একদিকে পরীক্ষা, অন্যদিকে ডেঙ্গুর সঙ্গে যুদ্ধ
চট্টগ্রাম কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছেন তৃণা দাশ। প্রথম তিনটি পরীক্ষার পরই শরীরে জ্বরের অস্তিত্ব টের পান তিনি। দুর্বল হয়ে পড়ে শরীর, বিভিন্ন স্থানে ব্যথা। চিকিৎসকের কাছে গিয়ে জানতে পারলেন, শঙ্কাটাই সত্যি। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন তিনি। ডেঙ্গু নিয়েই বাকি পরীক্ষাগুলো দিয়েছেন তৃণা, মানবিক বিভাগ থেকে পেয়েছেন জিপিএ–৫।
তৃণা দাশ বলেন, ‘প্লাটিলেট অনেক কমে গিয়েছিল। বাসাতেই শুরু হয়েছিল স্যালাইন দেওয়ার যুদ্ধ। ভাই বলেছিল, বেঁচে থাকলে পরীক্ষা হাজারবার দেওয়া যাবে। কিন্তু আমি কথা শুনিনি। অসুস্থতা নিয়েই প্রস্তুতি নিয়েছি, পরীক্ষা দিয়েছি।’
ফল প্রকাশের দিন তৃণার কোনো উৎকণ্ঠা ছিল না। ধরে নিয়েছিলেন, গড়পড়তা একটা ফল হয়তো হবে। নিজে ফল দেখতেও যাননি। জেনেছেন বন্ধুদের কাছ থেকে। শুরুতে বিশ্বাস হয়নি, এত কষ্টের পরও তিনি জিপিএ–৫ পেয়েছেন। শুরুতেই ফোন করেছেন মাকে। তৃণা বলেন, ‘সবার আগে মায়ের কথাই মনে পড়েছে। পরীক্ষার সময় মা অনেক কষ্ট করেছেন। আমাদের একটা মুদিদোকান আছে। ঘরের পাশাপাশি বাবার সেই দোকানও মা-ই সামলান। ডেঙ্গু হওয়ার পর আমাকে পরিচর্যার ভারও মায়ের কাঁধে এসে পড়েছিল। খবরটা সবার আগে তাই মাকেই জানিয়েছি।’
বাংলা ছাড়া সব বিষয়েই এ প্লাস পেয়েছেন এই শিক্ষার্থী। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতিই তাঁর একমাত্র ধ্যানজ্ঞান।