সোনামণির পোশাক সবার আগে

সাত বছরের তাহা আর পাঁচ বছরের তমাকে নিয়ে গত মঙ্গলবার নগরের চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্সে কেনাকাটা করতে আসেন অক্সিজেন এলাকার নাজমুন নাহার। গরমের কথা ভেবে মা চাচ্ছিলেন নকশা করা সুতির পোশাক কিনতে। কিন্তু তাহা-তমা দু বোনই জেদ করছিল নেটের তৈরি পার্টি ফ্রকের জন্য।
শেষ পর্যন্ত নাজমুন নাহার মেয়েদের জন্য পার্টি ফ্রকই কেনেন। হেসে তিনি বলেন, ‘এই বছরের ঈদের কেনাকাটা বলতে পারেন আজই শুরু হলো। ঈদের খুশি প্রধানত বাচ্চাদেরই। তাই ওদের কেনাকাটা সবার আগে।’
আগের মতো হয়তো ঈদের পোশাক নিয়ে লুকোচুরি আর চলে না, তবে তাই বলে ঈদ পোশাক কেনার আনন্দ তো আর কমে যায়নি। মা-বাবারাও বাড়ির সোনামণির পোশাকের কথা আগেই ভাবেন। সবাই সর্বোচ্চ সাধ্য অনুযায়ী রংবেরঙের আর চলতি ফ্যাশনের পোশাক কিনে দিতে চান শিশুদের।

নগরের কয়েকটি বিপণিকেন্দ্রে ছোটদের পোশাকের দোকান ঘুরে দেখা গেল মেয়েশিশুদের ফ্রিল দেওয়া পার্টি ফ্রক, বারবি ফ্রক, স্কার্ট, টপস, লেহেঙ্গা, গাউন ধাঁচের ফ্রক বেশি চলছে। জমকালো পাথর বা পুঁতি বসানো ফ্রক বা গাউনই বেশি পছন্দ করছেন ক্রেতারা। পার্টি ফ্রক বা লেহেঙ্গার ক্ষেত্রে জর্জেট, শিফন, নেট, টিস্যু, ভেলভেটের পাশাপাশি অনেকে সুতি কাপড়কেও বেছে নিচ্ছেন। বেশির ভাগ পোশাকই স্লিভলেস ও ছোট হাতের।
ছেলেশিশুদের জন্য বেশি বিক্রি হচ্ছে কটি পাঞ্জাবি, রাম্পার, জিনসের প্যান্ট, পোলো শার্ট, কটি দেওয়া হাফ শার্ট, হাফ হাতা টি–শার্ট প্রভৃতি। এতে গেঞ্জি কাপড় ও সুতির চাহিদাই সবচেয়ে বেশি।
নগরের আফমি প্লাজায় বাচ্চার জন্য পোশাক কিনতে আসেন গৃহিণী আমিনা আহমেদ। তিনি বলেন, ‘ছেলের জন্য খাদির কটি পাঞ্জাবি আর গেঞ্জি সেট কিনলাম। মেয়ের জন্য জর্জেট আর সুতির দুটি ফ্রক কিনেছি। জর্জেটের ফ্রকের নিচে সুতির আস্তর দেখে নিয়েছি। কারণ ফ্যাশনের পাশাপাশি ওদের আরামের কথাও মাথায় ছিল।’
বাজার ঘুরে দেখা গেল, ছয় মাস থেকে ছয় বছর বয়সী মেয়েশিশুদের পোশাক ৫০০ থেকে ৫ হাজার, ৬ থেকে ১২ বছর বয়সীদের ৭০০ থেকে ৮ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। ছেলেশিশুদের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে ৫০০ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকার মধ্যে।
আফমি প্লাজার মাস ফ্যাশন শুধু বাচ্চাদের পোশাকই বিক্রি করে। দোকানটির বিক্রেতা মো. শহীদ জানান, মেয়েশিশুদের জন্য ১৫০০ থেকে ২৫০০ টাকার মধ্যে পোশাক বেশি বিক্রি হচ্ছে। ছেলে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে গেঞ্জি সেট বেশি চলছে।
শিশুদের পোশাকের দোকান শৈশব। শৈশবের চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্স শাখার জ্যেষ্ঠ বিক্রয়কর্মী রেহানা আকতার বলেন, ‘আমাদের দোকানের বেশির ভাগ পোশাকই সুতি কাপড়ের। মেয়েশিশুদের জন্য ৩০০ টাকা থেকে শুরু, সর্বোচ্চ ২ হাজার ৫০ টাকার মধ্যে পোশাক পাওয়া যাচ্ছে। ছেলেশিশুদের জন্য অন্যান্য পোশাকের পাশাপাশি বিক্রি হচ্ছে ব্লেজার স্যুট। দাম পড়ছে ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা।’
দেশি পোশাকের ফ্যাশন হাউসগুলোতেও শিশুদের জন্য নানা নকশার পোশাক পাওয়া যাচ্ছে।