ঈদের পর বিয়ে? স্যুট না টাক্সিডো পরবেন

বিয়েতে স্যুট একটি জনপ্রিয় পোশাক। মডেল: রাজ ম্যানিয়া, পোশাক: ফ্রিল্যান্ড
ছবি: কবির হোসেন

আমাদের দেশে বরের পোশাক হিসেবে শেরওয়ানির পাশাপাশি বিয়েতে স্যুটও সমান জনপ্রিয়। বিশেষ করে বউভাত বা অন্যান্য অনুষ্ঠানে স্যুট বা টাক্সিডোতেই বর স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে বেশি।

ওয়েডিং স্যুট বিভিন্ন রং ও কাপড়ের হতে পারে। আমাদের দেশে সাধারণভাবে কালো বা গাঢ় ধূসর সিঙ্গেল ব্রেস্টেড জ্যাকেটের ব্যবহারই বেশি। ঋতুর ওপর ভিত্তি করে কাপড় হতে পারে সিল্ক থেকে উল। বিয়ের স্যুট সাধারণত সাদা শার্ট ও ফ্রেঞ্চ কাফের সোনালি বা রুপালি স্টেটমেন্ট কাফলিং সহযোগে পরা হয়ে থাকে। সঙ্গের প্যান্টটা হয় সরু। তবে এখন বরের সাজে ভিন্নতা আনতে বা কনের সাজের সঙ্গে সামঞ্জস্য তৈরি করতে জমকালো কাপড়ে জরির নকশার ফিউশন স্যুটও চলছে। ভেলভেট ফেব্রিকের ব্যবহার চলছে অনেক বছর। ধীরে ধীরে এখানেও খানিকটা পরিবর্তন আসতে শুরু করেছে। ভেলভেটের জায়গা নিচ্ছে জ্যাকারড বুননের ফেব্রিক। পাশাপাশি প্রাকৃতিক তন্তু অর্থাৎ ন্যাচারাল ফাইবারের চাহিদাও বেড়েছে।

মখমলের ব্লেজার আর বো পরলে বর সাজে আসবে অধুনিক লুক
ছবি: কবির হোসেন

রিসেপশনে বরের পরনে অধিকাংশ সময় স্যুট অথবা প্রিন্স কোট দেখা যায়। শুধু আমাদের দেশই না, পৃথিবীজুড়ে নানা দেশের বিয়ের অনুষ্ঠানেই এ দুটো ট্রেন্ডি পোশাক। পাশাপাশি টাক্সিডো ও বেসপোক ডিজাইনও ব্যবহার করতে দেখা যায়। আর রঙের ক্ষেত্রে সাদা, সবুজাভ, কালো, নেভি ব্লু, মেরুন, বারগ্যান্ডি, ক্যামেল শেড লক্ষণীয়। ধূসর রংও দেখা যায়।

বরের স্যুট ডিজাইনে সিঙ্গেল ব্রেস্টেডের চাহিদা সব সময়ই বেশি। মডেল: রাজ ম্যানিয়া
ছবি: অধুনা

বরের স্যুটে মূলত তিনটি বিষয় জরুরি—কাপড়, ফিটিং ও নকশা। পেশাগত কারণে অনেকেরই একাধিক স্যুট থাকে। তবে আলমিরাতে বিয়ের স্যুটের স্মৃতির সঙ্গে তো অন্যটা মেলানো যাবে না। দেশে বরের স্যুট ডিজাইনে সিঙ্গেল ব্রেস্টেডের চাহিদা সব সময়ই বেশি। সেলফ প্রিন্টেড ও বুননের অলংকরণ করা স্যুটে আগ্রহ বেড়েছে। চলতি ধারায় দেখা যায়, অনেকেরই অলংকরণে আগ্রহ। যেমন স্যুটে থ্রেড এমব্রয়ডারির চাহিদা বেড়েছে। একই সঙ্গে সুতার কাজের আভিজাত্য নজর কেড়েছে ফ্যাশনসচেতনদের। তরুণেরা এখন ফ্লোরালের দাপট থেকে বেরিয়ে আসছেন। ফ্লোরালের পরিবর্তে ক্রেতার মনোযোগ চেক ও জ্যামিতিক নকশায়। স্যুটে

ল্যাপেলের নকশা ও জ্যাকেটের দৈর্ঘ্য বরের লুকে বিশেষ ভূমিকা রাখে। ভিনটেজ লুক চাইলে ডাবল ব্রেস্টেড স্যুট উপযোগী হবে। 

ছেলেদের স্যুটে নীল একটি কমন রং
ছবি: কবির হোসেন

বরের পোশাক হিসেবে টাক্সিডোও অনেকের প্রথম পছন্দ। তবে খেয়াল রাখা জরুরি, রিসেপশন যদি হয় সন্ধ্যায়, তবেই টাক্সিডোর ব্যবহার যথার্থ হবে। কারণ, টাক্সিডোকে বলা হয় ব্ল্যাক টাই ইভেন্ট স্যুট। বস্তুত, পোশাকটি বিশেষ উপলক্ষের বার্তা বহন করে। টাক্সিডোর কাজ শুধু সুন্দর দেখানোই নয়, বরং উপলক্ষটা যে বিশেষ, সেটাও তুলে ধরা। তাই বিয়ের স্যুট হিসেবে টাক্সিডো ব্যবহার করলে উপস্থাপন হতে হবে খুবই ফরমাল। যেকোনো হালকা কাপড় দিয়ে তৈরি হতে পারে টাক্সিডো। বেশির ভাগ টাক্সিডো কালো ও মিডনাইট ব্লু হয়ে থাকে। তবে কেউ চাইলে ক্যাজুয়াল কাপড় দিয়েও তৈরি করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে রঙের ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, টাক্সিডো সব সময় খুবই বোল্ড স্টেটমেন্ট বহন করে। মিলিয়ে ভেতরের পোশাকটাও হতে হবে যথার্থ। সাধারণত সলিড সাদা বাটন আপ শার্টের সঙ্গে পরতে হয়। এর কারণ হচ্ছে, টাক্সিডোর ল্যাপেল খুব আকর্ষণীয় থাকে। সাধারণত স্যাটিন কাপড় বা উঁচু মানের সিল্ক দিয়ে তৈরি হয় সেটি। বরের ক্ষেত্রে টাক্সিডোর ল্যাপেল মখমলেরও হতে পারে। রীতি অনুযায়ী, এর সঙ্গে পরতে হয় বো টাই। কেউ চাইলে গলায় স্কার্ফও ব্যবহার করতে পারেন। আর বেল্টের পরিবর্তে ওয়েস্ট কভারিং এবং ওয়েস্ট কোট।

স্যুট বা টাক্সিডোতে ভেতরের শার্টটিও গুরুত্বপূর্ণ
ছবি: কবির হোসেন

বরের স্যুটের ভেতরে থাকা শার্টটিও গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত ভেতরের শার্টটি অন্য কোনো রঙের হয়ে থাকে। বরের শার্ট বা পকেট স্কয়ার কনের পোশাকের রং থেকে বেছে নিলে প্রাসঙ্গিক হবে। একইভাবে বরের স্যুটের সঙ্গে বেল্ট আর জুতাও গুরুত্বপূর্ণ। পরিপাটি বরকে হাতের ঘড়ি আর চুলের স্টাইল নিয়েও ভাবতে হবে।