অলংকৃত উৎসব সংগ্রহ বিশ্বরঙের

পরিস্থিতি যেমনই হোক, প্রকৃতি চলবে আপন খেয়ালে। সময় ঘুরে আসবে ঈদ। ফ্যাশন হাউসগুলোর প্রস্তুতি তাই ছিল বরাবরের মতো। লকডাউনের কারণে কেনাকাটা চলছে অনলাইনে। এই আয়োজনে তাই ধারাবাহিকভাবে থাকছে বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজের ঈদ আয়োজন।

কখনো কখনো পোশাক হয়ে ওঠে শিল্পীর ক্যানভাস। নানা বর্ণের ছটায় রঙিন হয়ে ওঠে পোশাক; যা চলতি ফ্যাশনধারা বা ব্যক্তির স্টাইল স্টেটমেন্টকে ভিন্নভাবে তুলে ধরে। বিশ্বরঙ বাই বিপ্লব সাহা এমনই একটি দেশীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড। ‘রঙ যেন মোর মর্মে লাগে’—এই ব্রত নিয়েই যার পথচলা।

এবারের ঈদ কালেকশনেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। বিশ্বরঙ-এর কর্ণধার বিপ্লব সাহা এবারের উৎসব সংগ্রহ সম্পর্কে বললেন, ঈদ মানেই হাসি, আনন্দ আর উৎসবের রঙে নিজেকে রাঙানো, আর নতুন পোশাকের অপেক্ষা। উৎসব-পার্বণ উদ্‌যাপনে বিশ্বরঙ সব সময়ই অগ্রপথিক। যেকোনো সামাজিক এবং ধর্মীয় উৎসব বা পার্বণে নতুন ট্রেন্ড নিয়ে স্বভাবসিদ্ধভাবেই কাজ করে থাকে বিশ্বরঙ। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এই ঈদে ফ্যাশনসচেতন সব বয়সী মানুষের জন্য আমরা নিয়ে এসেছি নতুন সব ট্রেন্ডি ডিজাইন। দেশীয় ঐতিহ্যের সঙ্গে আন্তর্জাতিক ট্রেন্ডের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে বাহারি নকশা ও বৈচিত্র্যময় উপস্থাপন করা হয়েছে এই কালেকশনে।  

দিবসভিত্তিক সব আয়োজনে বিশ্বরঙ বরাবরই এগিয়ে; সেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকছে এ বছরও। পুরো কালেকশনে থাকছে রং, প্যাটার্ন, নকশায় ভিন্নতা। বিপ্লব সাহা আরও যোগ করেন, উৎসব এবং আবহাওয়া—দুটো বিষয়ই প্রাধান্য পেয়েছে ঈদ সংগ্রহে। পোশাকের প্যাটার্নে এসেছে ভিন্নতা। পোশাকগুলোতে ব্যবহার করা হয়েছে ডুপিয়ান, জয় সিল্ক, তসর, সফট সিল্ক, কাতান, ভেলভেট ছাড়াও বিভিন্ন রকম অর্নামেন্টেড কাপড়।

অফ হোয়াইট, সাদা, লাল, মেরুন, রয়েল ব্লু, গ্রিন, গোল্ডেনসহ নানা রংই পরিমিতি বজায় রেখে ব্যবহার করা হয়েছে। কাজের মাধ্যম হিসেবে এসেছে এমব্রয়ডারি, জারদৌসি, কারচুপি, কাটওয়ার্ক, স্ক্রিন প্রিন্টসহ নানা মাধ্যমে পোশাককে অলংকৃত করা হয়েছে বিশ্বরঙ-এর স্বকীয়তা বজায় রেখে।

বিশ্বরঙ-এর এই কালেকশনে থাকছে অভিনব ডিজাইনের শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, লং কুর্তি, রেগুলার কুর্তি, টপস-স্কার্ট, কটি, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, শার্ট, টি-শার্ট এবং গয়না ও গৃহসজ্জা সামগ্রী। ব্র্যান্ডটির রয়েছে দুটি কো-ব্র্যান্ড ফেস রঙ এবং শ্রদ্ধা। যেগুলোতেও উৎসব ও পার্বণে থাকে আলাদা বিশেষায়িত সংগ্রহ।

এই প্রসঙ্গে বিপ্লব সাহা জানালেন, পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠদের জন্য উৎসবের পোশাক কিনতে গিয়ে অনেকেই দ্বিধায় থাকেন। কোথায় পাওয়া যাবে তাঁদের জন্য রুচিশীল পোশাক, তা নিয়ে তাঁদের ভাবতে হয়। মূলত এই ধারণা থেকেই শ্রদ্ধা নিয়ে কাজ করা শুরু করি। একটু আলাদা প্যাটার্ন, রুচিশীল রং-নকশার ব্যবহারে সাজানো হয় শ্রদ্ধার কালেকশন। অন্যদিকে বয়সে যাঁরা তরুণ এবং আন্তর্জাতিক ট্রেন্ডের অনুসারী, তাঁদের জন্যই ফেস রঙ। ফেস রঙ-এর কালেকশন তৈরিতে এর র ম্যাটেরিয়াল থেকে শুরু করে প্যাটার্ন, ডিজাইন, কাট—সবকিছুই করা হয় আন্তর্জাতিক ট্রেন্ড অনুসারে।

গত বছর থেকে মহামারির কবলে আমাদের সব উৎসব-পার্বণ। এ বছর তা চলমান। যার দরুন আনন্দের রং ফিকে হয়েছে অনেকটাই। তবু আশাবাদী এই সফল উদ্যোক্তা জানান, চলমান অতিমারি মোকাবিলায় সামাজিক এবং ধর্মীয় উৎসবগুলোকে কেন্দ্র করে আমাদের সবাকে আরও বেশি মানবিক হতে হবে। উৎসব উদ্‌যাপনে সাধারণত আমরা পরিবার বা নিজের জন্য পোশাক কিনি। কিন্তু আমি বলতে চাই, এ বছর শুধু নিজের জন্য নয়, দেশীয় ফ্যাশন শিল্প এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কারুশিল্পীদের বাঁচাতে একটি করে হলেও দেশীয় পোশাক কিনুন।

কারণ, একটি পোশাক তৈরি মানে অনেকগুলো মানুষের সম্পৃক্ততা। জড়িয়ে থাকে অনেকগুলো পরিবার। ফ্যাশন হাউসগুলোর শোরুমে প্রদর্শিত প্রতিটি পোশাক তৈরিতে অন্তত পাঁচজন মানুষ জড়িত। আর প্রতিটি কর্মক্ষম মানুষ মানে একটি পরিবারের জীবন-জীবিকা। সুতরাং এই সব খেটে খাওয়া মানুষ এবং তাদের সঙ্গে জড়িত আমাদের ঐতিহ্যকে বাঁচাতে হলেও এই উৎসবে দেশীয় পোশাক কেনা জরুরি—যোগ করলেন তিনি।

এমনিতেই লকডাউন চলছে। তবুও চলমান পরিস্থিতিতে ভিড়ভাট্টা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন বিপ্লব সাহা। বরং তিনি বলেছেন যে, বিশ্বরঙ-এর পোশাক বাড়িতে বসে অনায়াসেই কেনা যাবে।

এজন্য রয়েছে বিশ্বরঙ-এর ওয়েবসাইট (www.bishworang.com) আর ফেসবুক পেজ (bishworangfanclub)। এছাড়া আছে একাধিক নম্বর (০১৮১৯২৫৭৭৬৮, ০১৭৩০০৬৮০৪৩, ০১৭৩০০৬৮০৩৬, ০১৭৩০০৬৮০১২,)। নম্বরে ফোন করেও অর্ডার করা যাবে।

ছবি: বিশ্বরঙ