কোমরব্যথা এড়াতে যা মানবেন

নিয়মিত ব্যায়াম কোমরব্যথার ভালো প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। দীর্ঘদিন ধরে ব্যথা থাকলে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

লো ব্যাক পেইন বা কোমরব্যথায় ভোগেননি, এমন মানুষের সংখ্যা কম। সাধারণত নারীরা কোমরব্যথায় বেশি ভোগেন। ভুল দেহভঙ্গিতে কাজকর্ম করাই এর প্রধানতম কারণ। কিছু নিয়ম মেনে চললে এই ব্যথা অনেকটাই এড়ানো সম্ভব।

কেন ব্যথা

● বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কোমরের হাড়গুলো ক্ষয় হতে থাকে। সাধারণত ৪০ বছর বয়সের পর থেকে এই ক্ষয় শুরু হয়। হাড় ক্ষয়ের কারণে কোমরে ব্যথা হতে পারে।

● পিএলআইডি বা প্রলাপ্সড ভাট্রিব্রাল ডিস্ক সাধারণত ২৫ থেকে ৪০ বছরের মানুষের ক্ষেত্রে বেশি হয়। কোমরের প্রতিটি হাড়ের মধ্যে নরম ডিস্ক থাকে। এই ডিস্ক যদি চ্যুত হয়ে গিয়ে স্নায়ুমূলের ওপর চাপ ফেলে, তাহলে কোমরে ব্যথা হতে পারে।

● ভারী বস্তু তোলার কাজ করলে, কোমরে আঘাত পেলে বা অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে, বসে বা সামনে ঝুঁকে কাজ করলেও কোমরে ব্যথা হয়।

● নিয়মিত দীর্ঘ সময় গাড়ি চালালে আবার কুঁজো হয়ে হাঁটলে বা বসলে কোমরে ব্যথা হয়।

● শরীরের ওজন উচ্চতা অনুযায়ী বেশি হলে কোমরে ব্যথা হয়।

করণীয় কী

● শরীর সামনে বাঁকাবেন না। কোনো কিছু নিচ থেকে তোলার সময় শরীর না বাঁকিয়ে হাঁটু ভেঙে বসে তুলুন। ভারী জিনিস শরীরের কাছাকাছি রাখুন।

● এক হাতে কোনো ভারী জিনিস বহন করবেন না। এতে যে হাতে বহন করবেন, সে পাশের স্পাইনের মাংসপেশিতে টান লাগবে।

ল্যাপটপ বা ডেস্কটপে কাজ করার সময় কোমর সোজা রেখে বসুন। এর জন্য চেয়ারে লাম্বার রোল বা ছোট কুশন ব্যবহার করা যেতে পারে। চেয়ার–টেবিলের উচ্চতায় সামঞ্জস্য থাকতে হবে।

● শক্ত বিছানায় ঘুমাবেন। জাজিম ও পাতলা একটি তোশকের বিছানায় ঘুমাবেন। কোনো ফোম ব্যবহার করবেন না।

● দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকবেন না। যদি দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, তাহলে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে না থেকে ২০ মিনিট পরপর ৫ মিনিট করে বসে পড়ুন। দাঁড়ানোর সময় ফুটরেস্ট ব্যবহার করতে পারেন। অনেকক্ষণ দাঁড়াতে হলে কিছুক্ষণ পরপর শরীরের ভর এক পা থেকে অন্য পায়ে নিন।

● বিছানা থেকে ওঠার সময় সব সময় এক পাশে কাত হয়ে উঠবেন।

● অল্প হিলের জুতা বা স্যান্ডেল ব্যবহার করুন।

● তরকারি কাটা, মসলা পেষা, কাপড় কাচা ও ঘর মোছার সময় মেরুদণ্ড যাতে সোজা অবস্থায় থাকে, সে জন্য উঁচু টুল, টেবিল বা চেয়ার ব্যবহার করবেন।

● নিয়মিত ব্যায়াম কোমরব্যথার ভালো প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। দীর্ঘদিন ধরে ব্যথা থাকলে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।