কোটি টাকার এই ৫ ব্যাগে কী আছে
বলা হয়ে থাকে, পুরুষের কাছে যেমন গাড়ি, নারীর কাছে তেমনি হাতব্যাগ। অনেক নারীরই হাতব্যাগ সংগ্রহে রাখার বাতিক আছে। অনেকেই লাক্সারি হাতব্যাগ সম্পর্কে রীতিমতো পড়াশোনা করে নিজেকে ‘আপডেট’ রাখতে পছন্দ করেন। অনলাইনে ঢুকে নিজের অজান্তেই নতুন নতুন হাতব্যাগের সংগ্রহ দেখা যেন তাঁদের নেশা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বের সবচেয়ে দামি ব্যাগ বদলে যায়। দামি ব্যাগের দাম বাড়তে থাকবে। রমি টিসার অফিশিয়াল ওয়েবসাইট অনুসারে দেখে নেওয়া যাক বিশ্বের সবচেয়ে দামি পাঁচ হাতব্যাগ এবং জেনে নেওয়া যাক এগুলোর সম্পর্কে।
পঞ্চম সর্বোচ্চ দামি ব্যাগ: নিলোটিকাস ক্রোকোডাইল হিমালয় বারকিন ব্যাগ
নীল নদের বিশেষ কুমিরের চামড়া থেকে তৈরি এই ব্যাগ। দাম ৩ লাখ ৭৯ হাজার ডলার বা ১০ কোটি ৭২ লাখ টাকারও বেশি! এই চামড়ার স্বাভাবিক রং ধরে রাখার জন্য একটা নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় সুদীর্ঘ সময় ধরে শুকাতে হয়। এই ব্যাগের বাইরের ডিজাইন বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু পর্বতশৃঙ্গ হিমালয়ের ল্যান্ডস্কেপ থেকে অনুপ্রাণিত। তাই কোথাও বাদামি আবার কোথাও সাদা, যেন মেঘ আর বরফের খেলা।
চতুর্থ সর্বোচ্চ দামি ব্যাগ: আরমেজ চেইনড অ্যাঙ্কর ব্যাগ
কিছু ঝুলিয়ে রাখার আঁকড়া বা হুক আকৃতির এই ব্যাগের দাম ১ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার বা ১৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এই ব্যাগ যখন বাজারে আনা হয়, তখন অনেক ফ্যাশন সমালোচকেরা বলেছিলেন, এর ডিজাইনের সঙ্গে নাকি জেলখানার মিল আছে। এটি প্যারিসভিত্তিক লাক্সারি ব্র্যান্ড আরমেজের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দামি ব্যাগ। এই ব্যাগের চেইনে ১ হাজার ১৬০ টুকরা ছোট ছোট হীরা ব্যবহার করা হয়েছে। ডিজাইন করেছেন ৬৭ বছর বয়সী বিশ্বখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার পিঁয়ে আরডি। এ রকম ব্যাগ তৈরি হয়েছে মাত্র ৪টি, যার একটি আবার বিক্রির জন্য নয়।
তৃতীয় সর্বোচ্চ দামি ব্যাগ: আরমেজ বারকিন ব্যাগ
বিশ্বখ্যাত দুই ব্যাগের ব্র্যান্ডের হয়ে এটির নকশা করেছে জাপানি ডিজাইনার জিনজা তানাকা। ব্যাগটির সারা শরীরে ২ হাজার হীরা ব্যবহার করা হয়েছে। মাঝখানে রয়েছে ১৮ ক্যারেটের চকচকে আলো–ছড়ানো একটা হীরা। চাইলে এটি ব্রচ হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে। এটি দিয়ে নেকলেস বা অন্য কোনো গয়নাও বানিয়ে নিতে পারবেন। ব্যাগটির দাম ১ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার বা ১৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দামি ব্যাগ: মুয়াওয়াড ১০০১ নাইটস ডায়মন্ড পার্স
২০১১ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এটিই ছিল বিশ্বের সবচেয়ে দামি ব্যাগ। ব্যাগটির দাম ১ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার বা ১৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। দাম ৩ দশমিক ৮ মিলিয়ন ডলার বা ৪১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। আমিরাতি লাক্সারি গুডস কোম্পানির যে পাঁচ পণ্য দামের কারণে গিনেস বুক অব রেকর্ডসে নাম তুলেছে, তার একটি এই ব্যাগ। হৃদয় আকৃতির এই ব্যাগ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে ১৮ ক্যারেট সোনা, ১০৫টি হলুদ হীরা, ৫৬টি গোলাপি হীরা ও ৪ হাজার ৩৫৬টি বর্ণহীন হীরা। ব্যাগটি তৈরিতে সময় লেগেছে ৮ হাজার ৮০০ ঘণ্টা। এই ব্যাগ মাত্র একটিই তৈরি করা হয়েছে।
বিশ্বের সবচেয়ে দামি ব্যাগ: ডেবি উইন্যাম ব্যাগ
ব্যাগ নিয়ে যাঁরা খোঁজখবর রাখেন, এ ব্যাগ তাঁদের চেনা। ডিম আকৃতির হওয়ায় ডেবি উইন্যাম এগ ব্যাগ নামেও এটি পরিচিত। ডেবি উইন্যাম মূলত একজন ব্রিটিশ কেক আর্টিস্ট, দুবাইয়ের ধনীদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে দামি দামি লাক্সারি বস্তুর ডিজাইন করেন তিনি। ব্যাগটি বানানোর জন্য অত্যন্ত ধনী এক নারী ডেবিকে নিজের সংগ্রহ থেকে ৪০ হাজার ডলারের দুটি কানের দুল, ৮ হাজার ছোট ছোট হীরার টুকরা, ৩টি পিঙ্ক ডায়মন্ড, ২টি সাদা ডায়মন্ড, প্লাটিনাম ও ২৪ ক্যারেট সোনা দেন। ইমু পাখির নীল ডিম থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ব্যাগটির ডিজাইন করা হয়েছে। ভেতরের দিকটা তৈরি হয়েছে আরমেজের সিল্কের স্কার্ফ দিয়ে। এসব উপকরণের দাম, ডিজাইন খরচ, মজুরি—সব মিলিয়ে ব্যাগটির দাম ধরা হয় ৬ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার বা ৭৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা। ২০১৯ সাল থেকে এটিই বিশ্বের সবচেয়ে দামি ব্যাগ।