শীতার্ত মানুষের পাশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠন

এ বছর সারা দেশেই বেড়েছে শীতের তীব্রতা। কোথাও কোথাও তাপমাত্রা নেমেছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠনগুলো নিজেদের মতো করে দাঁড়িয়েছে শীতার্ত মানুষের পাশে। এমনই কয়েকটি উদ্যোগের খবর জানাচ্ছেন ছিদরাতুল মুনতাহা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যান্ড সোসাইটি

‘শীতার্তদের জন্য গান’ শিরোনামের এ কনসার্টের ভেন্যু ছিল টিএসসির পায়রা চত্বর।
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যান্ড সোসাইটির যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালের ৪ নভেম্বর। এর পর থেকেই নানা সময় তারা কনসার্ট আয়োজনের মাধ্যমে বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমে অংশ নিয়েছে। ‘উষ্ণতা ছড়াই গানে গানে’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ১৬ জানুয়ারি যেমন অনুষ্ঠিত হলো এক বিশেষ কনসার্ট। ‘শীতার্তদের জন্য গান’ শিরোনামের এ কনসার্টের ভেন্যু ছিল টিএসসির পায়রা চত্বর।

সংগঠনের সভাপতি ইনজামাম উল ইবনে কবির বলেন, ‘আমরা আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিবছরই চ্যারিটি শোর আয়োজন করি। এবার মনে হলো শীতার্তদের জন্য একটা কিছু করা দরকার। কনসার্ট থেকে যা অর্থ পেয়েছি, আমার মনে হয়, তাতে প্রায় ৪০০ জন শীতার্তের হাতে শীতবস্ত্র তুলে দেওয়া সম্ভব।’

আরও পড়ুন

কনসার্টে কাকতাল, লিসান অ্যান্ড দ্য ব্লাইন্ডমেন, ডেড এন্ড, আননেইমড দ্য ব্যান্ডসহ ৯টি জনপ্রিয় গানের দল এবং মাশা, জাহিদ, অন্তুসহ কয়েকজন একক সংগীতশিল্পীও অংশগ্রহণ করেছেন।

নবজাগরণ ফাউন্ডেশন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমে যুক্ত হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নবজাগরণ ফাউন্ডেশন। এ বছর সংগঠনটির উদ্যোগে ১৫০ জন শীতার্তের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। নবজাগরণ ফাউন্ডেশনের এ কার্যক্রমে সহযোগী ছিল ঢাকার সংগঠন ‘একলা চলো রে’।

সাধারণত সংগঠনের সদস্য ও উপদেষ্টাদের অর্থায়নে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজে যুক্ত হয় নবজাগরণ ফাউন্ডেশন। এ ছাড়া সামর্থ্য অনুযায়ী তাদের সঙ্গে যুক্ত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরাও।

সংগঠনের সভাপতি অলিওল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সবাই যেহেতু সাধারণ শিক্ষার্থী, তাই ইচ্ছা থাকলেও সব সময় সব রকম সমাজসেবামূলক কাজের উদ্যোগ নিতে পারি না। অর্থের জোগান হলে আমরা আরও বড় পরিসরে কাজ করতে চাই।’

ক্লাবের পক্ষ থেকে প্রতিবছরই ফেব্রুয়ারি মাসে প্রায় দুই সপ্তাহব্যাপী বইমেলার আয়োজন করা হয়। মূলত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শিক্ষক মো. শামসুজ্জোহার স্মরণে ১৮ ফেব্রুয়ারি বইমেলাটি শুরু হয়। বইমেলা সামনে রেখেও শিক্ষার্থীরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

গ্রীন ভয়েস, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

গ্রীন ভয়েস মূলত একটি পরিবেশবাদী যুব সংগঠন। নারী ও শিশুদের অধিকার রক্ষা, প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা, টেকসই উন্নয়ন, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, প্রকাশনা, গবেষণা, স্বাস্থ্য ক্লাব গঠনসহ ১৬টি ভিন্ন ভিন্ন দল গঠন করে সারা দেশে নানামুখী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে এ সংগঠন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জরুরি সহায়তাবিষয়ক কার্যক্রম পরিচালনা করে গ্রীন ভয়েসের উপটিম ‘পরশ’।

প্রতিবছরের মতো এবারও নতুন বছরকে বরণ করে নিতে দেশব্যাপী শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে গ্রীন ভয়েসের ‘পরশ’ দল। ‘ভালোবাসার উষ্ণতায় মুছে যাক শীতের তীব্রতা, উষ্ণতা ছড়িয়ে শুরু হোক নতুন বছর’—এই ছিল আয়োজনের প্রতিপাদ্য। ৫ জানুয়ারি মোট ২৫ জন শীতার্তের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করে তারা।

সংগঠনটির সভাপতি মো. বকুল আলী বলেন, ‘মানুষের সেবার তাগিদেই আমরা কাজ করি। পৃষ্ঠপোষক পেলে আরও বড় পরিসরে কাজ করার ইচ্ছা আছে।’