পূজার সাজে হালকা আমেজ

পূজা মানেই ধূপ-ধুনোর গন্ধ, ঢাকের বোল, নাড়ু-পায়েস আর মণ্ডপে মণ্ডপে প্রতিমা দেখার ভিড়। এ সময় যেহেতু ঘোরাঘুরিটা অনেক থাকে আর বাড়ির কাজও করতে হয় বেশি, তাই হালকা সাজ বেছে নিতে পারেন। আর করোনা–পরবর্তী সময়ে বিশ্বজুড়েই চলছে হালকা সাজের চল। শরতের শুভ্র প্রকৃতির সঙ্গে মিলিয়ে এ ধরনের সাজে আপনাকে স্নিগ্ধও লাগবে।

পূজার সাজটা মূলত ষষ্ঠী থেকে শুরু হয়ে দশমীতে শেষ হয়
মডেল: নাজিফা টুসি, ছবি: প্রথম আলো

‘পূজার সাজটা মূলত ষষ্ঠী থেকে শুরু হয়ে দশমীতে শেষ হয়। বাঙালি হিন্দুধর্মাবলম্বীদের কাছে দুর্গাপূজা বড় উৎসব, তাই পাঁচটি দিনই ভালোভাবে উদ্‌যাপন করতে চান তাঁরা। আবহাওয়ায় যেহেতু কিছুটা গরমের রেশ রয়ে গেছে, তাই ভারী মেকআপে ঘেমে-নেয়ে একশা না হয়ে হালকাভাবেই সাজুন। ষষ্ঠী থেকে সপ্তমীর সাজটা একটু না হয় হালকাই হলো। আর নবমী ও দশমীর দিন সামান্য ভারী,’ বলছিলেন, বিন্দিয়া এক্সক্লুসিভ বিউটি কেয়ারের কর্ণধার ও রূপবিশেষজ্ঞ শারমিন কচি।

পূজার সাজে কয়েকটি বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। কোথায় যাচ্ছি, পোশাকটা কী রকম পরছি এবং কোন কাজগুলো করছি? এগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। সে অনুযায়ী সাজপোশাক হলেই ভালো।

পূজার সাজে শাড়ি একটি অন্যতম অনুষঙ্গ। তবে বেড়াতে যাওয়ার বা ঘরোয়া কাজগুলোর জন্য অনেকেরই পছন্দ ওয়ান পিস বা হালকা কাজের কুর্তি বা টপস। সঙ্গে থাকে জিনস বা পালাজ্জো। আর হালকা সাজ কিন্তু যেকোনো পোশাকের সঙ্গেই অনায়াসে মানিয়ে যায়।

পূজায় বেড়াতে যাওয়ার বা ঘরোয়া কাজগুলোর জন্য অনেকেরই পছন্দ ওয়ান পিস বা হালকা কাজের কুর্তি বা টপস
ছবি: প্রথম আলো

হালকা সাজে প্রথমে মুখ ধুয়ে ময়েশ্চার ব্যবহার করতে পারেন। এরপর প্রাইমার লাগিয়ে ফেসপাউডার ব্যবহার করুন। আর মেকআপ সামান্য ভারী করতে চাইলে কমপ্যাক্ট ব্যবহার করা যায়। চোখ সাজাতে পারেন হালকা বাদামি, সোনালি, গোলাপি ও ব্রোঞ্জ রঙের শ্যাডো দিয়ে। এরপর চোখের নিচে কাজল দিয়ে ঘন করে মাশকারা লাগান। কেউ চাইলে আইলাইনারও ব্যবহার করতে পারেন, জানান রূপবিশেষজ্ঞ শারমিন কচি।

সাজ পরিপূর্ণ করতে ব্লাশন তো দিতেই হবে। তবে সে ক্ষেত্রে হালকা বাদামি বা হালকা গোলাপি রং বেছে নিন। চিক বোন হাইলাইট করতে ভুলবেন না। গাঢ় ও হালকা বাদামি রং মিশিয়ে লিপস্টিক দিতে পারেন। আউটলাইনটা গাঢ় হলো আর ভেতরে ব্যবহার করলেন হালকা বাদামি রং। এ ছাড়া হালকা গোলাপি, পিচ ইত্যাদি রঙেও স্নিগ্ধ লাগবে।

নবমী ও দশমীর সাজ হালকার ভেতরে গর্জিয়াস করা যেতে পারে
ছবি: প্রথম আলো

নবমী ও দশমীর সাজ হালকার ভেতরে গর্জিয়াস করা যেতে পারে। আর সহজের ভেতরে আভিজাত্য, এমন কথা তো প্রচলিতই রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বেস মেকআপের বেলায় ময়েশ্চার ও প্রাইমার লাগানোর পর ফাউন্ডেশন বা বিবি বা সিসি ক্রিম মাখুন। ফাউন্ডেশনকে এমনভাবে মাখতে হবে, যেন ত্বকে মিশে যায়। এরপর একে ভালোভাবে সেট করার জন্য লুজ পাউডার ব্যবহার করুন। কন্টুর দিয়ে চিক বোন, থুতনি ও তার পাশের অংশ হাইলাইট করে নিন। চোখে হালকা ব্রোঞ্জ বা সোনালি রং দিন। চাইলে এর ওপর চিকন করে গ্লিটারও টানতে পারেন। এ ক্ষেত্রে ব্লাশনের বেলায় টিন্ট রং ব্যবহার করা যেতে পারে।

টপস, কুর্তি বা ওয়ান পিস পরলে চুল সামনে টুইস্ট করে পেছনে পনিটেইল করতে পারেন
ছবি: প্রথম আলো

টপস, কুর্তি বা ওয়ান পিস পরলে চুল সামনে টুইস্ট করে পেছনে পনিটেইল করতে পারেন। আবার সামনের অংশে টুইস্ট ও হালকা বেণি করে পেছনের অংশকে ছেড়ে রাখা যায়। চুল ছোট হলে স্পাইরাল বা ওয়েভি করতে পারেন। সঙ্গে হালকা সাজ তো রয়েছেই! কানে পরলেন ছোট দুল, গলায় রইল চিকন চেইন ও লকেট। হাতে থাকল ব্রেসলেট বা হাতঘড়ি।

শাড়ির সঙ্গে হাতখোঁপা কিন্তু বেশ মানায়। তবে সঙ্গে রাখা চাই ফুল। চুল সামনের দিকে ফুলিয়ে একটু কার্ল করেও খোঁপা করা যেতে পারে। দশমীর দিনের সাজটা একটু ব্যতিক্রম হলেই ভালো। এদিন সিঁথিতে সিঁদুর বড় করে দিন। সঙ্গে থাকুক বড় লাল টিপ। লিপস্টিকের ক্ষেত্রে হালকা লাল রং কিন্তু রাখাই যায়। পাশাপাশি অন্যান্য হালকা রং ব্যবহার করতে পারেন। মূলত, পূজার দিনগুলোতে এমনভাবে সাজুন, যাতে আপনাকে স্নিগ্ধ লাগে এবং চোখও আরাম পায়। আর করোনার প্রকোপ যেহেতু আবারও বাড়ছে, তাই মাস্ক পরতে ভুলবেন না। এমনই পরামর্শ দিলেন রূপবিশেষজ্ঞ শারমিন কচি।