বছরের সবচেয়ে আলোচিত ফ্যাশন শোয়ের দ্বিতীয় দিনে যা ছিল

১৭ মার্চ ফ্যাশন শোয়ের দ্বিতীয় দিনে নতুন-পুরোনো ১২ জন (৮ বাংলাদেশি ও ৪ ভারতীয়) ডিজাইনার তাঁদের সংগ্রহ তুলে ধরেন।

ডিজাইনার ফাইজা আহমেদ মাটিরঙা কাপড়ের ওপর ক্যালিগ্রাফির ব্যবহার করেছেনছবি: সাইফুল ইসলাম

ফ্যাশন ডিজাইন কাউন্সিল অব বাংলাদেশের আয়োজনে ১৬ ও ১৭ মার্চ রাজধানীর আলোকি কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বাংলাদেশ ফ্যাশন সপ্তাহ ২০২৩। বছরের সবচেয়ে আলোচিত এই ফ্যাশন শোতে এফডিসিবির ১৮ সদস্য ডিজাইনার ও ৬ ভারতীয় ডিজাইনার তাঁদের সৃষ্টিকর্ম প্রদর্শন করেন। তুলে ধরেন নিজ নিজ দেশীয় ঐতিহ্য। ১৭ মার্চ ফ্যাশন শোয়ের দ্বিতীয় দিনে নতুন-পুরোনো ১২ জন (৮ বাংলাদেশি ও ৪ ভারতীয়) ডিজাইনার তাঁদের সংগ্রহ তুলে ধরেন। আয়োজনে কী ছিল, চলুন চট করে জেনে নেওয়া যাক।

ডিজাইনার মাহিন খান, শৈবাল সাহা, চন্দনা দেওয়ান, কুহূ প্লামন্ডন, সাদিয়া রূপা, লিপি খন্দকার, শাহরুখ আমিন, নওশীন খায়ের, তেনজিং চাকমা, রিফাত রহমান, আফসানা ফেরদৌসি, তাসফিয়া আহমেদ, রুখসানা এসরার, তানহা শেখ, সাদিয়া রুপা, ইমাম হাসান, কামরুল হাসান এবং মাধুরী সঞ্চিতা। এ ছাড়া ভারত থেকে সৌমিত্র মণ্ডল, রিমি নায়াক, পারমিতা ব্যানার্জী, গুঞ্জন জৈন, ইবালারিহুন পিওরয় মাল্লাই ও চার্লি ম্যাথলেনা।

মাহিন খান

মঞ্চে প্রথমেই তুলে ধরা হয় ডিজাইনার মাহিন খানের পোশাক। তাঁর সংগ্রহে এবার হাতের কাজের ওপর জোর দিয়েছেন তিনি। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের হাতের কাজের বৈচিত্র্যকে ঠাঁই দিয়েছেন পোশাকের ওপরে।

ডিজাইনার মাহিন খান মডেলেদের সঙ্গে
ছবি: নকশা

শাহরুখ আমিন

শাহরুখ আমিনের সংগ্রহে প্রাধান্য পেয়েছে সাদা ও কালো শাড়ি।

পারমিতা ব্যানার্জি

ভারতের পারমিতা ব্যানার্জির সংগ্রহে ছিল হাতে বোনা জামদানি।

শাহরুখ আমিন টিংকুর পোশাকে ছিল অ্যাপ্লিকের ফুলের অভিজাত নকশা
ছবি: নকশা

তেনজিং চাকমা

ষড়্ঋতু থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ডিজাইনার তেনজিং চাকমা পোশাকের ওপর রঙের মেলা বসিয়ে দিয়েছিলেন। বেগুনি রঙের সঙ্গে কমলা, সবুজ, ম্যাজেন্টা, হলুদ রঙের পোশাকগুলো দেখেই বোঝা যাচ্ছিল রং নিয়ে বেশ সাহসী কাজ করেছেন তিনি। এক পোশাক থেকে আরেক পোশাকে ঘুরে বেরিয়েছে ফুল, পাতার ছাপা নকশা, স্ট্রাইপ, মিডি ড্রেস, স্কার্ট, খাটো পোশাক, শাড়ি সবকিছুই ছিল।

ডিজাইনার তেনজিং চাকমার পোশাকে ছিল রঙিন রঙের ব্যবহার
ছবি: নকশা

রুকসানা ইসরার

দ্বিতীয় দিনের পঞ্চম প্রদর্শনীতে রুকসানা ইসরারের মূল সম্বল প্রকৃতি। কক্সবাজার সমুদ্রতটের দৃশ্য থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে সুঁই-সুতা দিয়ে পোশাকে ফুটিয়ে তুলেছেন আছড়ে পড়া ঢেউ। প্রাকৃতিক রং দিয়ে নিজ হাতে এঁকেছেন সূর্য।

ডিজাইনার লিপি খন্দকারের পোশাকে
ছবি: নকশা

লিপি খন্দকার

বেজ মুড সংগ্রহের পোশাক তৈরি করতে গিয়ে ঐতিহ্যবাহী ও দেশীয় কাপড়ই ব্যবহার করেছেন লিপি খন্দকার। সিল্কের ওপর হাতে সেলাই ও জ্যামিতিক মোটিফ ব্যবহার করেছেন। মূলত হাতে সেলাইয়ের কারণেই জ্যামিতিক মোটিফগুলো যেন আরও দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে।

হাঁটু পর্যন্ত পোশাক এবার গরমে জনপ্রিয় হবে
ছবি: নকশা

মাধুরি সঞ্চিতা

পোশাকেও যে বসন্তের আমেজ ফুটিয়ে তোলা যায়, তাই যেন দেখালেন ভারতের মাধুরি সঞ্চিতা। তাঁর পোশাকে বসন্তের যে বিমূর্ত প্রতিকৃতি ফুটে উঠেছে, তা শব্দে প্রকাশ করা কিছুটা মুশকিলই বটে।

চার্লি ম্যাথলেনা

আমাদের চারপাশে প্রকৃতি রক্ষার যে অনুষঙ্গগুলো আছে, প্রদর্শনীতে সেগুলোকেই টেনে আনলেন ভারতের চার্লি ম্যাথলেনা। নানা মোটিফ ও সূক্ষ্ম হাতের বুননে মিজোরামের পর্বতকে দারুণভাবে ফুটিয়ে তুললেন।

ফুলের ওপর এবার কাজ করেছেন অনেকেই
ছবি: নকশা

কামরুল হাসান রিয়াদ

ফুল, পাখি, চাঁদ ও বিশেষত গোলাপ—এ কয়েকটি উপাদানই ব্যবহার করেছেন রিয়াদ। তবে দেশীয় পোশাক ও হাতে সেলাই করে তাঁর কাপড়ের সব কৃত্রিম ভাব দূর করে ‘বিউটি অব গ্র্যাভিটি’ নামের প্রতি সুবিচারই করলেন যেন।

ফাইজা আহমেদ

ফাইজা আহমেদ তাঁর সংগ্রহে উপস্থাপন করলেন দেশীয় কাপড়ে মাটিরঙা ডাই। ক্যালিগ্রাফির ব্যবহার করেছেন পোশাকে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ও আমার দেশের মাটি’ লাইনটি জুড়ে দিলেন পোশাকের ওপরে।

সাজ অনুষঙ্গে ছিল ভিন্নতা
ছবি: নকশা

সৌমিতা মন্ডল

ভারতের সৌমিতা মন্ডল তাঁর সংগ্রহের নাম দিয়েছিলেন ‘মুসাফির’। হাল আমলের কোনো মুসাফির যখন বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়াবেন, তখন গাঢ় বাদামি, সবুজ ও সাদাটে ভূমি দৃশ্যই তাঁদের অনুপ্রাণিত করবে। সেটিই ফুটিয়ে তুললেন সৌমিতা।

শৈবাল সাহার পোশাকে
ছবি: নকশা

শৈবাল সাহা

অনুষ্ঠানের শেষ উপস্থাপনায় শৈবাল সাহা নিয়ে এলেন ‘ব্যাক টু মাদার ন্যাচার’। হাতে বোনা খাদি কাপড়ে শিবোরি, খয়ের ও হরীতকী থেকে বানানো রং ব্যবহার করে তিনি পুরুষদের পোশাক করেছেন।