শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর নাভির যত্ন নিয়ে অনেকে চিন্তিত থাকেন। কেউ ভাবেন তেল লাগিয়ে রাখলে ভালো, আবার কেউ বারবার অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম লাগাতে চান। নবজাতকের নাভি কাঁচা থাকে। এর মাধ্যমে সদ্যোজাত শিশুর সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই নবজাতকের নাভির সঠিক যত্ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
নাড়ি কাটার পর ৭ দশমিক ১ শতাংশ ক্লোরহেক্সিডিন লাগাতে হয়। প্রথম ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মীরাই এটি লাগিয়ে দেন। তবে ৪৮ ঘণ্টা পার হয়ে গেলে নাভিতে কোনো ড্রেসিং, ব্যান্ডেজ বা অ্যান্টিসেপটিক মলম কিছুই লাগানোর প্রয়োজন নেই। নাভি সব সময় শুকনো, পরিষ্কার ও খোলা রাখতে হবে। অহেতুক নাভিতে হাত দেবেন না।
সাধারণত ৭ থেকে ১০ দিনে নাভি পড়ে যায়। কারও এর চেয়ে বেশি সময়ও লাগতে পারে। নাভি তার আপন নিয়মেই পড়বে। এটা একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এ নিয়ে দুশ্চিন্তা বা অযাচিত হস্তক্ষেপ করার কিছু নেই। নবজাতকের নাভি দিয়ে যদি দুর্গন্ধযুক্ত পুঁজের মতো তরল বের হয়, চারপাশ লালচে হয়ে যায় বা নাভি দিয়ে স্রাব আসতে থাকে তবে বুঝতে হবে সংক্রমণ হয়েছে। তখন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় বাচ্চার নাভি ফুলে উঠছে এবং কাঁদলে আরও বেশি ফোলে। শিশুর নাভির চারপাশের মাংসপেশির দুর্বলতার কারণে এমনটি হয়। একে নাভির হার্নিয়া বলে। কান্নাকাটি করলে, কোষ্ঠকাঠিন্য বা অন্য কোনো কারণে পেটের ভেতরে চাপ বেড়ে গেলে নাভি আরও ফুলে ওঠে। পরে আবার আগের মতো হয়ে যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এক বছরের মধ্যে এটি ভালো হয়ে যায়। বড় হার্নিয়ার ক্ষেত্রে চার-পাঁচ বছরও লাগতে পারে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তা করবেন না। তবে হার্নিয়ার ভেতরে নাড়ি আটকে গেলে, লাল হয়ে গেলে বা অনেক কান্নাকাটি করলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
শিশু বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল