পাঁচ হাজার বছর আগে এই পেশার উদ্ভব, কোথায় জানেন?

আজ ১৬ সেপ্টেম্বর, বিশ্ব নরসুন্দর দিবস
ছবি: সংগৃহীত

নারী বা পুরুষ কিসে আটকায়—এই নিয়ে যখন তোলপাড় চলছে, তখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একজন লিখেছিলেন, পুরুষ আটকায় তাঁর পছন্দের নাপিতের কাছে। মজা করে বলা হলেও কথাটা কিন্তু অনেকটাই ঠিক। চুল-দাড়ির সৌন্দর্যের ব্যাপারে তাঁদের ওপরই আমরা নির্ভর করে থাকি। এ ক্ষেত্রে যাঁর কাজ আমাদের ভালো লাগে, যাঁর সঙ্গে রসায়নটা জমে ভালো, ঘুরেফিরে তাঁর কাছেই যাওয়া হয়।

চুল-দাড়ি-গোঁফ কাটা-ছাঁটা বা ক্ষৌরকর্মের ইতিহাস কিন্তু অনেক পুরোনো। প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে প্রাচীন মিশরে এই পেশার উদ্ভব ঘটে। আগে তাঁদের কাজের পরিসর ছিল আরও বিস্তৃত। নখ কাটা, দাঁত তোলা, ফোঁড়া কাটা, ক্ষতস্থান ড্রেসিং করা থেকে ছোটখাটো অস্ত্রোপচার পর্যন্ত করতের তাঁরা। সে সময় সমাজে তাঁদের পরিচিতিও ছিল বার্বার সার্জন বা নাপিত শল্যবিদ হিসেবে। ভারতীয় উপমহাদেশে হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের কাছেই তাঁদের এক আলাদা মূল্যায়ন আছে। জন্ম, মৃত্যু বা বিয়ের নানাবিধ গুরুত্বপূর্ণ আচারের সঙ্গে মিশে আছে এই পেশার মানুষেরা।

আরও পড়ুন

নাপিত শব্দের একটি সমার্থক শব্দ হচ্ছে—নরসুন্দর। চুল-দাড়ি-গোঁফ ছেঁটে নর তথা মানুষকে সুন্দর করে তোলেন তাঁরা—এ জন্য তাঁদের বলা হয় নরসুন্দর। ভারতীয় উপমহাদেশে একসময় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ এই পেশার সঙ্গে বেশি যুক্ত ছিলেন। তাঁদের বলা হতো ‘শীল’। এখন অবশ্য সব ধর্মের মানুষই কাজটি করছেন সম্মানের সঙ্গে।

একজন নরসুন্দর কিন্তু অবশ্যম্ভাবীভাবেই বিশেষ কিছু গুণের অধিকারী হয়ে থাকেন। প্রথমত, তিনি প্রচণ্ড বিশ্বাসযোগ্য একজন মানুষ। আপনি নিশ্চিন্তে তাঁর ক্ষুরের নিচে নিজের মাথাটা দিয়ে চোখ বন্ধ করে বসে থাকতে পারেন। সাধারণত তাঁদের সৌন্দর্যবোধ থাকে প্রবল। আপনার মুখের গড়ন দেখে বুঝে নিতে পারেন কোন স্টাইলে চুল, দাড়ি বা গোঁফ ছাঁটলে আপনাকে ঠিক মানাবে, অধিকতর সুদর্শন লাগবে। অধিকাংশ নরসুন্দরের রসবোধ ও বাচনভঙ্গি হয়ে থাকে দারুণ আকর্ষণীয়। কথার পিঠে কথা জুড়ে অনর্গল গল্প বলতে পারেন তাঁরা। ফলে স্যালুনে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করলেও খদ্দেরের মনে বিরক্তি আসে না।

আজ ১৬ সেপ্টেম্বর, বিশ্ব নরসুন্দর দিবস। দিনটি কিন্তু পালন করতে পারেন। আপনার প্রিয় নরসুন্দরকে কোনো উপহার দিতে পারেন। তাঁর সঙ্গে কাটানো মজাদার মুহূর্ত নিয়ে লিখতে পারেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

ন্যাশনাল টুডে ডটকম অবলম্বনে

আরও পড়ুন