সকাল থেকে রাত, অভিনেত্রী কেয়া পায়েলের দিন কাটে যেভাবে

সারা দিন ঢাকার বাইরেই ছিলেন শুটিংয়ের কাজে। প্রথম আলোর সাক্ষাৎকার দিতেই খুলনা থেকে সরাসরি চলে এসেছেন নিজের পারলারে। ৩০ মিনিটের মধ্যে তৈরি হয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালেন অভিনেত্রী কেয়া পায়েল। ক্লান্তি থাকলেও হাসি দেখে সেটা বোঝার কোনো উপায় নেই। অভিনেত্রী হিসেবে কয়েক বছরের মধ্যেই নাম কুড়িয়েছেন বেশ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ৬২ লাখের মতো অনুসারী আছেন। ছবি পোস্ট করলেই হু হু করে লাইক চলে আসে। নাটকের বাইরে অনলাইনে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। এখন চেষ্টা করছেন অফলাইনে দেওয়া পারলারটিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে।

নতুন নেশা

নিজের পারলার ‘পার্ল বাই পায়েল মেকওভার অ্যান্ড স্যালনে’ই ফটোশুট করেছেন অভিনেত্রী কেয়া পায়েল
ছবি: কবির হোসেন, পোশাক: গো দেশি

২০২০ সাল থেকে নাটক করা শুরু করেছেন। এর মধ্যে ছিল করোনা। শুটের কাজ তখন কমই হয়েছে। তারপরও প্রায় ৪০০ নাটকে অভিনয় করে ফেলেছেন এই কয়েক বছরেই। ব্যস্ত থাকতে পছন্দ করেন। তবে ভবিষ্যতে নাটকের কাজ কমিয়ে দেবেন। এই ভাবনা থেকেই বছর দেড়েক আগে ‘পার্ল বাই পায়েল মেকওভার অ্যান্ড স্যালন’টি দিয়েছেন। এটা কেয়া পায়েলের নতুন নেশা। হাতে সময় থাকলে পারলারে না যাওয়া পর্যন্ত অস্থির বোধ করেন। এটা তাঁর জন্য একটা ভালোবাসার জায়গা। নিজের বাসাই মনে করেন। সময় পেলেই চলে ছুটে যান একরকম।

আরও পড়ুন
কেয়া পায়েল প্রায় ৪০০ নাটকে অভিনয় করেছেন
ছবি: কবির হোসেন, পোশাক: গো দেশি

‘অনেক যে পরিকল্পনা করে করেছি, তা–ও না। মনে হলো একটা নিজস্ব উদ্যোগ নেওয়া দরকার। এখন যে কর্মব্যস্ত জীবন, তাতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। একটা সময় হয়তো মনে হবে, অল্প কাজ করি। তখনকার কথা চিন্তা করেই এই উদ্যোগ নেওয়া। আমি যখন স্যালনে আসি, তখন গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলি। হাতে সময় থাকলেই মাথায় ঘোরে—একটু যাই, একটু বসি, একটু দেখি। আমার মনে হয়েছে, এই ব্যবসার মাধ্যমে মানুষের অনেক কাছাকাছিও পৌঁছানো যাবে’, জানালেন কেয়া পায়েল।

পছন্দের কাজগুলো

নিজের পারলারেই সৌন্দর্যচর্চার কাজ সেরে নেন
ছবি: কবির হোসেন, পোশাক: গো দেশি

নাটকের শুটিং বা কোনো কাজ থাকলে সেই শিডিউল অনুযায়ীই দিন কাটান। কাজ না থাকলে ফোন বা অ্যালার্ম বন্ধ করে ঘুমান। সেদিনটা নিজের পছন্দে কাটান। পারলারে যান। পাশাপাশি খুব কাছের বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেন, এক কাপ কফি খান। বাসায় থাকলে বাসা গোছান। হাসতে হাসতে জানান, ‘এমনও হয়েছে রাত তিনটার সময় দেখেছি ঘরে ময়লা, ঝাড়ু দেওয়া শুরু করেছি। পছন্দ করেন রান্না করতেও। খিচুড়ি ভালো লাগে। নতুন নতুন রান্না শেখার প্রতি আগ্রহও আছে।

মুহূর্ত ধরে সুন্দরভাবে বাঁচতে চান
ছবি: কবির হোসেন, পোশাক: গো দেশি

তবে কষ্ট পান যে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা এত ঘটা করে রান্না করার পর ১০ মিনিটেই সব খাওয়া শেষ হয়ে যায়। তালিকা এখানেই শেষ নয়, আরও আছে। ঘুরতে ভালোবাসেন। অভিনয়শিল্পী হিসেবে এ বিষয়ে পাওয়া যায় বাড়তি সুবিধা। জানান, শুটের সময় এমন সব জায়গায় ঘোরা যায়, যেখানে অনেক সময় কেউ হয়তো যায়নি। ঢাকা, ফরিদপুর, কক্সবাজার ও কাশ্মীর ভালো লেগেছে। যেতে চাই সৌদি আরবে।’

আরও পড়ুন

নিজের যত্নে

বেছে নেন আরামদায়ক পোশাক
ছবি: কবির হোসেন, পোশাক: গো দেশি

নিজের যত্নে বেশি সময় ব্যয় করেন না এই অভিনেত্রী। প্রতিদিন রুটিন মেনে রূপচর্চা করা হয় না। বিষয়টি অনেক ধৈর্যের। এ ক্ষেত্রে তিনি একটু অলস। চুল আর ত্বকের জন্য যেটা প্রয়োজন, সেটা পেয়ে যান নিজের পারলারেই। সকালে ঘুম থেকে উঠে বরফ লাগান। এর বাইরে প্রচুর পানি পান করেন।

চেষ্টা করেন স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার
ছবি: কবির হোসেন, পোশাক: গো দেশি

চেষ্টা করেন স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার। কিন্তু যেহেতু ক্যামেরার সামনে কাজ করা হয়, যতটুকু সম্ভব গুছিয়ে চলেন। প্রয়োজনের বাইরে একদমই মেকআপ করেন না। চিনি এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেন। আর হ্যাঁ, প্রচুর ব্ল্যাক কফি খান। দিনে অন্তত পাঁচ থেকে ছয় কাপ। জানালেন, তিনি আসলে কফি পারসন। আরামদায়ক পোশাক বেছে নেন সব সময়। তাই হয়তো এই ফটোশুটে ব্যবহৃত লাল রঙের সিল্কের কো-অর্ডটা পরেই বললেন, এত আরাম।

সাক্ষাৎকারের শেষে এসে প্রশ্ন আগামী দিনের কথা কিছু বলবেন? এই তো, জীবন চলে যাচ্ছে এভাবেই। মুহূর্ত ধরে বাঁচতে চাই, সুন্দরভাবে। কালকের কথা আজ ভেবে কী লাভ।

আরও পড়ুন