এ ধরনের মানুষকে এড়িয়ে চলুন

নেতিবাচক মানুষ আপনার জীবনে ইতিবাচক অনুভূতি আনবে না
ছবি: পেক্সেলস

বন্ধুত্ব সবার সঙ্গে হয় না। তবে বন্ধু বা শুভাকাঙ্ক্ষীর বাইরেও এমন অনেক মানুষ থাকেন, যাঁদের সঙ্গে আমাদের চলতে হয়। কাজের সূত্রেই হয়তো রোজ দেখা হয়, এ কথা–সে কথার মধ্যে ব্যক্তিগত আলাপও হয় টুকটাক। বিপদে-আপদে পরামর্শও দেন অনেকে। তবে সবাইকে কিন্তু সব কথা বলা ঠিক নয়। আর সবার পরামর্শও সুপরামর্শ নয়। কিছু মানুষের সঙ্গ জীবনে নেতিবাচকতা সৃষ্টি করতে পারে। কিছু মানুষের কারণে আপনার ছন্দপতনও হতে পারে।

এমন মানুষদের চিহ্নিত করার পর আপনার কাজ হবে তাঁদের অবশ্যই এড়িয়ে চলা। তবে এমনভাবে, যেন দৃষ্টিকটু না হয়। আপনি তাঁদের সঙ্গে ভদ্রতাসূচক আলাপ বজায় রাখবেন। কিন্তু নিজের আবেগের জায়গা পর্যন্ত তাঁদের পৌঁছাতে দেবেন না। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে তাঁদের অনুপ্রবেশের সুযোগ দেবেন না। জেনে নিন, কারা রয়েছেন এমন মানুষের তালিকায়।

কিছু মানুষের সঙ্গ জীবনে নেতিবাচকতা সৃষ্টি করতে পারে (ছবিটি প্রতীকী)
ছবি: প্রথম আলো

লোভী এবং হিংসুটে ব্যক্তি

লোভ বা হিংসার বশবর্তী হয়ে মানুষ অনেক কিছুই করতে পারেন। অনেকে নিজে সুখী হতে পারেন না বলে অন্যের সুখও সইতে পারেন না। অন্যের সাফল্য, সম্পদ, সন্তান—সবই তাঁর চক্ষুশূল হয়ে ওঠে। আপনি যদি আবিষ্কার করেন, আপনার সামনে দাঁড়ানো মানুষটি অন্য যে কারও সাফল্যে হিংসা করছেন, তাঁকে এড়িয়ে চলুন।

সুবিধাবাদী এবং স্বার্থপর ব্যক্তি

কিছু মানুষ সব সময়ই কেবল আপনার থেকে সুবিধা নিতে চাইবেন। নিজের স্বার্থের বাইরে কিছু চিন্তা করার সামর্থ্য অনেকেরই নেই। নিজেদের প্রয়োজনের সময় তাঁরা ঠিকই আপনার কাছে আসবেন, কিন্তু আপনার প্রয়োজনের সময় তাঁদের আপনি খুঁজেও পাবেন না। আর খুঁজে পেলেও দেখবেন, আপনাকে সাহায্য করতে না পারার এক শ একটা কারণ তাঁদের কাছে তৈরিই থাকবে। অর্থাৎ, এ ধরনের মানুষ আখেরে আপনার কোনো কাজেই আসবে না। বরং তাঁদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে গিয়ে আপনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকবেন।

কর্মক্ষেত্রে নেতিবাচক মানুষের কাছ থেকে দূরে থাকুন (ছবিটি প্রতীকী)
ছবি: প্রথম আলো

ছিদ্রান্বেষী এবং সমালোচক

যেকোনো সময় যেকোনো কিছুর সমালোচনা করে ফেলাটা কোনো মানুষের ভালো বৈশিষ্ট্য নয়। কেউ যদি সবকিছুর খারাপ দিক আবিষ্কার করে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেন, তাহলে একসময় আপনি আবিষ্কার করতে পারেন, পৃথিবীতে ভালো বলে কিছুই নেই। ভালো কিছু খুঁজে বের করতে গিয়ে আপনাকে ভীষণ বেগ পেতে হতে পারে। এ ধরনের ব্যক্তি আপনারও খুঁত ধরবেন। ক্রমাগত নিজের সম্পর্কে নেতিবাচক কথা শুনতে থাকলে আপনি হতাশ হয়ে পড়তে পারেন। আপনার জীবনের কোনো সিদ্ধান্তকে যিনি অসম্মান করে কথা বলবেন, তাঁকে অবশ্যই এড়িয়ে চলুন। এ ধরনের মানুষের কথায় গুরুত্ব দেওয়ার আদতে কোনো প্রয়োজনই নেই।

নেতিবাচক মনের মানুষ

কিছু মানুষ থাকেন, যাঁরা পৃথিবীর সবকিছুকে নেতিবাচকভাবে নেন। ধরে নেওয়া যাক, কোনো মাসে আপনার বেতন পেতে একটু দেরি হচ্ছে। নেতিবাচক মানুষ কিন্তু আপনাকে এমনটা বলতে পারেন, ‘তোমার চাকরিটাই চলে যায় কি না, দেখো।’ আবার অফিসে হয়তো কোনো কারণে আপনার বিভাগ বদল হয়েছে, তখন আপনার কাছে জানতে চাইতে পারেন, কোনো সমস্যার কারণে এই বদলটা করেছেন কি না বা আপনার বেতন কমিয়ে দেওয়া হয়েছে কি না। এমন মানুষের সঙ্গে মন খুলে মেশার কোনো কারণই নেই।

অলস এবং দায়িত্বে অবহেলাকারী ব্যক্তি

নিজের কাজটুকুই যিনি সঠিকভাবে করেন না, তিনি অন্যের কতটা কাজে আসবেন! এমন ব্যক্তির সান্নিধ্য বরং অন্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাবই ফেলবে। যাঁর দিন কাটে আলস্যে, তাঁর কাছ থেকেও আপনি ভালো কিছু আশা করতে পারেন না। বরং তাঁর আচরণে একসময় আপনি এটাও আবিষ্কার করে বসতে পারেন, অলস মস্তিষ্কে সত্যিই শয়তানের বাস!

আত্মমর্যাদাহীন এবং তোষামোদকারী ব্যক্তি

যাঁর আত্মসম্মান বোধ নেই, তাঁকে আপনি কোন চোখে দেখেন বলেন তো? নিশ্চয়ই খুব একটা সম্মানের চোখে নয়। তোষামোদ করে যাঁর সময় কাটে, তিনিও সমাজের চোখে সম্মানিত নন। এমন মানুষের থেকে দূরে থাকুন।

অহংকারী ব্যক্তি

অহংকার কখনো ভালো ফল বয়ে আনে না। কথায়ই আছে, অহংকার পতনের মূল। যাঁর মধ্যে হামবড়া ভাব রয়েছে, তাঁর আচরণে আপনি বিরক্তি অনুভব করতে পারেন। তাঁর নানা কথায় আপনার নিজেকে ভীষণ ‘ছোট’ও মনে হতে পারে।