পুরোনো জামাকাপড় ‘আপসাইকেল’ করে সন্তানদের পরাচ্ছেন জোলি

ভক্তরা যে কত দিন অ্যাঞ্জেলিনা জোলিকে রেড কার্পেটে ‘চোখে হারিয়েছে’, তার হিসাব নেই। শেষবার কবে কোন অনুষ্ঠানের রেড কার্পেটে পা পড়েছে এই হলিউড তারকা ও পরিচালকের, সেই স্মৃতিও আবছা হতে চলেছে। দীর্ঘ বিরতি ভেঙে দেখা দিলেন জোলি, ১৮ অক্টোবর ‘ইটারনালস’ সিনেমার প্রিমিয়ারে। সঙ্গে তাঁর পাঁচ সন্তান।

পাঁচ সন্তান নিয়ে সিনেমার প্রিমিয়ারে জোলি
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া

লালগালিচায় পাঁচ সন্তান—ম্যাডক্স, ভিভিয়েন, জাহারা, শিলোহ আর নক্সকে নিয়ে পোজ দিয়েছেন জোলি। যদিও প্যাক্সকে দেখা যায়নি। বারবার জোলি বলে এসেছেন, সন্তানেরা তাঁর অংশ। তাঁর সব শক্তির একটা বড় উৎস। তাদের ছাড়া তিনি অসম্পূর্ণ। এবার রেড কার্পেটেও এমনভাবে দাঁড়ালেন, যেন তাঁরা ছয়জনে মিলেই একটা সত্তা। আর সেই ছবি নানা রকম উচ্ছ্বসিত ক্যাপশনকে সঙ্গী করে ভাইরাল হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। অনেক দিন পর প্রিয় তারকাকে চেনারূপে দেখতে পেয়ে আপ্লুত ভক্তরা।

অনেকদিন পর জোলিকে দেখে খুশি ভক্তরা
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া

এদিন জোলির পরেন ছিল বালমেইন ড্রেস। আর ছিল টিফানি অ্যান্ড কোম্পানির গয়না। সাজ, পোশাক ছিল ন্যূনতম (মিনিমালিস্টিক)। ১৬ বছর বয়সী জাহারা মায়ের ওয়্যার্ডরোব থেকে ধার করেছে অস্কার ড্রেস। হ্যাঁ, জাহারার পরনে যে পোশাকটি ছিল, সেটি জোলি পরেছিলেন ২০১৪ সালের অস্কারের লালগালিচায়। পোশাকটির ডিজাইন করেছিলেন লেবাননের ফ্যাশন ডিজাইনার এলি সাব। মিলান আর প্যারিসেও তাঁর কাজ দারুণ জনপ্রিয়। এবার মায়ের সিনেমার প্রিমিয়ারে মেয়ে জাহারা পরল সেই অস্কার গাউন।

জোলির পোশাক পরেছে জাহারা
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া

এদিকে ১৫ বছর বয়সী মেয়ে শিলোহ—তার পরনে ছিল একটি ট্যান ড্রেস। এই পোশাকও মায়ের। জোলিকে এই পোশাকে দেখা গেছে একপটি ‘ফ্রেঞ্চ অবজারভেটরি অব এপিডোলজি’র (ওএফএ) নামে বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার নিয়ে কাজ করে এমন একটি ফরাসি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠানে। এদিকে ২০ বছর বয়সী ছেলে ম্যাডক্স এসেছিলেন কালো ব্লেজার পরে। সঙ্গে ছিল মানানসই কার্ডিগান। আর নক্স দেখা দিয়েছেন একেবারেই ‘ফরমাল’ লুকে।

নিজের আর সন্তানদের পোশাক নিয়ে জোলি এন্টারটেইনমেন্ট টুনাইটকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ‘ফাস্ট ফ্যাশন’-এর বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে বলেন, ‘আমরা সবাই পুরোনো লুকের পোশাকে দেখা দিলাম। আর জাহারা তো আমার পুরোনো অস্কারের পোশাক নিজের মতো করে পরেছে। আমার সন্তানেরা এখন দিব্যি আমার পোশাক পরে। তবে ওরা নিজেদের মতো করে “আপসাইকেল” (পোশাকটাকে আরও বেশী করে ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা, পোশাকের মান, মূল্য বাড়ানো) করে নেয়। আমরা পারিবারিকভাবে পুরোনো পোশাক নতুন করে পরায় বিশ্বাসী।’  

ড্রাপড কর্সেট ড্রেসের প্যান্টে ছিল পকেটও
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া

জোলি যে পোশাকটি পরেছেন, সেটি ফ্রেঞ্চ লাক্সারি ফ্যাশন হাউস বালমেইনের ২০২২ সালের কালেকশন থেকে নেওয়া। তিনি পরেছিলেন ড্রাপড কর্সেট ড্রেস। আর সঙ্গে ছিল একই কাপড়ের প্যান্ট। তবে জোলিকে এত আকর্ষণীয় দেখানোর পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তাঁর ব্যক্তিগত স্টাইলিশ জেমস বডেন। তিনিই কোন পোশাকের সঙ্গে জোলি কী কী অলংকার পরবেন, তা ঠিক করে দেন।

জোলির বাঁ হাতে যে দুটি ব্রেসলেট দেখা যাচ্ছে, দুটিই সোনার, বেলাডোরা থেকে নেওয়া
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া

জোলির বাঁ হাতে যে দুটি ব্রেসলেট দেখা যাচ্ছে, দুটিই বেলাডোরা থেকে নেওয়া। আঙুলের আংটিটি গ্রিক জুয়েলারি শপ ইলিয়াস লালাওনিস থেকে নেওয়া। আর কানে যে দুলজোড়া দেখতে পাচ্ছেন, তা টিফানি অ্যান্ড কোর ১৮ ক্যারেটের ভিনটেজ কালেকশন থেকে নেওয়া। তবে যে অলংকারটি জোলির লুক অন্য সবার থেকে আলাদা করেছে, সেটি হলো চিনকাফ। জোলির চিবুকে যে সোনার অলংকারটি আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছে, সেটিই এটি।  এটি নিনা বেরেনাতো জুয়েলানি থেকে নেওয়া।