সব পোশাকের সঙ্গে যেভাবে পরবেন কেডস

লুকে ফিউশন আনতে গাউনের সঙ্গে কেডস পরছেন অনেকেইমডেল: মিথিলা, ছবি: নকশা

ফ্যাশনের ভাষায় এখন একটা কথা বেশ ট্রেন্ডি। সেটা হলো ‘লেস ইজ মোর’, অর্থাৎ কমই বেশি। অনাড়ম্বর ফ্যাশনের যুগে তাই স্টাইল স্টেটমেন্ট তৈরি করতে নিজের স্বাচ্ছন্দ্য আর আরামকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন ফ্যাশন–সচেতন মানুষেরা। এমন কিছু পরা যাবে না, যেখানে আরাম নষ্ট হয়। এটাই একুশ শতকের ফ্যাশনের মূলমন্ত্র। সেদিক থেকে পোশাকের সঙ্গে অন্যতম ফ্যাশন অনুষঙ্গ হিসেবে জুতার কথা আসবেই। স্টাইলের সঙ্গে ষোলো আনা আরাম দেয় কেডস।

শাড়ির সঙ্গেও মানিয়ে যাবে কেডস
মডেল: মিথিলা, ছবি: নকশা

পঞ্চাশ থেকে ষাটের দশকজুড়ে অড্রে হেপবার্ন, মেরিলিন মনরোর মতো বিখ্যাত তারকারা কেডসকেই করে নিয়েছিলেন ফ্যাশনের সঙ্গী। তবে কেডস তখন পরা হতো শার্ট, প্যান্ট, টপ বা স্কার্টের মতো নির্দিষ্ট কিছু পোশাকের সঙ্গে। বেশ কয়েক বছর আগেও এই চল ছিল। তবে এখনকার চিত্রটা একদম উল্টো। কেডস পরা হয় সব ধরনের পোশাকের সঙ্গেই। কেউ আরামের জন্য আকর্ষণীয় হিলকে বিদায় জানিয়ে কেডস বেছে নিচ্ছেন বিয়ের পোশাকের সঙ্গে। কেউ কেউ পার্টি বা অনুষ্ঠানে স্যুট-প্যান্টের সঙ্গেও কেডস পরছেন। আবার কেউ লুকে ফিউশন আনতে প্রাধান্য দিচ্ছেন এই অনুষঙ্গকে।

তবে পোশাকের সঙ্গে জুতার জুটিকে আরও মজবুত করতে মানানসই হবে, এমন কেডসই বেছে নিতে হবে। যেমন এ সময়ের ট্রেন্ডে বিশেষ জায়গা দখল করে আছে সাদা কেডস। ফ্যাশনিস্তা তরুণ-তরুণীদের মধ্যে যেকোনো পোশাকের সঙ্গে এই রঙের জুতা পরার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। সময় বাঁচাতে জিনসের সঙ্গে একটা সাদা টি-শার্ট বেছে নিতে পারেন। এর সঙ্গে স্তর করা নেকলেস আর সাদা রঙের কেডস। ব্যাস, হয়ে গেল স্টাইল। তবে শুধু নীল রঙের জিনসই নয়, কালোও কিন্তু বেশ জনপ্রিয়। এর সঙ্গে মিলিয়ে অতিরিক্ত বড় আকারের টি-শার্ট বা সোয়েট শার্টও পরা যেতে পারে। যেকোনো ফ্লেয়ারড প্যান্টের সঙ্গে ক্রপ-টপ দিয়েও পরতে পারেন এই জুতা। পরা যাবে সালোয়ার–কামিজের সঙ্গেও।

পোশাকের সঙ্গে জুতার জুটিকে মজবুত করতে বেছে নিতে হবে সঠিক কেডস
ছবি: নকশা

এ ছাড়া দাওয়াত বা পার্টিতে জমকালো গাউনের সঙ্গেও স্টাইলে ভিন্নতা যোগ করতে পারে কেডস। সে ক্ষেত্রে বেছে নিতে পারেন হিল দেওয়া স্টাইলের কেডস। আবার বাড়তি নকশা হিসেবে কেডসের সঙ্গে থাকতে পারে আকর্ষণীয় ফিতা, গ্লিটার কিংবা হাতে আঁকা বাহারি মোটিফ। শাড়ির সঙ্গেও কেডসের ফ্যাশন তুঙ্গে। শাড়ির ড্রেপিং আর স্টাইলে এখন যুগান্তকারী পরিবর্তন এসেছে। পরা যায় নানাভাবে। তবে একটু বেশি নজর কাড়তে একরঙা বা মনোক্রোম শাড়ির সঙ্গে উজ্জ্বল রঙের ব্লাউজ আর পায়ে পরে ফেলুন ক্ল্যাসিক সাদা কেডস। অ্যাঙ্কেল লেংথ জিনসের সঙ্গেও ড্রেপ করে পরা যায় শাড়ি, সঙ্গে পায়ে ভিন্ন আবেদন যোগ করে কেডস।

ফ্যাশনে এখন বোহেমিয়ান বা বোহো স্টাইলও চলছে সমানতালে। অ্যাসিমেট্রিক কাটের জামা বা লেসের তৈরি মিডি ড্রেসের সঙ্গে কোমরে বেল্ট আর পায়ে কেডস এই লুক তৈরি করবে। সে ক্ষেত্রে সোনালি, রুপালি বা কপার রঙের কেডসগুলো বেশ ট্রেন্ডি। এ ছাড়া ফুলেল ম্যাক্সি ড্রেসের ওপর স্তর করে পরতে পারেন লেদার জ্যাকেট, পায়ে এমব্রয়ডারি করা বা ফুলেল নকশার সাদা কেডস, যা ভিনটেজ লুকের জন্য আদর্শ। ভ্রমণের পোশাকে এই স্টাইল বেশ মানানসই হবে।

কেডস মানাবে লেহেঙ্গার সঙ্গেও, পাশাপাশি আরামও দেবে সারাদিনের কনে রূপে
ছবি: নকশা

পোশাক, সাজ আর অনুষঙ্গ—এই তিন মিলে তৈরি হয় লুক। যেকোনো পোশাকের সঙ্গেই বেছে নেওয়া যেতে পারে কেডস। তাই কেডসের জন্য আপনার সাজের কোনো পরিবর্তন না করলেও চলবে। খুব সাদামাটা থেকে জমকালো—যেকোনো সাজের সঙ্গেই বহন করা যাবে এই জুতা। আর এটাই আপনার সাজে নিয়ে আসবে ভিন্নতা। এখন বাজারে আরামদায়ক উপকরণের তৈরি দারুণ সব প্রিন্টের কেডস পাওয়া যায়। সেখান থেকে বেছে নিতে হবে আপনারটি। ফ্যাশনের ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাসই হলো শেষ কথা। সেটা ধারণ করতে পারলে যেকোনো স্টাইলই জমে যায়।