বর্ষাদিনেও থাকুন স্টাইলিশ
জ্যৈষ্ঠের খড়তাপের মধ্যে দরজায় কড়া নাড়ছে বর্ষা। বর্ষাকাল অপছন্দ, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দায়। বৃষ্টির স্পর্শে অন্য রূপে দেখা দেয় এই ব্যস্ত নগরী। তবে ব্যস্ততা তো আর থেমে থাকে না। বিভিন্ন প্রয়োজনে কারণে-অকারণে তো বের হতেই হয়। আর বের হলেই ভয়, বৃষ্টি-কাদায় জামাকাপড় না নষ্ট হয়! এই বৃষ্টিভেজা মৌসুমে ফ্যাশনেবল আর স্টাইলিশ থাকাটাও একটা চ্যালেঞ্জ। তবে কিছু ব্যাপার মাথায় থাকলে বিষয়টি অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। বৃষ্টিতে স্টাইল এবং পোশাক নিয়ে যেমন সমস্যা আছে, তেমন সমাধানও আছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক কিছু ফ্যাশন ও স্টাইল গাইড।
যেমন পোশাক চাপাবেন
বর্ষাকালে ঘন ঘন বৃষ্টির জন্য প্রায়ই রাস্তাঘাটে কাদা থাকে। মহামারিকাল পেরিয়ে এখন তো ক্যাজুয়ালই ফরমাল হিসেবে স্বীকৃতি পাচ্ছে। একটু কম দৈর্ঘ্যের পোশাক পরাই ভালো। ছেলেদের জন্য থ্রি–কোয়ার্টার, শর্ট প্যান্ট, লুজ শার্ট বা টি-শার্ট মানানসই। পোশাকের রং অবশ্য নিজের পছন্দের পরতে পারেন। তবে এই মৌসুমে একটু গাঢ় রঙের পোশাক পরাই ভালো। যেমন: নেভি ব্লু, অলিভের শেড, যাতে কাদা লাগলে বা ভিজে গেলেও চট করে চোখে ধরা না পড়ে। যদি ‘ফরমাল’ পরতেই হয়, তবে ঢিলেঢালা পোশাক পরা উচিত, যাতে শরীরে আর্দ্রতা না জমে। ভিজলেও অফিসের এসির বাতাসে সহজেই শুকিয়ে যায়। মেয়েদের জন্য স্কার্ট, ডেনিম বা কটনের শর্টস সুবিধাজনক ও ফ্যাশনেবল পোশাক। কমলা, নীল ও গোলাপি রঙের পোশাকগুলো এই মৌসুমে দারুণ লাগে। চাইলে পরতে পারেন লালও।
বর্ষায় কেমন মেকআপ?
বর্ষাকালে মেকআপ সিম্পল রাখা উচিত। ভালো ব্র্যান্ডের ওয়াটারপ্রুফ মেকআপ ব্যবহার করা যেতে পারে। এ সময় ভারী মেকআপ না করাই ভালো। বর্ষার পরিবেশ ও প্রকৃতির সঙ্গে নীল দারুণ মানিয়ে যায়। নীল কাজল বা আইলাইনার ব্যবহার করতে পারেন। বৃষ্টির দিনে লিকুইড লিপ কালার এড়িয়ে চলুন। চকচকে বা গ্লসি সাজ এ সময়ের জন্য নয়। ছাতা ব্যবহার করুন। চাইলে ছোট্ট একটা টিপ পরে ফেলতে পারেন।
বৃষ্টিদিনের স্যান্ডেল বা জুতা
বর্ষায় সবচেয়ে বেশি যে জিনিস নষ্ট হওয়ার শঙ্কা থাকে, তা হলো জুতা বা স্যান্ডেল। এ সময় প্লাস্টিক বা নন–লেদার জুতা পরাই ভালো। কাপড়, চামড়ার জুতা এড়িয়ে যান। হাঁটার সময় পায়ে যাতে রাস্তায় জমে থাকা ময়লা পানি ও কাদা না লাগে, সে জন্য একটু উঁচু সোলের জুতা-স্যান্ডেল ব্যবহার করতে পারেন। একই সমস্যা থেকে বাঁচার জন্য জুতার চারপাশের অংশ যেন ঢেকে থাকে, সে রকম স্লাইডও পরতে পারেন।
কাপড় শুকাবেন যেভাবে
বর্ষাকালে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকে, তাই কাপড় শুকাতে দেরি হয়। জর্জেট বা সুতি, ঘের কম—এমন জামা পরুন। যেটা সহজেই ধুয়ে শুকিয়ে আবার পরা যায়। আবার কাপড় বেশি সময় ভেজা থাকলে ফাঙ্গাস জমে। এ সময় কাপড় শুকানো জরুরি। সে জন্য প্রথমে ওয়াশরুমের হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখুন। তাতে অতিরিক্ত পানি ঝরে যাবে। একটা ঘরে দরজা–জানলা বন্ধ করে ফ্যান ছেড়ে কাপড় শুকাতে পারেন। এরপর ভালোভাবে ইস্ত্রি করে ন্যাপথলিন বা পোকার ওষুধ দিয়ে আলমারিতে তুলে রাখুন।
আলমারিতে রাখা কাপড়
কাপড় আলমারিতে অনেক দিন ধরে সংরক্ষণ করতে হলে সেগুলোর প্রতি বাড়তি সতর্ক হতে হবে। আলমারিতে রাখা কাপড়ে ন্যাপথলিন ব্যাবহার করুন। পোকামাকড় ক্ষতি করতে পারবে না। আলমারিতে রাখা কোনো কাপড়ে ফাঙ্গাসের আক্রমণ হলে বের করে ধুয়ে ফেলুন। এরপর ভালোমতো শুকিয়ে আয়রন করুন। এতে ছত্রাকের আক্রমণ দূর হবে। ভ্যাপসা ভাব দূর করতে ধূপকাঠির ধোঁয়াও ব্যবহার করা যায়। এতে কাপড়গুলো এমন জায়গায় মেলে দিন, যেখানে ধূপের ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে। মাঝেমধ্যে আলমারির পাল্লা খুলে ফ্যান ছেড়ে রাখতে পারেন। তাতে আলমারির কাপড়ের ভেতরে বাতাস চলাচলের ফলে গুমোট ভাব কেটে যাবে।
কাপড়ে তিলা ও দাগ পড়লে করণীয়
কাপড় থেকে দাগ দূর করতে দুটি কার্যকরী উপাদান লেবু-লবণ। লেবু ও লবণ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে সেই পেস্ট কাপড়ে দাগ লাগা অংশে লাগান। ভালোভাবে ঘষে ধুয়ে নিন। এতে দাগ দূর হয়ে যাবে। কাপড়ে তিলা পড়লে ডিটারজেন্ট বা শ্যাম্পু দিয়ে ভিজিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন। এবার ভালোভাবে শুকিয়ে নিন। যে কাপড় চাইলেই ধোয়া যাবে না, সেগুলো হালকা ব্রাশ করে দেখুন তিলার দাগ যায় কি না। এরপর শুকাতে দিন।