ডিজিটাল শিক্ষায় আমরা বরাবরই জোর দিয়ে এসেছি

আজ ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ বৃহস্পতিবার, ডিজিটাল শিক্ষা দিবস। বেসরকারি পর্যায়ে দেশে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার কীভাবে হচ্ছে—তারই কিছুটা ধারণা দিলেন ঢাকার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির (আইইউবিএটি) কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সেলিনা নার্গিস

অধ্যাপক সেলিনা নার্গিস
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সামনে এগিয়ে নিতে, উচ্চশিক্ষাব্যবস্থাকে বদলে দিতে অনেক আগে থেকেই কাজ করছিলেন অধ্যাপক এম আলিমউল্যা মিয়ান। সেই আশির দশকেই বাংলাদেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন তিনি। আর ১৯৯১ সালের জানুয়ারি মাসে প্রতিষ্ঠা করেন দেশের প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইইউবিএটি। ১৯৯২ সালে বিবিএ প্রোগ্রামের মাধ্যমে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু করা হয় ডিগ্রি কর্মসূচি।

শুরু থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে আসা তরুণদের বুকে স্বপ্ন বুনে আসছে আইইউবিএটি। প্রতিটি গ্রামে অন্তত একজন করে পেশাদারি স্নাতক তৈরি করা বিশ্ববিদ্যালয়টি লক্ষ্য। বাংলাদেশের ৫৫০টি উপজেলার মধ্যে ৫৪৪টিতেই আমাদের শিক্ষার্থী ও স্নাতক আছেন। এরই মধ্যে স্নাতক শেষ করেছেন ১৩ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী।

একজন শিক্ষার্থী যখন উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসেন, তাঁর সামনে অনেক দরজা খোলা থাকে। নানা জনের নানা কথায় দিগ্ভ্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই শিক্ষার্থীদের শুরুতেই ডিজিটাল মাধ্যমে ভবিষ্যৎ কর্মজীবনের পথ দেখানোর চেষ্টা করে আইইউবিএটি। যেই লক্ষ্য নিয়ে একজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন, তা যেন তিনি পূরণ করতে পারেন, সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সব সময় তাঁকে সাহায্য করে। ডিজিটাল শিক্ষার এটাই সবচেয়ে বড় সুবিধা—শিক্ষার্থীকে সহজেই বোঝানো যায় যে জীবনের লক্ষ্য পূরণে তাঁর কী কী করা উচিত। এ কারণে চার বছরের স্নাতক শেষে লক্ষ্যের পেছনে ছোটা আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য সহজ হয়ে যায়।

ডিজিটাল শিক্ষায় আমরা বরাবরই জোর দিয়ে এসেছি। কোভিড-পরবর্তী সময় থেকেই ডিজিটাল লার্নিংয়ের সঙ্গে ব্লেন্ডেড লার্নিং পদ্ধতি মিশিয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা সরাসরি ক্লাসে যোগদানের পাশাপাশি অনলাইনেও শেখার সুযোগ পান। গুগল ক্লাসরুমের মাধ্যমে শিক্ষকেরা কোর্স রিসোর্স, কোর্স ম্যাটেরিয়াল এবং অন্যান্য শিক্ষাসহায়ক উপকরণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে দেন। আইইউবিএটির সব শিক্ষার্থীর জন্য আমাদের লাইব্রেরি ও গবেষণা কেন্দ্রের যাবতীয় তথ্য এখন অনলাইনে উন্মুক্ত। কোনো শিক্ষার্থী নিয়মিত ক্লাসরুম ছাড়াও এখন চাইলে ডিজিটাল মাধ্যমে আমাদের পাঠ্যক্রম সংগ্রহ করতে পারেন। নিয়মিত এই সেবার মানোন্নয়ন করছে আইইউবিএটি।

আজকের উদ্ভাবনী তরুণেরাই আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে নেতৃত্ব দেবেন। সে জন্য আমরা তৈরি করেছি আইইউবিএটি ইনোভেশন হাব, তরুণদের যেখানে উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবক হিসেবে তৈরির লক্ষ্যে কাজ চলছে। শিক্ষার্থীরা এখানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করেন। আমরা তাঁদের গবেষণা, উদ্ভাবনী সম্ভাবনাকে উৎসাহ জোগাতে বিভিন্ন প্রকল্পে তহবিল দিই। শিক্ষকেরাও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করেন।

আইইউবিএটি প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই দেশে দক্ষ জনশক্তি তৈরির বিষয়ে বদ্ধ পরিকর। সেই প্রচেষ্টা এখনো অব্যাহত আছে। আমরা চাই আমাদের শিক্ষার্থীরা ডিজিটাল শিক্ষার সব সুবিধাকে সঙ্গে নিয়ে আগামীর জন্য তৈরি হোন।

দেশের প্রতিটি গ্রামে উচ্চশিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়া আইইউবিএটির অন্যতম লক্ষ্য। ‘অ্যান এনভায়রনমেন্ট ডিজাইনড ফর লার্নিং’ অর্থাৎ ‘শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ’ আমাদের স্লোগান। এই স্লোগান সামনে রেখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি চেষ্টা করেছে শিক্ষার্থীদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে। সময়োপযোগী, মানসম্মত ও ক্যারিয়ার গঠনে ভূমিকা রাখে—এমন শিক্ষায় শিক্ষিত করতে চাই আমরা। সেই লক্ষ্যেই ঢাকার ভেতরে নিজস্ব ২০ বিঘা সবুজ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নানা সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।