যে শাড়ি পরাও যায়, খাওয়াও যায়

অ্যানার পরনে খাওয়ার উপযোগী শাড়িটি
ছবি: অ্যানার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে

আপনি হয়তো শাড়ি-চুড়ি পরে, সেজেগুজে ঘুরে বেড়াচ্ছেন; এরই মধ্যে হঠাৎ পেট চোঁ চোঁ করতে শুরু করল। হাতের কাছে কোনো খাবারও নেই। এখন কী করবেন? চাইলে এখন কেউ পরনের শাড়ির এক টুকরা খেয়েও ফেলতে পারেন! আবোলতাবোল বকছি না। খাওয়ার উপযোগী এক শাড়ি বানিয়ে পূজার আগে সব মনোযোগ নিজের দিকে টেনে নিয়েছেন ভারতের কেরালার এক ডিজাইনার। নাম তাঁর অ্যানা এলিজাবেথ জর্জ।

দরজায় কড়া নাড়ছে দুর্গাপূজা। চারদিকে পড়ে গেছে সাজ সাজ রব। নারীরা অফলাইন-অনলাইনের দোকান ঘুরে ঘুরে খুঁজছেন মনের মতো পোশাক। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে অ্যানার এই বিচিত্র শাড়ি। বলা হচ্ছে, এর আগে নাকি খাওয়ার উপযোগী শাড়ি আর তৈরি হয়নি।

শাড়িটি বানিয়ে আগস্টের ২১ তারিখে অ্যানা ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছেন এক ভিডিও। সম্প্রতি সেটি হয়ে গেছে ভাইরাল। এই শাড়ি নিয়ে এখন প্রশ্ন আর তর্কবিতর্কের অন্ত নেই। তবে তর্কবিতর্ক যা-ই থাক, শাড়িপ্রিয় ভোজনরসিকদের হাসি যে চওড়া হয়েছে, তা না বললেও চলে। অ্যানা শাড়ির ভিডিওটি পোস্ট করার সময় গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ট্যাগ করে লিখেছেন, ‘পুরো শাড়িটিই একদম খেয়ে ফেলা যাবে। এটাই বিশ্বের প্রথম “রিয়েল সাইজ” খাওয়ার উপযোগী শাড়ি। গবেষক হিসেবে আমার কাজই এ রকম নতুন কিছু সৃষ্টি করা। কখনো সীমার ভেতর থাকবেন না। আপনার কল্পনার কোনো সীমা নেই। আর যা কিছু কল্পনা করা সম্ভব, তার সবই করে দেখানো সম্ভব। যেমন এই শাড়ি।’

নিজেই নিজের শাড়ির মডেল হন অ্যানা
ছবি: অ্যানার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে

অ্যানা ওই পোস্টে আরও জানিয়েছেন, এই শাড়ি বানাতে তাঁর ৩০ হাজার রুপি বা প্রায় ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তবে শাড়িটি বিক্রির জন্য কি না, পোস্টে সেটি স্পষ্ট নয়। শাড়িটির দৈর্ঘ্য ৫ দশমিক ৫ মিটার বা ১৮ ফুট। একা হাতে শাড়িটি বানাতে অ্যানার সময় লেগেছে ৫৩ ঘণ্টা।

অ্যানা জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে এই শাড়ি তৈরির উদ্দেশ্য ছিল মানুষকে স্রেফ আনন্দ দেওয়া। আর ভাবনার যে কোনো সীমা নেই, সেই বার্তা দেওয়া। শাড়িটি কেরালার ঐতিহ্যবাহী ‘কাসাভু’ শাড়ির আদলে বানানো। অ্যানা ছোটবেলায় এক শিল্পীকে এমন এক রুমাল বানাতে দেখেছিলেন, যেটি খাওয়া যেত। সেখান থেকেই মনের মধ্যে গেঁথে ছিল আইডিয়াটি। তারপর একদিন অ্যানা তাঁর মায়ের একটি কাসাভু শাড়ি দেখে ভাবেন, এমন এক শাড়ি বানাবেন, যেটি খাওয়াও যাবে। যেমন ভাবনা, তেমন কাজ। এই শাড়ি তৈরি করা হয়েছে কেক বানাতে ব্যবহৃত হয়, এমন ১০০টি স্টার্চের ওয়েফার। কেকের ওপর যেভাবে নকশা করা হয়, সেভাবে এই শাড়ির ওপর নকশা করেছেন অ্যানা। শাড়িটির ওজন হয়েছে দুই কেজি।

অ্যানা ডিজাইনার, গবেষক, আবার সময় সুযোগ মিললে বানিয়ে ফেলেন কেক
ছবি: অ্যানার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে

অ্যানা মূলত ফ্যাশন ডিজাইনার। এ ছাড়া তিনি নিয়মিত কেক বানান। বর্তমানে ক্যানসার নিয়ে গবেষণাও করছেন। বিচিত্র শাড়িটির বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে অ্যানাকে ইনস্টাগ্রামে বার্তা পাঠানো হয়েছে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অ্যানা বার্তার উত্তর দেননি।