বিয়ের নিমন্ত্রণেও থাকুন কেতাদুরস্ত

বিয়ে বাড়িতে কিছু আদবকেতা মেনে চলুন

শিরোনাম দেখে প্রশ্ন জাগতে পারে, বিয়ের নিমন্ত্রণে কে আবার কেতাদুরস্ত থাকে না? সবচেয়ে ভালো পোশাক আর সাজটাই তো আমরা বেছে নিই নিমন্ত্রণে হাজিরা দেওয়ার জন্য। প্রিয় পাঠক, পোশাকে-আশাকে কেতাদুরস্ত থাকার কথা এখানে বলা হচ্ছে না। বলছি আদবকেতা বজায় রেখে, মনে–প্রাণে পুরোদস্তুর কেতাদুরস্ত হওয়ার কথা।

দুই পক্ষের কাছের-দূরের আত্মীয়স্বজন, পাড়া–প্রতিবেশী, শুভাকাঙ্ক্ষীরা এক হন এই দিনে। একেবারে হই হই রই রই ব্যাপার। এমন আয়োজনে যেন আপনার কোনো আচরণ কাউকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে না ফেলে, সেদিকে খেয়াল রাখলে তবেই আপনি হয়ে উঠবেন সত্যিকারের ‘কেতাদুরস্ত’ মানুষ।

খাবার টেবিলে

খাবার টেবিলে অনেক সময়ই অপরিচিত বা স্বল্প পরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে বসতে হয়। আপনার পাশের চেয়ারটিতে হয়তো পরিচিত কারও জন্য জায়গা রেখেছেন। সেখানে অন্য কেউ বসতে চাইলে ভদ্রভাবে তাঁকে সেটি বুঝিয়ে বলুন। আবার খাবার পরিবেশন হয়ে গেলে অন্যদের আগে খাবার নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়াটাও সৌজন্যবোধের পরিচয়। বাটি বা ডিশ থেকে খাবার তুলে নিতে গিয়ে যেন অন্য কারও প্লেট-গ্লাসের ওপর খাবারের চামচ কিংবা আপনার হাত চলে না যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখুন। এঁটো হাতে চামচ স্পর্শ করবেন না। প্রয়োজনে খাবার পরিবেশনকারীর সহায়তা নিন।

হাত ধোয়া

হাত ধোয়ার সময় খাবারের কণা পড়তে পারে বেসিনে। প্রয়োজনীয় পানি ঢেলে দিলেই পরিষ্কার হয়ে যায়। এ ব্যাপারে খেয়াল রাখুন। এঁটো হাতে (কিংবা সাবানের ফেনা মাখানো হাতে) কলের হাতল স্পর্শ করবেন না। ব্যবহার শেষে কল ভালোভাবে বন্ধ করে দিন।

আড্ডায়-আলাপে

স্পর্শকাতর বিষয়ে আলাপ না করাই ভালো। বিয়ের অনুষ্ঠানে হয়তো বহুদিন পর কারও সঙ্গে দেখা। তিনি বিয়ে করেছেন কি না—এটুকু প্রশ্ন মানানসই হতে পারে (এটিও অবশ্য নির্ভর করে তাঁর সঙ্গে আপনি কতটা ঘনিষ্ঠ, তার ওপর)। তবে ‘বিয়ে কেন করছেন না’ কিংবা বিয়ে করে থাকলে ‘সন্তান কবে নেবেন’—এ জাতীয় ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করবেন না। অন্যের সমালোচনা করবেন না। মনে রাখবেন, রসিয়ে রসিয়ে অপরের দোষ বর্ণনা করলে কখনো নিজের সম্মান বাড়ে না।

ভিড়ভাট্টায়

বর এলে ‘গেট’ ধরা কিংবা বর-কনের সঙ্গে ছবি তুলতে যাওয়া—সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে এমন নানা আয়োজনে চলে বিয়ের আনন্দ উদ্‌যাপন। তবে এমন আনন্দের মাঝে ধাক্কাধাক্কি করে আপনি যেন কারও বিরক্তির কারণ হয়ে না দাঁড়ান, সেদিকে খেয়াল রাখুন।

পরিচ্ছন্নতা ও সৌজন্যবোধ

ব্যবহৃত টিস্যু বা রুমাল যেখানে সেখানে রাখবেন না। ময়লা ফেলুন নির্দিষ্ট স্থানে। হাঁচি-কাশির আদবকেতা মেনে চলুন সব সময়। মুখের ভেতর খাবারের কণা আটকে থাকলে আড়ালে গিয়ে (আড়াল না পেলে মুখের সামনে বাঁ হাত এনে মুখ আড়াল করে নিয়ে) পরিষ্কার করুন, এরপর সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন।