খাওয়া কমাব না, কিন্তু ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখব কীভাবে?

ওজন কমানোর জন্য খাবারের পরিমাণ কমাতেই হবে বা না খেয়ে থাকতে হবে—এ এক ভ্রান্ত ধারণা। এই ধারণার ফেরে পড়ে অনেকে ওজন নিয়ন্ত্রণের শুরুতেই ধাক্কা খান। ওজন কমানোর বিষয়টাকে খুব কঠিন করে ফেললে লক্ষ্যপূরণের পথটা কিন্তু বড্ড দুর্গম হয়ে পড়ে। ক্ষুধা মেটাতে খাবার তো খেতেই হবে। বরং কোন খাবার খাচ্ছেন, কী দিয়ে খাচ্ছেন, কতটা সময় ধরে খাচ্ছেন—বিষয়গুলো খেয়াল রাখা জরুরি।

খাবারের ধরন গুরুত্বপূর্ণ

যে পরিমাণ খাবার খেয়ে আপনি অভ্যস্ত, সেই পরিমাণ খাবারই খাবেন। তবে বদলাতে হবে খাবারের ধরন। ভাত-রুটির পরিমাণ কমিয়ে দিয়ে শাকসবজি ও সালাদের পরিমাণ বাড়াতে চেষ্টা করুন। তবে উচ্চ ক্যালরিসম্পন্ন সালাদ ড্রেসিং ব্যবহার করবেন না। নানান ধরনের সবজি রাখুন প্রতি বেলার তালিকায়। গোটা শস্য (রিফাইন্ড বা পরিশোধিত নয়) বেছে নিন। মাংসও কম খান। স্যান্ডউইচ, বার্গার, পাস্তা, নুডলস বা পিৎজার মতো খাবারও যে একেবারে বাদ দিয়ে দিতে হবে, তা নয়। বরং এগুলো প্রচলিত ধারার বাইরে কিছুটা ভিন্ন উপকরণ (যেমন সবজি) দিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন। এসব খাবারে মেয়োনেজের পরিমাণ কম রাখুন। বাড়তি পনির এড়িয়ে চলুন। অনেক ক্ষেত্রে কেবল সামান্য অলিভ অয়েলের ব্যবহারেই খাবারে থাকবে সুস্বাদ। পিৎজার ক্রাস্ট পাতলা হলে শর্করার পরিমাণটাও কমে আসবে। চাইলে ফরমাশ দিয়ে বানিয়েও নিতে পারেন এমন সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর খাবার।

যে পরিমাণ খাবার খেয়ে আপনি অভ্যস্ত, সেই পরিমাণ খাবারই খাবেন। তবে বদলাতে হবে খাবারের ধরন
ছবি: সংগৃহীত
আরও পড়ুন

খাবারের আগে কিছু খান

খাবার আগে স্যুপ খান। পানির মতো তরল স্যুপ (সবজি দেওয়া) বেছে নিন। আঠালো বা ক্রিমযুক্ত স্যুপ এড়িয়ে চলুন। শুরুতেই বেশ খানিকটা স্যুপ খেয়ে নিলে অন্যান্য খাবারের পরিমাণ কমে আসবে। খাওয়ার আগে এক বাটি ডালও হতে পারে স্যুপের বিকল্প। কিংবা শুরুতেই খানিকটা সালাদ।

খাবারের সঙ্গে, খাবারের পরে

  • খাবারের সঙ্গে সস (হোয়াইট বা রেড যেটিই হোক) খাওয়ার অভ্যাস থাকলে বাদ দিয়ে দিন। চাটনি বা আচারে থাকা চিনিও আপনার ওজন কমানোর পথে প্রতিবন্ধক হয়ে উঠতে পারে। বরং নানান রকম মসলা, ভিন্ন স্বাদের সবজি (টাটকা টমেটো, গাজর প্রভৃতি) কিংবা টক ফল (বা এর রস) সঙ্গে রেখে আপনার মূল খাবারটিকে করে তুলুন সুস্বাদু।

  • খাওয়ার পর মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়ার অভ্যাস থাকলে এর বদলে ফলমূল বা টক দই খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

  • কোমল পানীয়ের পরিবর্তে ফলের রস খান। তবে এতে চিনি যোগ করবেন না। বোরহানি খেলে তাতেও চিনি ও লবণের পরিমাণ কম রাখুন।

  • চা-কফি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে সেখানেও চিনির পরিমাণ কমিয়ে দিন একটু একটু করে। একসময় চিনি ছাড়াই খেতে পারবেন চা-কফি। গ্রিন টি–র অভ্যাসও করতে পারেন।