স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (এসইউবি) প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০২ সালে। এখানে ৩টি স্কুলের অধীনে ১০টি বিভাগে ১৮টি প্রোগ্রাম চালু আছে। এ ছাড়া পূর্বাচলে আমাদের স্থায়ী ক্যাম্পাসে একটি ডরমিটরি স্থাপনের কাজ দ্রুত এগোচ্ছে। শিক্ষাকে চাকরির সঙ্গে সম্পৃক্ত করা এসইউবির অন্যতম বিশেষত্ব। আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিটি বিভাগে একুশ শতকের দক্ষতাগুলোকে চিহ্নিত করে চাকরির বাজারের জন্য শিক্ষার্থীদের তৈরি করি। তাই ইন্ডাস্ট্রি ও একাডেমিক জগতের সঙ্গে সম্পৃক্ততার জায়গায় অনেকটা এগিয়ে আছি।
কর্মক্ষেত্রে, গবেষণায়
আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যারিয়ার প্লেসমেন্ট অফিস আছে, যা করপোরেট রিসোর্সেস সেন্টার নামে পরিচিত। এই সেন্টারের মাধ্যমে আমরা শিক্ষার্থীদের করপোরেট প্রতিষ্ঠান, এনজিও, গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাকরির সুযোগ করে দিই। এ ছাড়া দেশের বাইরে গুগল, ফেসবুকের মতো নামী টেক কোম্পানিতেও আমাদের শিক্ষার্থীরা কাজ করে যাচ্ছেন।
এসইউবির অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন সব সময়ই বেশ সক্রিয়। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। বিশেষ করে অনুজদের চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে তারা সহযোগিতা করছেন। চাকরির বাজারের সঙ্গে অ্যালামনাইরাই আমাদের যোগসূত্র তৈরি করে দিচ্ছেন।
শিক্ষকদের গবেষণা স্কোপাস ইনডেক্সড জার্নালসহ বিভিন্ন দেশি-বিদেশি জার্নালে প্রকাশিত হচ্ছে। ফার্মাসি বিভাগের শিক্ষকদের ৯৪টি গবেষণা নিবন্ধ ২০২২ সালে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে, যা দেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবেচনাতেই একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন। শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা গবেষণার ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করছেন।
মনন বিকাশে সহশিক্ষা কার্যক্রম
সংস্কৃতি ও খেলাধুলা চর্চার মতো সহশিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষা পরিপূর্ণতা লাভ করে। শিক্ষার্থীদের সংস্কৃতি চর্চার জন্য আমাদের সাংস্কৃতিক সংগঠন আছে। খেলাধুলার জন্য আছে স্পোর্টস একাডেমি, যেখানে পরিচালক হিসেবে আমরা সাবেক ক্রিকেটার জাভেদ ওমর বেলিমকে নিয়োগ দিয়েছি। এ ছাড়া ক্রিকেট, ফুটবলের মতো জনপ্রিয় খেলাগুলোর প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতার মতো আয়োজন তো আছেই। ফার্মাসি ক্লাব, কম্পিউটিং ক্লাব, জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, ডিবেটিং ক্লাব ইত্যাদি সংগঠন সারা বছরই সরব থাকে।
শিক্ষার্থীদের হাত ধরে আসছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা পুরস্কার। আমাদের আইন বিভাগ সম্প্রতি বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুটকোর্ট প্রতিযোগিতা ফিলিপ সি জেসাপ ইন্টারন্যাশনাল ল মুটকোর্ট কম্পিটিশনে অংশ নেয়। ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের ১৫০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিযোগীরা অংশ নিয়েছেন। এসইউবির আইন বিভাগ সারা বিশ্বে ৮৪তম এবং বাংলাদেশে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে। এ ছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি। ছায়া সংসদে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়কে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয় স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ।
ভবিষ্যতে চোখ
সারা বিশ্বে এমনকি বাংলাদেশেও দক্ষতাভিত্তিক ও প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষার প্রতি তরুণদের ঝোঁক অনেক বেড়েছে। ২০৪১ সালের জন্য যে রূপকল্প সরকার ঠিক করেছে, আমরা মনে করি তা বাস্তবায়নের জন্য আমাদের অবশ্যই প্রযুক্তিগত দিক থেকে সক্ষম শিক্ষার্থী তৈরি করতে হবে। সেই লক্ষ্যে আমরা প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা, যেমন টেক্সটাইল প্রকৌশল, তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল, ফ্যাশন ডিজাইনিং ইত্যাদি বিভাগ খোলার চেষ্টা করছি। এসবের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুণগত মানে পরিবর্তন আসবে বলে বিশ্বাস করি।