লাল শাড়িতে নয়নতারার বিয়ের ফুল ফুটল
টকটকে লাল শাড়িতে বউ সাজলেন নয়নতারা। তবে এবার ক্যামেরার সামনে নয়। একেবারে সত্যি সত্যি। কয়েক ঘণ্টা হলো নয়নতারার রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস দাঁড়িয়েছে ‘ম্যারিড’। ৩৭ বছর বয়সী দক্ষিণি জনপ্রিয় অভিনেত্রী নয়নতারা ও এক বছরের ছোট, পরিচালক বিগনেশ শিবান সাত পাকে বাঁধা পড়লেন। অবশ্য মনে মনে নাকি আরও সাত বছর আগেই তাঁরা বিবাহিত ছিলেন! এ কেবল আনুষ্ঠানিকতা। সেই আনুষ্ঠানিকতার সাক্ষী হয়ে উপস্থিত ছিলেন রজনীকান্ত, শাহরুখ খান, বিজয় সেথুপতি, মণিরত্নমসহ আরও অনেকে।
বিয়ের দুটি ছবি প্রকাশ করে লেখেন, ‘নয়ন আর আমি মিলে এক হলাম। সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে আমরা এখন সদ্য বিবাহিত।’ বিয়ের কয়েক ঘণ্টা আগে বিগনেশ এ বিয়ের আয়োজন ঘটা করে উৎসর্গ করেন প্রেমিকা ও ‘হবু স্ত্রী’ নয়নতারাকে। বিয়ের দুই দিন আগে ইনস্টাগ্রামে বিয়ের খবর জানিয়ে লিখেছিলেন, ‘সবটাই নয়নকে উৎসর্গ করে। সৃষ্টিকর্তা, এই মহাবিশ্ব আর এই জীবনে যত মানুষের সঙ্গে আমার চোখাচোখি হয়েছে, সব ভালো হৃদয়, সমস্ত সুন্দর মুহূর্ত, আশীর্বাদ, প্রার্থনা— সব কিছুর সম্মিলিত শক্তি আজ আমাকে এ মুহূর্তে এনে দাঁড় করিয়েছে। নয়ন আমার জীবনের সব ভালো কাজ আর প্রার্থনার ফল।’
তামিলনাড়ুর মহবালিপুরামের প্লাশ হোটেলে মিডিয়ার চোখ এড়িয়ে পরিবার ও কাছের মানুষদের উপস্থিতিতে চার হাত এক হলো। আজ সকাল ৮টা ১০ মিনিটে শুরু হয় নয়নতারা-বিগনেশের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। ‘জেড বাই মনিকা অ্যান্ড কারিশমা’র ডিজাইন করা পোশাকে বর-কনে সাজেন তাঁরা।
জেড বাই মনিকা অ্যান্ড কারিশমার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে সদ্য বিবাহিত এই জুটির ছবি প্রকাশ করে জানানো হয়েছে শুভেচ্ছা। আর লেখা হয়েছে তাঁদের বিয়ের পোশাক নিয়ে, ‘লেডি সুপারস্টার নয়নতারা ও পরিচালক বিগনেশ শিবান, অভিনন্দন। এই জুটির বিয়ের বিশেষ পোশাক তৈরি হয়েছে মনিকা আর কারিশমার হাতে।’
এরপর এই পোস্টে জানানো হয়, জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিনে নয়নতারা পরেছেন জেডের সিগনেচার কালার ভারমিলিয়ন রেডের হ্যান্ডক্রাফটেড শাড়ি। ওপরে যে এমব্রয়ডারির কাজ, সেটি ভারতের কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুতে চৌদ্দ শতকে নির্মিত হইসালা মন্দিরের ওপরের কারুকার্য থেকে অনুপ্রাণিত। ব্লাউজে ফুটে উঠেছে দেবী লক্ষ্মীর মোটিফ। আর ব্লাউজের লম্বা হাতায় আঁকা হয়েছে বাজুবন্ধনীর নকশা। এ ছাড়া লেখা হয়েছে এই দুজনার নাম, আস্থা, সম্মান আর ভালোবাসার নানা প্রতীক।
হিন্দু বিয়েতে অগ্নি সাক্ষী রেখে সাত পাক ঘুরতে হয়। একে বলে ‘ফেরা’। সাত ফেরার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চার ফেরা। সেই চার ফেরা হলো ধর্ম, সম্পদ, আকাঙ্ক্ষা ও মুক্তি। বর বিগনেশ শিবানের হালকা ঘিয়েরঙা পাঞ্জাবিতে ছিল এই মূল চার ফেরার নানা প্রতীক। মোদ্দা কথা, বিয়ের পোশাকেও নিজেদের সংস্কৃতি আর ধর্মকেই তুলে ধরেছেন এই জুটি।
বিয়েতে মিডিয়ার কোনো মানুষ ঢোকার অনুমতি পায়নি। বিশেষ এই দিনে স্বামী বিগনেশকে নয়নতারা লাল রঙের একটি ফেরারি গাড়ি উপহার দিয়েছেন। এবার চেন্নাইয়ে চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির বন্ধুদের নিয়ে হবে বিবাহোত্তর সংবর্ধনা।
২০১৫ সালে ‘নানুম রাউডি ধান’ সিনেমার শুটিং সেটে প্রেমে পড়েন নয়নতারা ও বিগনেশ শিবান। এর পর থেকে সম্পর্কে আছেন এই যুগল। সম্পর্ক নিয়ে কোনো লুকোছাপাও করেননি তাঁরা। প্রায়ই বিগনেশ শিবানের ইনস্টাগ্রামের ছবিতে এই জুটির হাস্যোজ্জ্বল ছবি দেখা যায়।
১১ জুন বিয়ে উপলক্ষ্যে সাংবাদিকদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন এই জুটি। বিয়েতে দাওয়াত না দিলে কী হবে, সেদিন বিনোদন সাংবাদিকদের ঠিকই বিয়ের ভোজ খাওয়াবেন। আর সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেবেন। নয়নতারা ও বিগনেশ দুজনের হাতেই সিনেমার কাজ রয়েছে। নয়নতারার হাতে কয়েকটি সিনেমা রয়েছে। ২০২৩ সালে তাঁকে বলিউড বাদশাহ শাহরুখের সঙ্গে ‘জওয়ান’ ছবিতে দেখা যাবে। অন্যদিকে ‘কাতুবাকুলা রেন্ডু কাদাল’ সিনেমা নিয়ে ব্যস্ত বিগনেশ শিবান।