ঈদের আনন্দে

শিশুদের জন্য খাটো–লম্বা দুধরনের পোশাকই চলছে এবার। ছেলেদের থ্রিকোয়ার্টার প্যান্টও চলছে।
শিশুদের জন্য খাটো–লম্বা দুধরনের পোশাকই চলছে এবার। ছেলেদের থ্রিকোয়ার্টার প্যান্টও চলছে।

ঈদের খুশি অপরিমেয়। আনন্দের এই অনুভূতি উপভোগ করে শিশুরাও। নতুন জামা নিয়ে বন্ধুদের মাঝে খানিক রহস্য তৈরি করার মধ্যে থাকে এক অকৃত্রিম আনন্দ। নেই কোনো দুশ্চিন্তা, শুধু মজা আর মজা। বাবার হাত ধরে নামাজে যাওয়া, সবাই মিলে বেড়াতে যাওয়া আর মজার মজার খাবার খাওয়া; এই না হলে ঈদ। পাশাপাশি থাকা চাই নতুন জামা। আজকাল শিশুরা বেশ কম বয়স থেকেই নিজের পছন্দটা প্রকাশ করে। তাই পোশাক কেনার সময় আবহাওয়া ও শিশুর আরামকে বিবেচনায় রাখা, ওদের পছন্দ-অপছন্দ সব বিষয়ই খেয়াল রাখেন মা-বাবারা।


পোশাক হোক স্বস্তির
আড়ংয়ের গণসংযোগ ব্যবস্থাপনা ও যোগাযোগ কর্মকর্তা রুদমিলা সিদ্দীকি জানালেন, এবারের ঈদে শিশুদের পোশাকে মসলার বাজার, মাটির তৈজসপত্র, ফুলেল ফিউশনধর্মী নকশা আর প্রজাপতির মোটিফ ব্যবহার করা হয়েছে। মসলার বাজার মোটিফে আনন্দময় উজ্জ্বল রঙের সমন্বয় রয়েছে। দেশীয় মৃৎশিল্পে যেসব আকৃতি বা মোটিফ থাকে, সেগুলোও পাওয়া যাবে। গোলাপ, জবা ও অন্যান্য ফুলকে মোটিফ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ফুলের নকশা মোটিফে। প্রজাপতির মোটিফে শুধু প্রজাপতির পাখা কিংবা পুরো প্রজাপতিটাকেই পাবেন।

রুদমিলা সিদ্দীকি আরও বলেন, গরমে শিশুকে স্বস্তি দিতে সুতি, ভিসকস ও ভয়েল কাপড় ব্যবহার করা হয়েছে পোশাকে। কিছু কাপড়ে সিল্কের ব্যবহার আছে, সেগুলোও খুব আরামদায়ক।

শৈশব ফ্যাশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপক তুষার মাহমুদ জানালেন, শিশুদের ঈদের পোশাকগুলো সুতি কাপড়েই এবার তৈরি করেছেন তাঁরা। পোশাকের রঙে এনেছেন বৈচিত্র্য। শেরওয়ানি সেট, কাবলি সেট হোক, আর টাই, বো-টাই পরে ‘ফুলবাবু’ সাজার পোশাকই হোক, শিশুর স্বস্তির দিকটাই মাথায় রেখেছেন তাঁরা। মেয়েদের লেহেঙ্গা, পার্টি ফ্রক, লম্বা ও খাটো স্কার্টের বেলায়ও তাই।

বাজার ঘুরে দেখা গেল, শিশুদের জন্য করা নকশাগুলো বেশ মজার। ফুল, পাতা, মোরগ, পাখি, ফড়িং, মাছ, হাতি, বাদুড়, ঘোড়া, মৌমাছি, বিড়াল বা মজার যেকোনো প্রাণীকে খুঁজে পাওয়া যায় শিশুদের পোশাকে। গিটার, সাইকেল, গাড়ি, শঙ্খ, এমনকি ব্যাটম্যানও আছে। চেক বা ডোরাকাটা নকশাও পাবেন।

আরামদায়ক শিশুর পোশাক। মডেল: আরিসা ও তাকদিস, পোশাক: ইনফিনিটি
আরামদায়ক শিশুর পোশাক। মডেল: আরিসা ও তাকদিস, পোশাক: ইনফিনিটি

মাধ্যম ও ডিজাইন
শিশুদের পোশাকের নকশা বেশ বৈচিত্র্যময়। মেশিন এমব্রয়ডারি, স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক প্রিন্ট, টাইডাই, বাটিক, মোম বাটিক, প্যাচওয়ার্ক, অ্যাপ্লিক, হাতের কাজ ও হাতে আঁকার কাজ আছে। নানাভাবে কুচি ও ঝালরের ব্যবহার করা হয়েছে। কিছু পোশাকে আছে নেটের ব্যবহার। হাতাকাটা, ছোট হাতার ব্যবহার বেশি। মেয়েদের জন্য আছে টপ-স্কার্ট, টপ-প্যান্ট, ফ্রক, ফতুয়া, ঘাগড়া চলি, কুর্তা, তৈরি করা শাড়ি। আলাদাভাবে টপ, স্কার্ট, প্যান্ট ও পালাজ্জো পাওয়া যায়। থ্রি-পিস বা টু-পিসও বেছে নিতে পারেন। ছেলেদের জন্য আছে শার্ট, প্যান্ট, থ্রি-কোয়ার্টার প্যান্ট, পাঞ্জাবি-পায়জামা, কটি, ফতুয়া ও টুপি।

মেয়েদের পোশাকের নানা অংশে আছে ফিতার ব্যবহার। কোনোটার ফিতার সঙ্গে আছে চুমকি দেওয়া ঝুমকো জাতীয় ঝালর। কোনো পোশাকের সামনে আবার গাউনের মতো বাড়তি একটা স্তর, পাশে ফিতা দিয়ে বাঁধা। প্যান্টের নিচের দিকেও আছে ডিজাইন। নিট কাপড়ের প্যান্ট যেমন আছে, তেমনি আছে লিনেনের প্যান্ট। লিনেনের প্যান্টে আবার হয়তো জর্জেটের বাড়তি একটা স্তর।