প্রেমের অপরাধে প্রথম মৃত্যুর পরোয়ানা পাওয়া সেই কবি আমি

পাঠকের সুখ–দুঃখ, হাসি–আনন্দ, পছন্দ, ভালোলাগা, ভালোবাসাসহ যে কোনো না বলা কথা শুনতে চায় মনের বাক্স। প্রতি সপ্তাহে পাঠকের পাঠানো সেসব লেখা থেকে নির্বাচিত কিছু লেখা আজ প্রকাশিত হলো এখানে

মনের বাক্স

ভালোবাসা ছাড়া কী পুনর্জন্ম হয়!

তোমাকে শেষবার দেখার পর পেরিয়ে এসেছি কয়েক হাজার বছর। তুমি ছাড়াও জাগতিক আরও সহস্র এক কারণে আমার মৃত্যু হয়েছে। পূর্বজন্মে আমি জীবনানন্দ ছিলাম। তারও আগে প্রাচীন গ্রিকরা তোমায় যখন দেবী আফ্রোদিতি বলে জানত, তখন আমি ছিলাম তোমারই এক পূজারি পুরোহিত। হ্যাঁ, প্রেমের অপরাধে প্রথম মৃত্যুর পরোয়ানা পাওয়া সেই কবি আমি। তারও আগে পৃথিবীর প্রথম গান যে লিখেছিল তোমার প্রেমে, আমি তারই জাতিস্মর। ভালোবাসার জন্য পৃথিবীর প্রথম বিবাগি পুরুষ কিংবা উন্মাদ, সে আমি ছাড়া অন্য কেউ নয়। অজস্রবার জন্মেছি আমি প্রেমিক হয়ে। কিন্তু এবারের মৃত্যুকে ভয় পাচ্ছি আমি। ভালোবাসা ছাড়া অন্য কোনো বলে পুনর্জন্ম লাভের দুঃস্বপ্ন আমি দেখি না।

আল মাসুদ, সাতক্ষীরা

কথা রাখেনি

দীর্ঘ পাঁচ বছরের একসঙ্গে পথচলা। কথা ছিল কখনোই সে ছেড়ে যাবে না। তারপর হঠাৎ তার প্রস্থান। মাঝে কেটে গেছে ১০টি বছর। এরপর আবার নতুন করে পরিচয়, নতুন করে দেখা হওয়ার অপেক্ষা। নির্দিষ্ট সময়ে, নির্দিষ্ট জায়গায় আমি ঠিক গিয়েছিলাম কিন্তু সকাল গড়িয়ে দুপুর আর দুপুর গড়িয়ে বিকেল এলেও সে আর আসেনি। বরাবরের মতো এবারও সে কথা রাখেনি।

সোহেল রানা, আশুলিয়া, ঢাকা

মনে হয়, এই তো সেদিন

মনে আছে, জীবনে কোনো দিন বকুলগাছ দেখিনি বলে কত আফসোস করেছিলাম একসময়! মনে হচ্ছিল বিশাল এক জিনিস মিস করেছি। কী যেন একটা অপূর্ণতা। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে এই কথা বন্ধুমহলে জানাজানি হলে, আমাকে বকুলগাছ দেখানো যেন তাদের অপরিহার্য দায়িত্ব হয়ে পড়ে। ল ফ্যাকাল্টিতে অতি আবেগে প্রথম যেদিন বকুলগাছ দেখে জড়িয়ে ধরেছি, শামীমটা মিটিমিটি হেসে বলছে, ওভাবে ফুল গাছ জড়িয়ে ধরো না রিফাত।...রাগ করতে পারে! শুনেই তৎক্ষণাৎ ছেড়ে দিয়েছি, আর দ্বিধান্বিত আমাকে দেখে বাকিদের সে কী হাসি।

সেই কবেকার কথা! অথচ মনে হয়, এই তো সেদিন। জীবনের ক্যালেন্ডার থেকে কেমন করে যে দিনগুলো হারিয়ে যায়।

আজকাল সন্ধ্যা নামার পরে, মায়ের বাসা থেকে বাসায় ফেরার পথে হঠাৎ আমাদের আবাসিক এলাকায় রাস্তার দুই পাশে যত্ন কর লাগানো বকুলের সমারোহ চোখে পড়ে। নিয়ন আলোয়, হালকা সুবাস ছড়ানো ফুলগাছগুলোকে পাশে রেখে চুপচাপ হেঁটে আসি। অজান্তেই হেসে ফেলি।

বয়সী চশমার ফ্রেমজুড়ে তখন থাকে সহপাঠীদের কোলাহল, নস্টালজিয়া আর সেই উনিশের আবেগ।

বিলেতে বর্ষা তেমন তুমুলভাবে আসে না বলে আক্ষেপ শুনেছি অনেকের। আচ্ছা বিলেতে কি বকুল ফুলের তীব্র সুবাস ছড়িয়ে কাউকে কয়েক দশক পেছনে নিয়ে যায়? বেঁচে থাকতে বাবা বলতেন, ‘অভিমান’ শব্দটার যথার্থ ইংরেজি প্রতিশব্দ নেই। কারণ, অভিমান কিন্তু ঠিক কোনো রাগ না, এটা অন্য রকম কিছু। একান্তই এক বাঙালি আবেগ। আজকাল সেটা আরও প্রবলভাবে মনে হয়। কার ওপর এই অভিমান, সে কি জানে?

আহা! একজীবনে, সব প্রিয় জিনিস যদি আমাদের হতো।

রিফাত মুনীর, মোহাম্মদপুর, ঢাকা

লেখা পাঠানোর ঠিকানা

অধুনা, প্রথম আলো, প্রগতি ইনস্যুরেন্স ভবন, ২০–২১ কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

ই-মেইল: [email protected], ফেসবুক: facebook.com/adhuna.PA খামের ওপর ও ই-মেইলের subject–এ লিখুন ‘মনের বাক্স’