ফ্যাশনে বিপ্লব ঘটানো হলিউডের ‘ব্যাড বয়’

১৯৩২ সাল। যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের লিবার্টিভিল হাইস্কুলের সবচেয়ে খারাপ ছাত্রের কথা বলছি। তখন সেই ছাত্রের বয়স সবে আট। ক্লাসে মারামারি, পরীক্ষায় অকৃতকার্য, শিক্ষকদের সঙ্গে বেয়াদবি, বাবার সঙ্গে বিদ্রোহ, মদ্যপ মায়ের ওপর অভিমান—সব মিলিয়ে যাচ্ছেতাই জীবন! মহাবিশ্বে শুধু একটা জিনিসই তাঁর ভালো লাগে। থিয়েটার ক্লাস। এক দিন সেই ক্লাসে স্যার বললেন, ‘তোমরা সবাই মোরগের অভিনয় করো। যে মোরগ সারা দিন খুঁটে খুঁটে খাবার খায়। হঠাৎই বেজে ওঠে যুদ্ধের সাইরেন। নাও, শুরু করো।’ সবাই মোরগ সেজে ‘কুক্কুরুকু’ ভয়ের আওয়াজ করতে লাগল। আর এদিক–সেদিক তাকাতে লাগল। শুধু একটি ছেলে মোরগ হয়ে সাইরেনের সময়ও দিব্যি খাবার খেতে লাগল। শিক্ষক তাকালেন সেই ছেলেটির দিকে। তখন ছেলেটি বলল, ‘আমি তো মোরগ। যুদ্ধের সাইরেনের কী বোঝে মোরগ?’ এই ছেলেই হলিউডের ইতিহাসের অন্যতম সফল অভিনেতা মার্লোন ব্র্যান্ডো। যিনি ফ্যাশন আর স্টাইল আইকন হিসেবে নিজের নাম লিখিয়েছেন স্বর্ণাক্ষরে, সবার ওপরে। জেনে নেওয়া যাক সেই সম্পর্কে।
১ / ১০
তরুণ ব্র্যান্ডোর ওয়ার্ডরোবকে আজকে সবাই একবাক্যে অনুমোদন দেবেন। কেননা, সেগুলো ভর্তি ছিল গোল গলার টি–শার্ট, হাতা লম্বা জাম্পার, সুতির ট্রাউজার, চিকন লেদারের বেল্ট আর লেদারের মোটরসাইকেল জ্যাকেটে। আরামপ্রদ এসব পোশাক ও অনুষঙ্গই কিন্তু তার সময়ে ছিল ‘আউট অব ফ্যাশন’। মেথড অ্যাক্টিংকে হলিউডে পরিচিত করানোর সঙ্গে সঙ্গে আরামদায়ক পোশাককে ফ্যাশনেবল পোশাক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলের মার্লোন
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে
২ / ১০
১৯৪০–এর দশকে টি–শার্টের ওপরে জ্যাকেট পরাকে আইকনিক ফ্যাশনে পরিণত করেন মার্লোন। এই ঘটনার ৮০ বছর পরে এখনো টি–শার্টের ওপর জ্যাকেট পরা ট্রেন্ডি। আসছে শীতেও শ্রেণি–পেশা নির্বিশেষে তরুণদের টি–শার্টের ওপর জ্যাকেট পরতে দেখা যাবে। এর প্রবর্তন করেছিলের আর কেউ নন, আটবার অস্কার মনোনয়ন পাওয়া, দুবার অস্কারজয়ী বড় পর্দার ‘গডফাদার’, সাফল্যের ঝলকানির পাশে ব্যক্তিগত জীবনের হতাশায় ডুবে থাকা, নারী, মদে আসক্ত, উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনে অভ্যস্ত হলিউডের ‘ব্যাড বয়’ মার্লোন ব্র্যান্ডো
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে
৩ / ১০
মার্লোন ব্র্যান্ডোকে সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে সাদা টি–শার্ট আর জিনসে। তার আগে কোনো হলিউড তারকা প্রকাশ্যে শুধু একটা টি–শার্টে দেখা দেননি। ১৯৫১ সালের পর সারা বিশ্বেই সাদা টি–শার্টের উৎপাদন বেড়ে যায়। ওই সময় বলা হয়েছিল, ‘হোয়াইট টি–শার্ট ডিফাইনড আ জেনারেশন অব আমেরিকান মেন।’
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে
৪ / ১০
হলিউডে জিনস ‘আমদানি’ করেন মার্লোন। এর আগে জিনস ছিল ‘ছোটলোকের’ পোশাক
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে
৫ / ১০
শীতকালে মার্লোন ব্র্যান্ডোর পরিচিত লুক ছিল হাতে বোনা জাম্পার, সেটি গোজা থাকত ট্রাউজারে। সেটিও হয়ে গেল পুরুষের আইকনিক ‘শীত ফ্যাশন’
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে
৬ / ১০
এ ছাড়া মার্লোনের আরেকটি সিগনেচার লুক ছিল প্যান্টে ইন করা ফিটিং শার্ট আর তুলনামূলকভাবে চিকন লেদারের বেল্ট। তখন মোটা, কারুকার্য করা বেল্ট ছিল ট্রেন্ডি
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে
৭ / ১০
অনস্ক্রিন আর অফস্ক্রিন, দুই জায়গাতেই মার্লোন ব্র্যান্ডো নিজের পছন্দমতো পোশাক পরেছেন। পর্দা আর বাস্তব জীবন—উভয় জায়গাতেই তাঁকে দেখা গেছে কালো লেদারের জ্যাকেটে। ১৯৫৩ সালে ‘দ্য ওয়াইল্ড ওয়ান’ মুক্তির পর কালো জ্যাকেট ফ্যাশন দুনিয়া শাসন করা শুরু করে। আর ‘ব্যাডবয়’ ব্র্যান্ডোর আরেকটি সিগনেচার স্টাইলে পরিণত হয় কালো লেদারের জ্যাকেট, নীল জিনস আর মাথায় পিকড ক্যাপ। এখন তো সেই ব্ল্যাক লেদার জ্যাকেট থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে বাইকার জ্যাকেট ক্লাসিক তরুণদের ‘ইউনিফর্মে’ পরিণত হয়েছে
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে
৮ / ১০
শুধু পোশাকই নয়, হেয়ারস্টাইলেও নিজের স্বাক্ষর রেখেছেন মার্লোন ব্র্যান্ডো। একপাশে সিঁথি করে বাকিটা জেল দিয়ে ঠেলে দেওয়া, এই সহজ, সাধারণ হেয়ারস্টাইলটি ব্র্যান্ডোর আগে কেন যেন আর কোনো হলিউড তারকারই মাথায় আসেনি!
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে
৯ / ১০
এককথায় আধুনিক স্টাইলিশ পুরুষকে কল্পনা করলে, আপনি তাঁকে যেমন সব পোশাকে দেখতে পান, বলতে গেলে তার সবই ব্র্যান্ডো থেকে অনুপ্রাণিত
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে
১০ / ১০
তবে ফ্যাশন বিশ্বে ব্র্যান্ডোর সবচেয়ে বড় অবদান জিনস আর ডেনিম। তিনি রীতিমতো বিপ্লব ঘটিয়েছেন। জিনস এখন সব ঋতুতে, সবখানে, এমনকি সব বয়সের নারী, পুরুষ নির্বিশেষে সবার জন্য প্রাসঙ্গিক
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে