মেয়েকে নিয়ে বার্বির সাজে বাঁধন, রুনা ও নাবিলা

নিজেদের মেয়েদের সঙ্গে নিয়ে বার্বি সাজলেন আজমেরী হক বাঁধন, রুনা খান আর মাসুমা রহমান নাবিলা। তবে অবিকল বার্বির সাজ অনুসরণ করা হয়নি। বরং ছয়জনের ব্যক্তিত্ব বুঝে বেছে নেওয়া হয়েছে সাজপোশাক।

বার্বির সাজে রুনা খান, মাসুমা রহমান নাবিলা এবং আজমেরী হক বাঁধন
সাজ: আফরোজা পারভীন, পোশাক: সাফিয়া সাথী, ছবি: তপু রহমান, কোরিওগ্রাফার: রাকিব খান

বার্বির গোলাপি দুনিয়া যেন চারপাশ আচ্ছন্ন করে ফেলেছে। প্রথম সপ্তাহে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই ছবিটা আয় করেছে ১৫৫ মিলিয়ন ডলার। বাকি দুনিয়া থেকে আরও ১৫০ মিলিয়ন। ইনস্টাগ্রাম, টিকটক, ফেসবুক জগতের বাইরেও অনেকেই নিজেকে বার্বি সাজে সাজাচ্ছেন। তারকারাও পিছিয়ে নেই। নিজেদের মেয়েদের সঙ্গে নিয়ে বার্বি সাজলেন আজমেরী হক বাঁধন, রুনা খান আর মাসুমা রহমান নাবিলা। তবে অবিকল বার্বির সাজ অনুসরণ করা হয়নি। বরং ছয়জনের ব্যক্তিত্ব বুঝে বেছে নেওয়া হয়েছে সাজপোশাক।

মেয়েদের সঙ্গে রুনা খান এবং বাঁধন
সাজ: আফরোজা পারভীন, পোশাক: সাফিয়া সাথী, ছবি: তপু রহমান, কোরিওগ্রাফার: রাকিব খান

আর পুরো পরিকল্পনাটির পেছনে ছিলেন রূপবিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীন। তিনি জানান, প্রায় প্রতিটা মেয়ের মধ্যেই সুপ্ত বার্বি আছে। কিন্তু সামাজিক অবস্থান কিংবা পরিবেশের জন্য বার্বির মতো করে নিজেকে তুলে ধরতে পারে না। শ্যুটের সময় বড়দের পাশাপাশি ছোটরাও খুব মজা পেয়েছে। মায়েরাও যে তাদের মতো একই পোশাক পরে সাজছেন, সেটা দেখেই আনন্দ পাচ্ছিল। দুই রাতের মধ্যে পোশাক ছয়টি বানিয়ে দিয়েছেন ডিজাইনার সাফিয়া সাথী। মা–মেয়ে দুজনের পোশাকেই নকশা এবং রঙে মিল রাখা হয়েছে। এই শুটে সাজের চেয়ে মা-মেয়ের বন্ধনের সৌন্দর্য তুলে ধরাটাই মুখ্য ছিল আফরোজা পারভীনের কাছে।

আরও পড়ুন

মেয়ে মিশেল আমানী সায়রার উৎসাহে এই শুটে রাজি হয়েছেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। পাশাপাশি বার্বি ছবিটাও একটি কারণ ছিল।

বার্বি হলেন তাঁরা
সাজ: আফরোজা পারভীন, পোশাক: সাফিয়া সাথী, ছবি: তপু রহমান, কোরিওগ্রাফার: রাকিব খান

আজমেরী হক বাঁধনের মতে, ‘নারী পরিচালিত ছবিটি পুরুষতান্ত্রিক সমাজকে বড় একটা ধাক্কা দিয়েছে। আমাদের দেশে নারীবিদ্বেষী ছবির প্রতি সবার আগ্রহ আছে। এমনকি অনেক নারীও এ ধরনের ছবি পছন্দ করেন। কারণ, এর মাধ্যমে নিজেদের অবস্থানের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরতে পারেন। ছবিটি এ কারণেই অনেকে পছন্দ করবেন না। নিয়মের মধ্য থেকে নিয়ম বদলাতে হয়। বার্বি তাঁর দুনিয়ায় হিরো ছিল। সবাই তাকেই অনুসরণ করত। কিন্তু আসল পৃথিবীতে আসার পর দেখল সবকিছু তার কথামতো হচ্ছে না। এটা তার জন্যও ধাক্কা ছিল। বার্বির জীবন সব সময় ট্রেন্ডি। সেই দুনিয়াতে ঢুকেই তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে।

বার্বির ট্রেন্ডি লুকে বাঁধন
সাজ: আফরোজা পারভীন, পোশাক: সাফিয়া সাথী, ছবি: তপু রহমান, কোরিওগ্রাফার: রাকিব খান

বাঁধনের এই সাহসী চিন্তার ধারাই তাঁর সাজে তুলে ধরা হয়েছে। ডিজাইনার সাথী সব কটি ফ্রকই খাটো করা বানিয়েছেন। বাঁধন এবং সায়রার জন্য বার্বির পোশাক থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ছাপা নকশার অরগাঞ্জার পোশাক বানিয়েছেন। মেকআপেও আফরোজা পারভীনকে পথ দেখিয়েছে বাঁধনের সাহসী মনোভাব। চুলের নিচের দিকেও লাল রং করা হয়েছে। ত্বকের রং ঠিক রেখেই বার্বির রূপে মা ও মেয়েকে উপস্থাপন করেছেন আফরোজা।

মেয়ে মিশেল আমানী সায়রার উৎসাহে এই শুটে রাজি হয়েছেন আজমেরী হক বাঁধন
সাজ: আফরোজা পারভীন, পোশাক: সাফিয়া সাথী, ছবি: তপু রহমান, কোরিওগ্রাফার: রাকিব খান

কিছুক্ষণের জন্যও যে বার্বি সাজা যায়, এমনটা আগে কখনো মনে হয়নি। অভিনেত্রী রুনা খানের জন্য পুরো অভিজ্ঞতাটিই তাই বেশ মজার ছিল। অল্প সময়ের মধ্যে চমৎকার আয়োজন। তিনি বলেন, ‘সায়রাকেও আমি জন্মাতে দেখেছি। আমার মেয়ে রাজেশ্বরী আনাহী ওয়াহিদ এবং সায়রা দুজনেই এখন প্রায় আমাদের সমান। একই রকমভাবে সেজেছি। দুজনই প্রথমবারের মতো এত ভারী মেকআপ নিয়েছে। চোখে বড় ল্যাশ পরতে হয়েছে। চোখ দিয়ে রীতিমতো পানি পরছিল, কিন্তু মানা করেনি। আমার মেয়ে যখন বড় হবে, এটা তার কাছে মজার স্মৃতি হয়ে থাকবে।’

রুনা খানের পোশাকটিতে ছিল চুমকির কাজ
সাজ: আফরোজা পারভীন, পোশাক: সাফিয়া সাথী, ছবি: তপু রহমান, কোরিওগ্রাফার: রাকিব খান

সাজের পুরো ভারটাই আফরোজা পারভীনের ওপর ছেড়ে দিয়েছিলেন রুনা খান। সাজাতে গিয়ে রূপবিশেষজ্ঞ হিসেবে আফরোজা পারভীনের মূল অনুপ্রেরণা ছিল রুনা খানের নতুন কিছু করার ইচ্ছা, সাহসী মনোবল। লাল রঙের পোশাকটির ওপরের অংশে চুমকির কাজ আছে। নিচের অংশে লাল রঙের ভেলভেট। হাতে ছিল র‍্যাফল নকশার স্কার্ফ।

রুনা খান এবং মেয়ে রাজেশ্বরী আনাহী ওয়াহিদ বারবির সাজে
সাজ: আফরোজা পারভীন, পোশাক: সাফিয়া সাথী, ছবি: তপু রহমান, কোরিওগ্রাফার: রাকিব খান
আরও পড়ুন
হালকা গোলাপি রঙের পোশাকে মাসুমা রহমান নাবিলা
সাজ: আফরোজা পারভীন, পোশাক: সাফিয়া সাথী, ছবি: তপু রহমান, কোরিওগ্রাফার: রাকিব খান

একটু দেরিতেই উপস্থিত হয়েছিলেন অভিনেত্রী মাসুমা রহমান নাবিলা। তিনি চেয়েছিলেন তাঁর মেকআপটি একটু হালকা হোক। কারণটাও বললেন, ‘এখন বার্বির মধ্যে চকচকে পুতুল ভাব কমে এসেছে, আমিও চাচ্ছিলাম না খুব কড়া মেকআপ।’ বার্বির সাজে ছবি তোলার সময় ছোটবেলার কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। জানালেন, ‘আমার বন্ধুদের বার্বি ছিল, আমার ছিল না। দোকানে যেতাম, দেখতাম, রেখে চলে আসতাম। অনেক দাম ছিল। আমার মেয়ে মালহার মাসুমা হকের বয়স ২। যদি কখনো বার্বির জন্য আবদার করে কিনে দেব।’

মেয়ে মালহার মাসুমা হক এবং মা নাবিলার পোশাকে ছিল রঙের মিল
সাজ: আফরোজা পারভীন, পোশাক: সাফিয়া সাথী, ছবি: তপু রহমান, কোরিওগ্রাফার: রাকিব খান

নাবিলার পোশাকটি ট্যুল কাপড় দিয়ে বানানো। মা-মেয়ের পোশাকের নকশায় ভিন্নতা থাকলেও রং একই রাখা হয়েছিল।

আরও পড়ুন