জন্মনিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে যা জানা উচিত

নতুন দম্পতির অনেকেই নানা কারণে একটু দেরিতে সন্তান নিতে চান। আবার একটি সন্তান আছে, পরের সন্তান নেওয়ার আগে কয়েক বছরের বিরতি চান কেউ কেউ। দুই-তিন সন্তানের মা–বাবার অনেকে আর সন্তান নিতেই চান না। কারও দরকার প্রসব–পরবর্তী সময়ের জন্য জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি। নানা কারণ ও নানা পরিস্থিতিতে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি বেছে নিতে হয়। জন্মনিয়ন্ত্রণের সঠিক ও যথাযথ পদ্ধতি নিতে না পারলে সমস্যা হতে পারে। এ বিষয়ে জানা না থাকলে পরিবারকে ঘিরে আপনার পরিকল্পনা ভেস্তেও যেতে পারে।

কার ক্ষেত্রে কেমন পরিকল্পনা

জন্মনিয়ন্ত্রণের নানা পদ্ধতি আছে। তবে একেক দম্পতির জন্য একেক পদ্ধতি ভালো।

  • নবদম্পতি বা অল্পবয়সী দম্পতির জন্য তিন বা পাঁচ বছর মেয়াদি জন্মনিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা ইমপ্ল্যান্ট ভালো হতে পারে। এ ছাড়া জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়ি (পিল) অথবা কনডমও নিরাপদ।

  • যাঁদের একটি সন্তান আছে, কিন্তু পরবর্তী সন্তান জন্মের আগে কিছুটা সময় চান (বার্থ স্পেসিং), তাঁদের জন্য তিন মাস মেয়াদি হরমোনাল ইনজেকশন, তিন বছর মেয়াদি ইমপ্ল্যান্ট কিংবা খাওয়ার বড়ি (পিল) ভালো ব্যবস্থা হতে পারে।

  • ৩৫ বছরের বেশি বয়সী নারীদের মধ্যে যাঁদের দুটি সন্তান আছে এবং আর সন্তান নিতে চান না, তাঁদের জন্য সব ধরনের স্থায়ী পদ্ধতিই নিরাপদ।

  • বয়স্ক নারীদের, বিশেষ করে যাঁদের হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি আছে অথবা উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, তাঁদের জন্য কপার-টি ও স্থায়ী পদ্ধতিই বেশি উপযোগী।

  • কমবয়সী নারী-পুরুষের স্থায়ী পদ্ধতি, অর্থাৎ নারীর ক্ষেত্রে লাইগেশন ও পুরুষের ভ্যাসেকটমি পদ্ধতি গ্রহণের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

কখন পিল খাওয়া উচিত

  • কিছু বড়ি প্রতিদিন একই সময়ে খেতে হয়। অন্যথায় বড়ি খাওয়ার পরও গর্ভধারণ হতে পারে।

  • কিছু বড়ি প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে না খেলে সমস্যা হয় না। তবে নির্দিষ্ট সময়ে বড়ি খাওয়াই ভালো। এতে বিষয়টি অভ্যাসে পরিণত হয় এবং বড়ি বাদ পড়ার আশঙ্কা কমে যায়।

পিল খেতে ভুলে গেলে

  • মনে পড়ার পর যত দ্রুত সম্ভব বড়িটি খাবেন অথবা পরের দিন দুটি বড়ি একসঙ্গে খাবেন।

  • মনে সন্দেহ থাকলে পরবর্তী বড়ি খাওয়ার পাশাপাশি পরবর্তী মাসিক শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত কনডম ব্যবহার করুন।

কিছু সতর্কতা

  • কিছু অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিফাঙ্গাল ড্রাগ ও টিবিসহ অন্য কিছু রোগের ওষুধ জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ির কার্যকারিতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। অন্য রোগের চিকিৎসার সময় বড়ির কথা চিকিৎসককে বলতে হবে।

  • বড়ি খাওয়ার পরও গর্ভধারণ হতে পারে। সে ক্ষেত্রে বড়ি খাওয়া বন্ধ করতে হবে এবং দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

অধ্যাপক ডা. মুনিরা ফেরদৌসী, গাইনি ও প্রসূতি বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল