ঈদ উপলক্ষে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন নগরের মানুষ। দুর্বিষহ গরমে সড়ক, রেল ও নৌপথে দীর্ঘ যাত্রা হয়ে উঠতে পারে ক্লান্তিকর। অনেকে অসুস্থও হয়ে পড়তে পারেন। এ সময় যেসব স্বাস্থ্য সমস্যায় মানুষ ভোগেন, তার মধ্যে মাথা ঘোরানো ও বমির সমস্যা সবচেয়ে বেশি। চিকিৎসা পরিভাষায় যাকে বলে ‘মোশন সিকনেস’। প্রচণ্ড গরমে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে হিট স্ট্রোকের আশঙ্কা তৈরি হয়। আবার দীর্ঘ সময় গাড়িতে থাকার কারণে কোমরে অথবা ঘাড়ের সমস্যাও দেখা দেয়।
মোশন সিকনেস
বাসে বা গাড়িতে যাত্রার সময় অন্তঃকর্ণের সমস্যার জন্য অনেকেরই মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব, কখনো কখনো বমিও হয়। বিশেষ করে শিশুরা মোশন সিকনেসের জন্য যাত্রাপথে কাহিল হয়ে পড়ে। যাঁদের এই প্রবণতা আছে, তাঁরা কিছু সতর্কতা অবলম্বন করবেন।
যাতায়াতের দুই ঘণ্টা আগে হালকা খাওয়াদাওয়া করুন। তারপর পানি ছাড়া আর তেমন কোনো ভারী খাবার গ্রহণ করবেন না।
নন-এসি বাহনে যাতায়াত করুন, যাতে বাতাস চলাচল করে।
জানালার পাশের সিটে বসুন। জানালা দিয়ে দূরে তাকিয়ে থাকুন।
যাত্রাপথে বই পড়া অথবা মোবাইল স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকা থেকে বিরত থাকুন।
প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে যাত্রার আধঘণ্টা আগে ডমপেরিডন, প্রোমেথাজিন অথবা হায়োসিন-জাতীয় ওষুধ সেবন করতে পারেন।
হিট স্ট্রোক
প্রচণ্ড গরমে মানবদেহের তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি হয়ে গেলে মানুষের রক্তচাপ কমে যায়, অবসন্ন লাগে, মাথা ঘোরে, অনেকে অজ্ঞানও হয়ে যান—একে বলে হিট স্ট্রোক।
হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে পানিশূন্যতা যেন না হয়, সেদিকে নজর রাখুন, যাতায়াতের সময় বেশি বেশি পানি পান করুন। ঢিলেঢালা, হালকা রঙের পোশাক পরুন। চোখে-মুখে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিন। প্রচণ্ড রোদে হাঁটাচলার সময় ছাতা ব্যবহার করুন।
কোমর ও ঘাড়ের ব্যথা
দীর্ঘ সময় যাত্রায় ঝাঁকুনি অথবা যাত্রাপথে ঘুমিয়ে যাওয়ার কারণে অনেক সময় দীর্ঘমেয়াদি কোমর অথবা ঘাড়ব্যথা হয়। এমন সমস্যা প্রতিরোধে—
বাসের চাকার ওপরের সিট অথবা খুব বেশি পেছনের সিট পরিহার করুন।
যাত্রাপথে ঘুমাবেন না। ঘুমালে বেকায়দা দেহভঙ্গির জন্য ঘাড়ব্যথা হতে পারে।
দীর্ঘ যাত্রায় বিরতির সময় নেমে একটু হাঁটাহাঁটি করুন।
ঘাড়ের সমস্যার জন্য যাত্রাপথে ‘নেক পিলো’ ও কোমরের সমস্যার জন্য কোমরের বেল্ট বা লাম্বার করসেট ব্যবহার করতে পারেন।
দীর্ঘ যাত্রায় বসে থাকার কারণে পায়ে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। এ জন্য আসনে বসেই পায়ের ব্যায়াম করুন।
বসে থাকার কারণে অনেকের পা একটু ফুলে যায়। তাই খুব আঁটসাঁট জুতা পরবেন না। আরামদায়ক নরম স্যান্ডেল বা জুতা পরবেন।