে দর্শক-সমর্থক। তা বলে সত্যি সত্যিই কোনো মাতাল রেফারি খেলা পরিচালনা করবেন! হ্যাঁ, বেলারুশের প্রিমিয়ার ডিভিশনের ম্যাচে ঠিক তাই ঘটেছিল। ২০০৮ সালের একটি খেলায় রেফারি ছিলেন সের্গেই স্মোলিক। পুরো খেলাজুড়েই মাঠের মাঝখানে ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। নড়াচড়া করেছেন অতি সামান্য। যাও একটু এদিক-ওদিক নড়েছেন, তাও টলে টলে, মাতালের মতো। ম্যাচ শেষে অন্য কর্মকর্তারা এসে তাঁকে তুলে নিয়ে যায়। পরে জানা যায়, সত্যি সত্যি সেদিন মাতাল ছিলেন স্মোলিক। বেলারুশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন এরপর অবশ্য তাঁকে বহিষ্কার করে।

প্রতীকী ছবি

দাঁতকাণ্ড

১৯৫৭ সাল। ডেনমার্কের এবেলটফট ও নোরেজেরের মধ্যে খেলা চলছে। ৪-৩ গোলে এগিয়ে তখন নোরেজের। খেলার আর অল্প সময় বাকি। রেফারি হেনিং এরিকস্ট্রাপ শেষ বাঁজি বাজালেই নোরাজের জয় সুনিশ্চিত। বাঁশিতে ফুঁও দিলেন রেফারি কিন্তু নকল দাঁত খুলে পড়ায় কোনো শব্দ বেরোল না। দাঁত খুঁজে লাগাতে লাগাতে একটা গোলই দিয়ে ফেলল এবেলটফট। অর্থাৎ খেলায় সমতা চলে এল। অনেক বিতর্কের পর অবশ্য গোলটি আর গণ্য করা হয়নি। নোরেজেরকেই জয়ী ঘোষণা করা হয়।

তৃতীয় হলুদ কার্ড দেখিয়ে মাঠছাড়া করা হয় সিমুনিককে

তিন হলুদ কার্ড

ফুটবলপ্রেমী মাত্রই জানেন, একজন খেলোয়াড় পরপর দুটি হলুদ কার্ড পেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা লাল কার্ড হিসেবে গণ্য হয়। কিন্তু ২০০৬ সালের বিশ্বকাপে ঘটে মজার এক ঘটনা। দুই দুইটা হলুদ কার্ড পাওয়ার পরও ক্রোয়েশিয়া দলের রক্ষণভাগের খেলোয়াড় জসিপ সিমুনিককে মাঠ ছাড়তে হয়নি। কারণ, প্রথম হলুদ কার্ডের ক্ষেত্রে ভুলক্রমে তাঁর জায়গায় প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া দলের এক খেলোয়াড়ের নাম লিখেছিলেন রেফারি গ্রাহাম পুল। পরে তৃতীয় হলুদ কার্ড দেখিয়ে মাঠছাড়া করা হয় সিমুনিককে।

আলভিন মার্টিন

তিন গোলরক্ষক

২১ এপ্রিল ১৯৮৬। ইংলিশ ক্লাব ওয়েস্টহ্যামের হয়ে নিউক্যাসলের বিপক্ষে হ্যাট্রিক করেন আলভিন মার্টিন। মজাটা হ্যাট্রিকে নয়, অন্য জায়গায়। হ্যাট্রিকের তিনটি গোল তিনি করেন ভিন্ন তিন গোলরক্ষকের বিপক্ষে। প্রথম গোলের পর গোলরক্ষক মার্টিন টমাস কাঁধের ব্যথা নিয়ে মাঠ ছাড়েন। বদলি আসেন ক্রিস হেডওয়ার্থ। দ্বিতীয় গোলের পর তিনিও চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন। মার্টিন হ্যাট্রিক গোলটি করেন তৃতীয় গোলরক্ষক পিটার বেয়ার্ডস্লের বিপক্ষে। ৮-১ গোলে ম্যাচ জেতে ওয়েস্টহ্যাম।

লিস্টভার্স, স্পোর্টসকিডাদ্য গার্ডিয়ান অবলম্বনে