মিলেনিয়ালদের ফ্যাশন ব্র্যান্ড

তরুণদের উদ্যোগে থাকে নির্দিষ্ট ভাবনা। পণ্য থেকে প্রচারণা মায় বিপণন—সবক্ষেত্রেই স্পষ্ট তাদের নতুনতর নিরীক্ষা প্রতিফলন। গরুর ঘাসও এর ব্যতিক্রম নয়।

একটা সময় ছিল, যখন অনলাইন কেনাকাটার কথা আমরা চিন্তাও করতে পারতাম না। প্রচলিত স্টাইলের বাইরে, সচরাচর কিছু পাওয়া যেত না। তাই হয়তো বেশির ভাগ মানুষের পক্ষে সম্ভব হতো না ট্রেন্ড ফলো করা।

প্রযুক্তির সঙ্গে কত কিছুই না বদলে গেছে। এমনকি বদলেছে চিন্তাভাবনাও। এখন ঘরে বসেই বিভিন্ন স্টাইলের উন্নত মানের পোশাক খুব সহজে কিনে ফেলা সম্ভব এবং বেশ যুক্তিসংগত দামে।

অনলাইন এবং সামাজিক মাধ্যমে পরিচালিত একটি ট্রেন্ডি পোশাক ব্র্যান্ড গরুর ঘাস। পোশাকের ব্র্যান্ড হিসেবে নামটা একটু আজগুবি মনে হতে পারে। তবে তাদের কালেকশন দারুণ। বিশেষত তরুণদের রুচিমাফিক। এই ব্র্যান্ডের রয়েছে ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ ও ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডল।

এরা মূলত ফাস্ট-ফ্যাশন আইটেম ছাড়াও এই সময়ের তরুণ এবং কর্মজীবীদের চাহিদামাফিক পণ্য দিয়ে থাকে। সারা দেশেই তারা পণ্য সরবরাহ করছে। ফলে হাতের নাগালেই মিলছে সাশ্রয়ী মূল্যে উচ্চমানের পণ্য। ব্র্যান্ড হিসেবে গরুর ঘাস উচ্ছল আর সমসাময়িক থাকতে চায়। বিষয়টি স্পষ্ট হয় তাদের পণ্যের প্রচারণা আর গ্রাহকদের সঙ্গে সম্পর্কে।

গরুর ঘাসের যাত্রা শুরু বেশ আগেই, ২০১৪ সালে; তখন নাহিয়ান এবং রাফে ফেসবুকে একটি অনলাইন ওয়াল পোস্টারের ব্যবসা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয়। এর পেছনের আইডিয়াটি ছিল পোস্টারগুলোর জন্য কাস্টম অর্ডার গ্রহণ করে, সপ্তাহে দুবার প্রিন্ট করে সরবরাহ করা। কোম্পানির নাম উদ্দেশ্যমূলকভাবে গরুর ঘাস দেওয়া হয়; কারণ, নামটা এমন, যা মানুষের মনে কৌতূহল জাগায় এবং ভুলতে দেয় না।

তিন উদ্যোক্তা: বাঁ থেকে ফাহিম ইসলাম শেতাব, নাহিয়ান নাসের ও আলী সাখি খান

এরপর তিন বছর পেরিয়ে যায়। রাফে ব্যবসা ছেড়ে দেয়। আলি ও ফাহিমের সঙ্গে জুটি বেঁধে নাহিয়ান গরুর ঘাসকে পোশাক বিক্রির প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করে। ব্যবসার এই ধরন বদল হয়ে যায় তাদের সাফল্যের অনুঘটক। ফলে এরপর তাদের আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।

ফ্যাশন অঙ্গনে গরুর ঘাস নতুন ধারণা নিয়ে নিরীক্ষা করতে আগ্রহী; সেটা তাদের পণ্য, উপস্থাপনা, এমনকি মার্কেটিংয়েও। তারা বিশ্বের লেটেস্ট ফ্যাশন ট্রেন্ডগুলো নিয়ে কাজ করতে চায়, যা প্রায়শই বাংলাদেশের মার্কেটে আসতে কিছুটা সময় লাগে।

কেবল অদ্ভুত নামের জন্য নয়, উন্নত মানের পোশাকের জন্যও তাদের গ্রাহক পেতে সময় লাগেনি; বরং দিনে দিনে সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

গরুর ঘাস ভবিষ্যতে সব বয়সের মানুষের জন্য আরও বিস্তৃত পরিসরে পণ্য তৈরি করতে চায় এবং সীমানা ছাড়িয়ে ধরতে চায় আন্তর্জাতিক বাজার।
গরুর ঘাসের সামাজিক মাধ্যম: https://www.facebook.com/gorurghash
https://instagram.com/gorurghash?igshid=ram8en5up02p

লেখক: ফ্যাশন ডিজাইনার

ছবি: গরুর ঘাস