খাবেন, তবে সতর্ক থাকবেন

ঈদে খাবারদাবার একটু বেশিই হয়ে যায়। কোরবানির ঈদে তো কথাই নেই। এই ঈদে আবার মাংসজাতীয় খাবার বেশি রান্না হয়। একটু বেশি তেল, চর্বি ও মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া হয় কয়েক দিন। নানা পদের কাবাব, ভুনা গোশত, কালাভুনা, মাংসের ঝুরি, কলিজা, আরও কত-কী! এসব খাবার খাওয়ার জন্য দেখা দিতে পারে কিছু সমস্যাও। যেমন:

-অতিরিক্ত তেল, চর্বি ও মসলাযুক্ত খাবার খাওয়ার কারণে বদহজম হয়। পেটে গ্যাস হয়। শব্দ হয়। অনেক সময় পেটে ব্যথাও করে।

-মাংসের পদ বারবার খাওয়ার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে।

-মাংস বা আমিষ সহজপাচ্য নয়। এ ধরনের খাবার পাকস্থলী বা অন্ত্রে দীর্ঘ সময় থাকে। তাই পেট ফাঁপা মনে হয়, অরুচি হয়।

-তেল, চর্বি যাদের হজম হয় না (যেমন: পিত্তথলি অপারেশনের পর, আইবিএস বা প্যানক্রিয়াসের রোগী, নানা পদের ওষুধ খান এমন ব্যক্তি), তাদের আবার পাতলা বা পিচ্ছিল পায়খানা শুরু হয়ে যেতে পারে।

এসব বিরক্তিকর ও বিব্রতকর সমস্যা এড়াতে কিছু সমাধানও আছে। ঈদে-উৎসবে খাবেন তো বটেই, তবে একটু সতর্ক থাকলে কিন্তু নানা সমস্যা এড়ানো যায়।

বদহজম এড়াতে রান্নার পদ্ধতিতে একটু পরিবর্তন আনা যায়। আমরা যে পদ্ধতিতে অনেক তেল-মসলা সহযোগে ভুনা বা কারি রান্না করি, তা যে শুধু উচ্চ ক্যালরি ও চর্বিযুক্ত হয়, তা-ই নয়, হজমেও সমস্যা করে। তার চেয়ে রান্নায় সিরকা, লেবুর রস, দই ইত্যাদি ব্যবহার করলে তা একটু বেশি সহজপাচ্য হয়।

মাংসের পদ বেশি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হবে। তাই চেষ্টা করুন যেন এর সঙ্গে সবজি, সালাদ, ফলমূল ইত্যাদি আঁশযুক্ত খাবারও থাকে। প্রতি বেলায় টেবিলে প্রচুর সালাদ রাখুন। আর প্রচুর পানিও পান করবেন।

কিছু মসলা হজম ও বিপাকে সহায়ক। যেমন: কাঁচা রসুন বা আদা। মাংসের পদ রান্নায় এগুলো বেশি ব্যবহার করবেন। ভালো হয়, যদি এগুলো দিয়ে মাংস অনেকটা সময় মেরিনেট করে রাখতে পারেন।

কাঁচা পেঁপেতে প্যাপেইন ও কাইমোপ্যাপেইন নামের উৎসেচক থাকে, যা মাংসের আমিষ ভাঙতে সহায়ক। তাই মাংস সহজে নরমও হয়, আবার হজমেও সাহায্য করে। আনারসে আছে ব্রোমেলেইন নামের এনজাইম, যা মাংসের আমিষ সহজে ভাঙতে সাহায্য করে। তাই পেঁপে বাটা, কাঁচা আনারস দিয়ে তৈরি করুন নানা রকমের পদ।

ভারী খাবার খাওয়ার পর একটু টকদই বা গ্রিন টি হজম ও বিপাক ক্রিয়ায় সাহায্য করে। অ্যালোভেরার জুসও উপকারী।