এই নারী মডেলরা সবাই অ্যাসিড সন্ত্রাসের শিকার

আমেন হাদেম ইরানি ফ্যাশন ডিজাইনার। তিনি তাঁর ফ্যাশন হাউসে শুধু এমন সব নারীদের চাকরি দেন, যাঁরা ভয়াবহ অগ্নিসহিংসতার শিকার। তাঁর মডেলরাও সবাই অ্যাসিডদগ্ধ।

আমেন হাদেম ও এসিড সন্ত্রাসের শিকার হওয়া নারীরা
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

ফ্যাশন ডিজাইনিংকে পেশা হিসেবে নেওয়ার আগে সাংবাদিকতা করতেন আমেন। সেই সময় ইরানের একাধিক অ্যাসিড সহিংসতার শিকার হওয়া নারীর জীবন নিয়ে প্রতিবেদন করেন। তিনি বুঝতে পারেন যে দগ্ধ নারীদের নতুন করে জীবন শুরু করা ও জীবন চালিয়ে নেওয়া কত বড় চ্যালেঞ্জ। প্রাথমিকভাবে সাংবাদিকতা করতে করতেই তিনি এই নারীদের পুনর্বাসনে সহায়তা করেন। এরপর আমেন সাংবাদিকতা পেশা বদলে ফ্যাশন ডিজাইনিং নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। নিজের ক্লোদিং লাইন খোলেন। আর সহিংসতার শিকার নারীদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে তাঁর কোম্পানিতে চাকরি দেন।

একজন এসিড সন্ত্রাসের শিকার মডেলকে ফটোশুটের জন্য তৈরি করছেন আমেন
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

আমেনের মডেলদের নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে টিআরটি ওয়ার্ল্ড নিউজ। তাঁদেরই একজন মাসুম। মাসুম শব্দের অর্থ নিষ্পাপ। ১২ বছর আগে মাসুম তাঁর প্রাক্তন শ্বশুরের হাতে অ্যাসিডদগ্ধ হন। কেননা  ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়া স্বামীর সঙ্গে সব মিটমাট করে নিয়ে পুনরায় সংসার শুরু করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন মাসুম। মাসুম বলেন, ‘আমরা এমন একটা সমাজে বাস করি, যেখানে নারীর মুখের সৌন্দর্যই সব। এর বাইরে নারীর বিশেষ মূল্যায়ন নেই। সেটা যখন বিভৎসভাবে শেষ হয় যায়, এরপর নতুন করে সমাজের মুখোমুখি হওয়া প্রায় অসম্ভব একটা ব্যাপার। আর আমরা সেটাই করেছি।’

মাসুম
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

চার বছর আগে লায়লা তাঁর অফিসের সামনে তাঁর ছোট বোনের প্রেমিকের হাতে অ্যাসিড সন্ত্রাসের শিকার হন। তাঁর অপরাধ বোনকে ওই ছেলের থেকে দূরে থাকতে বলেছিলেন তিনি। আর আতিফি মানসিকভাবে এতটাই ভেঙে পড়েছেন যে তাঁর সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো নিয়ে কারও সঙ্গে কথাও বলেন না।

লায়লা
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

ইরানের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, প্রতিবছর ইরানে অ্যাসিড সন্ত্রাসের শিকার হয় ৬০ থেকে ৭০ নারী। ২০১৯ সালে ইরানে অ্যাসিড সন্ত্রাসীদের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আইন পাস হয়।

আতিফি
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে