সাদা-কালো ও রঙিন

লালের প্রতি আছে তাহসীনা শাহীনের ​বিশেষ দুর্বলতা। ​​ছবি: কবির হোসেন
লালের প্রতি আছে তাহসীনা শাহীনের ​বিশেষ দুর্বলতা। ​​ছবি: কবির হোসেন

সাদা আর কালো রঙেই পোশাকের নকশা করেন। তবে নিজের পছন্দের রং লাল। তিনি তাহসীনা শাহীন। ফ্যাশন ডিজাইনার এবং ফ্যাশন হাউস সাদা-কালোর অন্যতম স্বত্বাধিকারী। সংগ্রহ করেন নানা ধরনের গয়না। কাজের বাইরে সন্তান রাজকুমারকে সময় দিতেই বেশি পছন্দ করেন

জুলাইয়ের শেষ দিনে বর্ষাঘেরা পরিবেশেই যাই তাঁর গুলশানের বাড়িতে। ঘরের তাহসীনা শাহীন ফ্যাশন ডিজাইনারের চেয়েও যেন বেশি ‘শিল্পী’। চারুকলা থেকে পড়াশোনা শেষ করে তিনি শুধু পোশাকের নকশাই করছেন না, আঁকছেনও মনের আনন্দে। ঘরের এক পাশে ছোট্ট একটা জয়গা করে নিয়েছেন ছবি আঁকার স্টুডিও হিসেবে। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে সেখানে রঙের খেলায় মেতেই কেটে যায় অনেকটা সময়।

শা​িড় তাঁর প্রিয় পোশাক, ছবি অাঁকেন নিয়মিত
শা​িড় তাঁর প্রিয় পোশাক, ছবি অাঁকেন নিয়মিত

সকালটা শুরু হয় তারা মিউজিকের ‘আজ সকালের আমন্ত্রণে’ অনুষ্ঠান দিয়ে। এরপর নিজে গানের রেওয়াজ করেন। ছেলে রাজকুমারকে স্কুলে পাঠিয়ে চলে যান অফিসে। আর বাসায় ফিরেও আগে ছুটে যান রাজকুমারের কাছেই। তাহসীনা শাহীন বলেন, ‘আমাকে ছোটবেলার মতো কেউ যদি এখন জিজ্ঞাসা করত, তুমি কী হতে চাও? উত্তর দিতে একটুও সময় না নিয়ে বলতাম, রাজকুমারের মা হতে চাই।’ মায়ের সঙ্গে রাজকুমারের শখ্যও দারুণ। মা অফিসে থাকলে প্রতি ঘণ্টায় একবার করে কথা বলা, বাসায় আসার পর হোমটাস্কে সাহায্য নেওয়া ছাড়াও তাঁর ডায়েরি পড়ে শোনান।
বাসায় থাকলে তাহসীনা শাহীন কেমন পোশাক পরেন সেটা ততক্ষণে দেখা হয়ে গেছে। জিনস বা ঢোলা প্যান্ট দিয়ে নানা ধরনের টপ পরেন। ধরাবাঁধা দুই রং দিয়ে অন্যদের জন্য পোশাকের নকশা করলেও নিজের জন্য বেছে নেন বিভিন্ন রঙের পোশাক। অফিসের পোশাক হিসেবে বেশি পরেন ফতুয়া আর জিনস প্যান্ট। সালোয়ার-কামিজও পরেন, তবে সেটা সময় বুঝে। তাহলে কোন পোশাকের প্রতি বেশি দুর্বলতা তাহসীনা শাহীনের? উত্তরটা তৈরিই ছিল, ‘আমার তো মনে হয় শাড়িতেই মেয়েদের বেশি সুন্দর দেখায়। আমারও শাড়ি পরতে ভালো লাগে বেশি। আর শাড়ির ধরনের মধ্যে জামদানি ও নরম সুতির শাড়ি পছন্দ। বিশেষ দাওয়াতে গেলে সেখানে শাড়ি বেছে নেন। দিন ও রাতের অনুষ্ঠান ভেদে পাল্টে যায় শাড়ির ধরন ও রং। আর শাড়ি পরলে সবচেয় গুরুত্ব দিই ব্লাউজে। কারণ, শাড়ির আসল সৌন্দর্য ফুটে ওঠে ব্লাউজ বৈচিত্র্যে।’

যেকোনো পোশাকের সঙ্গেই নানা ধরনের গয়না পরেন
যেকোনো পোশাকের সঙ্গেই নানা ধরনের গয়না পরেন

আর সাজগোজ? সেটা ঠিক এখনো নিয়মিত করা হয় না বলেই জানালেন। তবে যেকোনো পোশাকের সঙ্গেই নানা ধরনের গয়না পরেন। সেটাও কানে পরলে গলা যেমন খালি রাখেন আবার গলায় পরলে খালি থাকে কান। হাতের আঙুলে পরেন নানা ধরনের আংটি। ভ্রু ফুঁড়িয়েছেন অনেক দিন হলো। সেখানে পরেন ছোট্ট একটা গয়না।
চোখ বা মুখ ঠিকমতো সাজাতে না পারলেও চুলে একটা স্টাইল করেন। সেটা হলো সামনের দিকে কয়েকটি চিকন বেণি। হাতেই করে ফেলেন সেটা। ব্যাগ বা জুতার প্রতি তেমন কোনো আকর্ষণ নেই। সপ্তাহের সাত দিনকে চার বাই তিন ভাগে ভাগ করে নিয়েছেন। তাহসীনা শাহীন বলেন, ‘আমার স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িসহ গুলশানের বাসায় চার দিন আর বাবা-মায়ের সঙ্গে ধানমন্ডিতে থাকি তিন দিন। ভালোই লাগে স্বামী আর দুই সংসারের এই জীবনযাপন।’ দুই পরিবার আর কাজ সামলে সময় করে আড্ডা দেওয়ার চেষ্টা করেন বন্ধুদের সঙ্গে। আর আড্ডার জায়গা মানেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ বা ছবির হাট।

যাচ্ছেন দাওয়াতে, তা​ই কালো জামদানি, ছেলে রাজকুমারের স​েঙ্গ
যাচ্ছেন দাওয়াতে, তা​ই কালো জামদানি, ছেলে রাজকুমারের স​েঙ্গ