শিশুকে ফল খাওয়ানোর কিছু অভিনব উপায়

এ যুগের অনেক শিশুরই ফলমূলে আগ্রহ নেই। কিন্তু বাড়ন্ত শরীরে ফলের পুষ্টি ভীষণ প্রয়োজন। রোজ তো আর জবরদস্তি করে ফলমূল খাওয়ানো চলে না। তার চেয়ে বরং এমনভাবে পরিবেশন করুন, যা দেখে আগ্রহী হয়ে উঠবে শিশু। আদতে এটি খুব একটা কঠিন কাজ নয়। জটিল, সূক্ষ্ম নকশায় ফলমূল না কেটেও সহজে, সুন্দরভাবে পরিবেশন করা যায়।

রন্ধনবিদ দিল আফরোজ বলছিলেন, একই রকমভাবে কেটে দেওয়া ফল খেতে সব সময় আগ্রহ না-ও পেতে পারে শিশু। পরিবেশনে সহজেই ছোটখাটো বৈচিত্র্য আনা যায়। মাঝেমধ্যে একটু ভিন্ন আকৃতিতে কাটা যেতে পারে ফল। কাঠি ব্যবহার করেও হতে পারে মজাদার পরিবেশন। কখনো কখনো সামান্য চকলেট বা ক্রিমজাতীয় উপকরণ মিশিয়েও খাওয়ানো যেতে পারে ফল। কিংবা ফলের টুকরা দিয়ে তৈরি করা যেতে পারে কাস্টার্ড বা ফ্রুট পাঞ্চ। তাঁর কাছ থেকেই বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

সব সময়ই কিউব আকারে ফল না কেটে মাঝেমধ্যে ফ্রেঞ্চফ্রাইয়ের মতো একটু লম্বা করে কেটে দিতে পারেন ফল। কুকি কাটারের মতো অনুষঙ্গ ব্যবহার করে ভিন্ন আকৃতিতেও ফল কেটে নেওয়া যায়। আপেলের গায়ে দুটি লবঙ্গ গেঁথে দিতে পারেন চোখের মতো করে। একটু চিরে দিয়ে নাক আর মুখও বানিয়ে দিতে পারেন। শিশু আনন্দ পাবে। একটা বড় ফল দিয়ে বাটি বানিয়ে তাতেও ফলের টুকরা পরিবেশন করতে পারেন। এ রকম সৃজনশীল ভাবনার প্রকাশ ঘটাতে কিন্তু খুব একটা পরিশ্রম করতে হয় না।

শিশুকে বিভিন্ন রঙের ফল দিন। চার-পাঁচ রঙের ফল কেটে থালায় ছোট একটা রংধনুর মতো সাজিয়ে দিতে পারেন। শিশুকে জিজ্ঞেস করুন, রংধনুর কোন কোন রং থালায় নেই। ওই রঙের কোনো ফল হতে পারে কি না, তা নিয়েও তার সঙ্গে আলাপ করতে পারেন। গল্পে গল্পে কোনো একটি দিন এভাবেই ফল খেয়ে নিতে পারে আপনার শিশু। ফলের টুকরা দিয়ে থালায় তৈরি করতে পারেন হাসিমুখ কিংবা হৃদয়ের চিহ্ন। কিংবা ফলের ওপর সামান্য চকলেট বা হুইপ ক্রিমও ছড়িয়ে দিতে পারেন।

নানা রঙের ফলের টুকরা শাশলিকের কাঠিতে গেঁথে দিতে পারেন। কেবল একটি ফলের টুকরা টুথপিকে গেঁথে দিলেও হয়ে যাবে একটি ললিপপ। কয়েকটি ললিপপ সাজিয়ে দিতে পারেন একটি কাপে। আইসক্রিমের কাঠিতে তিন কোনা করে কাটা তরমুজ বা অন্য কোনো ফলের টুকরা গেঁথে দেওয়া যেতে পারে। আইসক্রিমের কোনের ভেতর ফলের টুকরা সাজিয়েও দেওয়া যেতে পারে।

রন্ধনশিল্পী সেলিনা আক্তার বলছিলেন, রং আর আকৃতিতে বৈচিত্র্য আনার পাশাপাশি ফল দিয়ে মজাদার পানীয়ও তৈরি করা যেতে পারে। এভাবে শিশুর পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়। ককটেল, মকটেল, মিল্কশেক, মোহিত—নানা কিছুই তৈরি করা যায় ফল দিয়ে। সুস্বাদু পানীয়ে গরমে শিশুর পানির চাহিদাও মিটবে।