পয়লা বৈশাখের পোশাক–আশাকের বিক্রিবাট্টা কেমন ছিল এবার

শুধু নতুন পোশাকই নয়, তার সঙ্গে মিলিয়ে অনুষঙ্গ, ঘর সাজানোর দেশীয় উপকরণ কিনছেন ক্রেতারা।
ছবি: প্রথম আলো

বেশ কয়েক বছর পর আবারও জমে উঠেছে বৈশাখের কেনাকাটা। কিছুটা হলেও ফিরে পেয়েছে আগের রূপ। ২০২০ সাল থেকে করোনা মহামারি, পবিত্র রমজান মাসের কারণে বৈশাখের কেনাকাটায় বেশ ভাটা পড়েছিল। এবার ঈদুল ফিতর ও পয়লা বৈশাখের মাঝখানে বেশ কিছুদিনের ব্যাবধান; তাই লম্বা ছুটির পর যখন শপিং মল ও বুটিক হাউসগুলো খুলেছে, তখন দেখা গেল ক্রেতাদের ভিড়। শুধু নতুন পোশাকই নয়, তার সঙ্গে মিলিয়ে অনুষঙ্গ, ঘর সাজানোর দেশীয় উপকরণ, বাসনকোসন কিনছেন ক্রেতারা। আর শুধু অফলাইনের বিক্রেতারাই নন, ব্যস্ত সময় পার করছেন অনলাইনের বিক্রেতারাও।

মাটির বাসনকোসন নিয়ে কাজ করছেন স্থপতি জান্নাতুল ফেরদৌস। তাঁর প্রতিষ্ঠানের নাম ‘ভূমি আর্টিসান’। জান্নাতুল বলছিলেন, এপ্রিলের ৮ তারিখ থেকে আজ ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত তাঁর লাখ টাকার বেশি মাটির বাসনকোসন বিক্রি হয়েছে। ২০২০ সালে তিনি মাটির বাসনকোসন নিয়ে কাজ শুরু করেন। তবে এবারই তাঁর বেচাকেনা হয়েছে সবচেয়ে ভালো। এখনো প্রচুর অর্ডার আসছে, তবে ডেলিভারি দেওয়ার পর্যাপ্ত লোক না থাকায় এ মুহূর্তে সব অর্ডার বন্ধ রেখেছেন।

বৈশাখ এলে বাড়ির ছোট সদস্যটির জন্য তো কমবেশি কেনাকাটা করা হয়। ছোট মেয়েদের শাড়ির চাহিদা বেড়ে যায় বৈশাখে।

ছোটদের শাড়ির চাহিদা বেড়ে যায় বৈশাখে
ছবি: প্রথম আলো

ছোটদের শাড়ি নিয়ে কাজ করছে ‘ইনসি উইনসিস ক্লজেট’। এর স্বত্বাধিকারী নাকিব ইবনে ওমর বললেন, ঈদের কারণে বৈশাখের শাড়ি নিয়ে খুব একটা নিরীক্ষার সুযোগ পাননি তাঁরা। ভেবেছিলেন, তেমন সাড়া পাবেন না। তবে শেষ মুহূর্তে ক্রেতার আগ্রহ দেখে নতুন কিছু নকশার শাড়ি এনেছেন। পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে শেষ সপ্তাহে প্রায় প্রতিদিনই ২৫-৪০টি শাড়ি বিক্রি হয়েছে।

দেশীয় ফ্যাশন প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ফ্যাশন উদ্যোক্তা সমিতি (এফইএবি বা ফ্যাশন উদ্যোগ) উৎসবের বেচাকেনা নিয়ে ২০১২ সালে একটি জরিপ করেছিল। সে তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশের ফ্যাশন হাউসগুলোতে সারা বছরের মোট বিক্রির ৫০ শতাংশ হয় রোজার ঈদে। ২৫ শতাংশ হয় পয়লা বৈশাখে। পরপর কয়েক বছর সেই ধারা অব্যাহত ছিল। তবে ২০২০ সালে করোনা মহামারির কারণে সেই কেনাকাটায় বেশ ভাটা পড়ে।

তাই গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতায় এবারের বৈশাখী পোশাকের খুব বেশি আয়োজন করেনি বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান। তবে শেষ মুহূর্তে ক্রেতার ব্যাপক সাড়া মেলায় অনেকেই এখন অল্পস্বল্প নতুন পণ্য আনছে। ‘রঙ বাংলাদেশ’-এর স্বত্বাধিকারী সৌমিক দাশ বলছিলেন, ‘গত কয়েক বছরের চেয়ে এবারের কেনাকাটা বেশ বেড়েছে। ঈদের পরপরই মানুষ আবার বৈশাখের পোশাক কিনবে, এমনটা আমরাও আশা করিনি। চাহিদার তুলনায় আমাদের আয়োজন আসলেই কম ছিল। তবে যেটুকু ছিল, তার সবটুকুই বিক্রি হয়েছে।’

গত কয়েক দিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতেও বৈশাখী কেনাকাটা নিয়ে মানুষের আগ্রহের বিষয়টি খেয়াল করা গেল। এই ক্রেতারা মূলত ঢাকার আজিজ সুপারমার্কেট এবং বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের ‘দেশি দশ’ ও ‘আড়ং’-এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে কেনাকাটা করেছেন।

আরও পড়ুন