এবার শিশুদের ঈদপোশাকে কী থাকছে
শৈশবে ঈদের আয়োজনটা রঙিন হয়েই ধরা দেয়। এবারের ঈদেও দেশের ফ্যাশন হাউসগুলো বর্ণিল পোশাক এনেছে শিশুদের জন্য। গ্রীষ্মের উজ্জ্বল দিনের কথা মাথায় রেখে আরামদায়ক পোশাকের নকশা করেছেন ডিজাইনাররা। মেঘমেদুর আকাশ থেকে বৃষ্টিও নামছে যখন-তখন। শিশুদের ঈদপোশাকের কাপড় বাছাইয়ের সময় সেই ভাবনাও ভেবেছেন তাঁরা।
প্রাণবন্ত রং আর আধুনিক নকশার এসব পোশাক মিলছে দেশের বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসে। তিন মাস বয়সী শিশুর জন্যও রয়েছে আরামদায়ক ঈদ আয়োজন। প্রকৃতির নিয়মে সে এখনো ছুটে বেড়ানোর বয়সে পৌঁছায়নি। তাতে কী! ঈদের আনন্দ ছুঁয়ে যাক তাকেও। নানা রকম কাটের পোশাকগুলোতে করা হয়েছে হালকা নকশার কারুকাজ।
বাহারি পোশাক বাহারি রং
লা রিভের সহকারী মহাব্যবস্থাপক আফরিনা হাবিব জানালেন, তাঁদের এবারের ঈদ আয়োজন করা হয়েছে ‘ডিভোশন’ থিমে। স্কাফড লেমন আর ওয়াশড ব্ল্যাক রঙের বিভিন্ন অরগানিক শেড মিলবে আয়োজনে।
আর্মি গ্রিন, হলুদ, শর্ষে হলুদ, লাল, টেরাকোটা, বার্ন অরেঞ্জ, ল্যাভেন্ডার, কোকো ব্রাউন, চকলেট ব্রাউনের মতো বহু রং ফুটে উঠেছে তাঁদের পোশাকে। লতা-পাতা-ফুল, ভিন্টেজ ফুল, শুকনা পাতা-প্রকৃতি থেকে অনুপ্রেরণা নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন পোশাকের নকশায়। আছে জ্যামিতিক মোটিফও।
সুতি, ভিসকস, মসলিন আর শিফন কাপড় ব্যবহার করা হয়েছে পোশাকে। এমব্রয়ডারি, জারদৌসি আর কারচুপির হালকা কাজ করা হয়েছে। মেয়েশিশুদের জন্য বিভিন্ন ধরনের টিউনিক এনেছে লা রিভ। কোনোটি খাটো, কোনোটি সেমি লং কিংবা লম্বা টিউনিক। ফ্রক, সালোয়ার-কামিজ, স্কার্ট-টপ, ঘাগড়া চোলিও আছে। ছেলেশিশুদের জন্য থাকছে পাঞ্জাবি, পোলো শার্ট, টি-শার্ট। আরামদায়ক বটমও আছে সবার জন্য। থাকছে মা কিংবা বাবার সঙ্গে মিলিয়ে শিশুর পোশাক বাছাইয়ের সুযোগও।
ভিন্নধারার কাট ও নকশা
মেয়েশিশুদের জন্য আরামদায়ক কো-অর্ড এনেছে ক্লাবহাউস। প্রতিষ্ঠানটির সহকারী ব্যবস্থাপক ও ফ্যাশন ডিজাইনার ইফতেখারুল ইসলাম বলছিলেন তাঁদের বৈচিত্র্যময় কো-অর্ড সংগ্রহ নিয়ে। কোনোটি খাটো, কোনোটি একটু লম্বা; কোনোটির কাট আবার করা হয়েছে কুর্তার ধাঁচে। উৎসবের আমেজে সারারা ধাঁচের পোশাকও পছন্দ করে শিশুরা। আছে সালোয়ার–কামিজ। আকাশি, সবুজ, সবুজাভ হলুদ, শর্ষে হলুদ, উজ্জ্বল গোলাপির মতো রং বেছে নেওয়া হয়েছে শিশুদের পোশাকের জন্য।
সুতি ছাড়াও আছে আরামদায়ক জর্জেটের পোশাক। পিক্সেলাইজেশন করে পোশাকের নকশায় আনা হয়েছে ভিন্নতা। ব্যবহার করা হয়েছে ফ্লোরাল মোটিফ। ডিজিটাল প্রিন্ট, স্ক্রিন প্রিন্ট, জারদৌসি আর কারচুপির কাজ করা হয়েছে। ছেলেশিশুদের জন্য পাঞ্জাবি, পোলো শার্ট, টি-শার্ট করা হয়েছে। তিন থেকে ছয় মাস বয়সীদের জন্যও আছে কাবলি সেট আর পাঞ্জাবি। এই বয়সী মেয়েদের জন্য আছে ছোট্ট গাউন।
আছে ফিউশনও
ঐতিহ্য ও আধুনিকতার সমন্বয় আনা হয়েছে টুয়েলভ ক্লদিংয়ের পোশাকগুলোতে। তাদের পোশাকেও প্রাধান্য পেয়েছে আরাম। এবারের ঈদে ‘মুঘল ম্যাজিক’ থিম নিয়ে কাজ করেছে তারা। মুঘল মোটিফ এবং ফ্লোরাল মোটিফ ব্যবহার করা হয়েছে মেয়েশিশুদের পোশাকে।
ফ্রক, ফ্লোয়ি ফ্রক, টু-পিস সেট, সালোয়ার–কামিজ ধাঁচের পোশাক—সবই আছে। মুঘল ধাঁচের অনুপ্রেরণায় করা নকশা আছে ছেলেশিশুদের পাঞ্জাবিতেও। সুতি, ভিসকস, মসলিন, স্লাবসহ আরও কিছু কাপড় ব্যবহার করা হয়েছে এসব পোশাকে। বিশেষ ফেব্রিকস ফিনিশিং দেওয়া পোশাকগুলোতে ফুটে উঠেছে উৎসবের আলাদা আমেজ। আনন্দের সঙ্গেই ঈদে পোশাকগুলো পরতে পারবে শিশুরা।