পায়ের স্বস্তিতে...

এমন স্যান্ডেলে গরমে পা ঘেমে যাবে না
এমন স্যান্ডেলে গরমে পা ঘেমে যাবে না

ফ্যাশনে জুতা-স্যান্ডেলের আবেদন পোশাকের চেয়ে কম নয়। সময়ের সঙ্গে বদলে যায় ফ্যাশন। ঋতুভেদেও কিন্তু জুতার নকশায় পরিবর্তন আসে। গরমে ভারী উপাদানের জুতা পরে চলতে অস্বস্তিই লাগে অনেকের। আরাম পাওয়া যাবে, পা ঘেমে যাবে না—তরুণীরা এ সময় এমন জুতার খোঁজেই থাকেন।
লা মোডের ডিজাইনার ফাহমিদা ইসলাম বলেন, এখনকার স্লিপারগুলো পরার ক্ষেত্রে স্বস্তি, আরাম ও আধুনিক ডিজাইনকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত। স্যান্ডেলগুলোতে দেখতে পাওয়া যায় ডিজাইনের ভিন্নতা, রঙের বৈচিত্র্য। বোতাম, ফুল, ফিতা আর কৃত্রিম পাথর দিয়ে ডিজাইন করা হচ্ছে হালফ্যাশনের স্যান্ডেল ও জুতায়।
নতুন ডিজাইনে দুই ফিতার বাইরেও দেখা যায় হরেক ডিজাইন। তবে গরমের জন্য তা স্লিপারের মধ্যে হওয়াই ভালো। চামড়া বা রেকসিনের স্লিপারের সবচেয়ে ভালো সুবিধা হচ্ছে এটা অনেক জায়গায় সহজেই ব্যবহার করা যায়। সেটা ক্লাসেই হোক বা ছোটখাটো কোনো উৎসব বা হোক সেটা কোনো ভ্রমণে। এসব স্যান্ডেলে থাকছে ফিতার ডিজাইনে ভিন্নতা। দেখতে পাবেন ক্রস, রাউন্ড, সেমি রাউন্ড, বেল্টের মতো ফিতার নকশা।

এ সময়ের জুতায় দরকার হালকা উপাদান, আরাম ও আধুনিকতা  মডেল: মাহারিয়া   জুতা: অ্যাপেক্স ছবি: সুমন ইউসুফ
এ সময়ের জুতায় দরকার হালকা উপাদান, আরাম ও আধুনিকতা মডেল: মাহারিয়া জুতা: অ্যাপেক্স ছবি: সুমন ইউসুফ

ক্যাটস আইয়ের ডিজাইনার রুম্মাইল্লা সিদ্দিকী বলেন, গরমে এগিয়ে রাখা যায় কাপড়ের তৈরি জুতা। এ ধরনের সময়োপযোগী জুতার মধ্যে সবচেয়ে জুতসই হবে স্নিকার। কাপড়ের জুতার ক্ষেত্রে কাপড়টা দেখে নেওয়া জরুরি। ডেনিমের তৈরি জুতায় আরাম পাবেন।
গুলশান ডিসিসি মার্কেটের পাদুকা সম্ভারের একজন বিক্রয়কর্মীর কাছ থেকে জানা গেল, এখানকার স্যান্ডেলের বেশির ভাগই বিদেশি। মিয়ানমার, চীন, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর ও তুরস্ক থেকে আমদানি করা। কম বয়সীরা বেশি কাজ আছে এমন জমকালো দুই ফিতার স্যান্ডেল বেশি পছন্দ করছেন। একটু বয়স্করা খোঁজেন আরামদায়ক দুই ফিতার স্যান্ডেল। একদম ফ্ল্যাট থেকে শুরু করে দুই ইঞ্চি হিল সব ধরনের স্যান্ডেলই আছে। বাজার ঘুরে দেখা গেল, গরমে চলছে গ্ল্যাডিয়েটার। এ ধরনের দুই ফিতার স্যান্ডেলে নতুনত্ব এসেছে গোড়ালির অংশে। পায়ের গোড়ালি থেকে ওপরের বেশ খানিকটা অংশ পর্যন্ত থাকে বাঁধার মতো স্টাইলিশ ফিতা। এ স্যান্ডেলের ফিতা বাঁধা হচ্ছে কখনো পায়ের গোড়ালিতে, কখনো খানিকটা ওপরে।
লা মোডের ডিজাইনার ফাহমিদা ইসলাম বলেন, স্পঞ্জের সঙ্গে ভেলভেট কাপড় দিয়ে কাজ করা স্যান্ডেলগুলোও গ্রীষ্মের ধুলাবালুতে সহজেই ধুয়ে পরিষ্কার করে পরা যায়।
অ্যাপেক্সের ডিজাইনার ফারিয়া রাহমান বলেন, গরমে কাপড়, কাঠ, স্পঞ্জ, কৃত্রিম ও খাঁটি চামড়ার তৈরি দুই ফিতার স্যান্ডেলের চাহিদা বেশি তরুণীদের কাছে। তাঁদের পছন্দের তালিকায় আছে স্ট্র্যাপের স্যান্ডেলও। ফ্যাশন-সচেতন মেয়েরা একেবারে সাদামাটা স্যান্ডেল পরতে চায় না বলে ক্রস, রাউন্ড, সেমি রাউন্ড ফিতার সঙ্গে লেস মিলিয়ে বিভিন্ন নকশার স্যান্ডেল তৈরি করা হচ্ছে। স্ট্র্যাপের স্যান্ডেলে অনেক ফিতার ব্যবহারে নকশাটাও হয় বেশ বাহারি। গতানুগতিক রংগুলোর পাশাপাশি বেগুনি, সবুজ, লাল, হলুদ সব রঙের স্যান্ডেলও পাওয়া যাচ্ছে।

এ সময়ের জুতায় দরকার হালকা উপাদান, আরাম ও আধুনিকতা  মডেল: মাহারিয়া   জুতা: অ্যাপেক্স ছবি: সুমন ইউসুফ
এ সময়ের জুতায় দরকার হালকা উপাদান, আরাম ও আধুনিকতা মডেল: মাহারিয়া জুতা: অ্যাপেক্স ছবি: সুমন ইউসুফ

কোথায় পাবেন ও দামদর
আড়ং, মায়াসির, বিবিয়ানা, মান্ত্রা, যাত্রা, এনা লা মোড, কাভা কাভা, রাখী সুজ ইত্যাদি দোকানে পাওয়া যায় দেশি উৎসব-আমেজের ফিতা লাগানো স্যান্ডেল। থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর থেকে আসা এ ধরনের স্যান্ডেল পাওয়া যায় নামীদামি শপিং মলের জুতার দোকানগুলোয়। বাটা, অ্যাপেক্স, বে এম্পোরিয়ামসহ দেশি দোকানগুলোতেও পাবেন দুই ফিতার রকমারি স্যান্ডেল। দামের বিষয়টি নির্ভর করবে স্যান্ডেলের উপাদান ও উপকরণের ওপর। রাবার বা স্পঞ্জের স্যান্ডেলগুলো ১৫০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যেই পেয়ে যাবেন। কাঠ ও কাপড়ের সমন্বয়ে বিভিন্ন ডিজাইনের স্যান্ডেল পাবেন ২০০ থেকে ৪৫০ টাকায়। কৃত্রিম চামড়ার স্যান্ডেলের দাম নকশার ওপর নির্ভর করে ৩৫০ থেকে ১২০০ পর্যন্ত হতে পারে। আর খাঁটি চামড়ার দুই ফিতার স্যান্ডেল ও গ্ল্যাডিয়েটার কিনতে গুনতে হবে ১২০০ থেকে ৩০০০ টাকা পর্যন্ত।