ভালো থাকুন
নবজাতকটি কি সুস্থ
শিশুর জন্মের সময় স্বাভাবিক ওজন থাকে আড়াই কেজি থেকে ৪ দশমিক ৬ কেজি।
নবজাতকের শ্বাসের হার মিনিটে ৩৫ থেকে ৫০-এর মতো হয়ে থাকে। হৃৎস্পন্দনের হার মিনিটে ১২০ থেকে ১৬০-এর মতো হয়।
শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর পরিবারের প্রথম আগ্রহ থাকে, সে কার মতো দেখতে হলো, যথেষ্ট বড় না ছোট ইত্যাদি নিয়ে। কিন্তু এসবের চেয়েও জরুরি বিষয় হলো, শিশুটি সুস্থ ও স্বাভাবিক কি না। পূর্ণ গর্ভকাল পাওয়া শিশুর জন্মের সময় স্বাভাবিক ওজন থাকে আড়াই কেজি থেকে ৪ দশমিক ৬ কেজি। শিশুর শারীরিক দৈর্ঘ্যও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। জন্মের সময় শিশুর শারীরিক দৈর্ঘ্য ২০ ইঞ্চির মতো থাকা উচিত। স্বাভাবিক নবজাতকের মাথার বেড় গড়ে ১৪ ইঞ্চি হয়।
নবজাতকের শারীরিক বৈশিষ্ট্য বেশি বয়সী শিশু বা বড়দের চেয়ে অন্য রকম। এদের শরীরের তুলনায় মাথা বেশ বড়, মুখমণ্ডল গোলাকার, চিবুক লক্ষণীয়ভাবে ছোট, বুক চ্যাপ্টা না হয়ে কিছুটা গোল, উদর বেশ স্ফীত এবং হাত ও পায়ের দৈর্ঘ্য শরীরের অনুপাতে কিছুটা ছোট হয়। এ কারণে নবজাতকের শরীরের মধ্যবিন্দুটি থাকে নাভির কাছাকাছি। কিন্তু বড়দের এই বিন্দু থাকে আরও নিচে। নবজাতকের শ্বাসের হার মিনিটে ৩৫ থেকে ৫০-এর মতো হয়ে থাকে। হৃৎস্পন্দনের হার মিনিটে ১২০ থেকে ১৬০-এর মতো হয়ে থাকে।
নবজাতকের ওজন
শিশুর জন্মকালীন ওজন আড়াই কেজির বেশি হলে স্বাভাবিক হিসেবে গণ্য করা যায়। তবে চার কেজির বেশি ওজন হলে সতর্ক হতে হবে। ওজন বেশি হওয়ার কারণ জরুরি ভিত্তিতে অনুসন্ধান করতে হবে।
স্থূলদেহী মায়ের সন্তান অস্বাভাবিক বড় হয়ে জন্মাতে পারে। আবার ডায়াবেটিক মায়ের সন্তানের ওজনও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হতে পারে। গর্ভকালের ওপর ভিত্তি করে নবজাতক সাধারণভাবে নির্দিষ্ট রকমের ওজন নিয়ে জন্মায়। কিন্তু কোনো কোনো সময় কম গর্ভকাল পাওয়া শিশুর জন্মকালীন ওজন অতিরিক্ত হতে পারে।
জন্মকালীন অতিরিক্ত ওজনের শিশুর আরও কিছু সমস্যা হতে পারে। জন্মের সময় আঘাত লাগতে পারে এদের। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো এরবস পালসি, কেফাল হেমাটোমা, সাবডুরালা রক্তপাতসহ মাথায় নানাবিধ আঘাত, মুখে ও শরীরের নানা অংশে কাটাছেঁড়া প্রভৃতি। স্বাভাবিক ওজনের নবজাতকের তুলনায় এসব শিশুর মধ্যে নানা ত্রুটি, যেমন জন্মগত হৃদ্রোগ বেশি হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তা ছাড়া এসব শিশুর মানসিক বিকাশও ধীর হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
অধ্যাপক প্রণব কুমার চৌধুরী, সাবেক বিভাগীয় প্রধান, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল