নারী স্বাস্থ্য: কখন কী পরীক্ষা

নারীদের প্রস্রাবে সংক্রমণ ও প্রদাহজনিত সমস্যা বেশি হয়। উপেক্ষা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

নানা কারণে আমাদের দেশে নারীরা খুব সহজে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে চান না। এতে অনেক সময় রোগনির্ণয়ে বিলম্ব হয়। নানা শারীরিক জটিলতায় পড়তে হয় তাঁদের। তাই নারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কখন কী পরীক্ষা করাতে হবে, তা জেনে রাখা দরকার।

কৈশোরে

● বয়ঃসন্ধিতে হরমোনের প্রভাবে মেয়েদের শারীরিক ও আচরণগত পরিবর্তন আসতে পারে। পরিবারের উচিত, তা সংবেদনশীলতার সঙ্গে দেখা। ঋতুস্রাবকালীন পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা।

● কিশোরীদের মাসিকের তারতম্য, থাইরয়েডের সমস্যা আছে কি না, দেখতে হবে। সময়মতো চিকিৎসা নিলে এসব জটিলতা এড়ানো যায়।

● মেয়েদের প্রস্রাবে সংক্রমণ ও প্রদাহজনিত সমস্যা বেশি হয়। উপেক্ষা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

প্রজননকালে

● গর্ভধারণে সক্ষম নারীদের ধনুষ্টঙ্কার, হাম, রুবেলার টিকা নিতে হবে।

● বিয়ের আগেই ছেলে-মেয়ে উভয়ের রক্ত পরীক্ষা করে থ্যালাসেমিয়া আছে কি না জেনে নিতে হবে। রক্তের গ্রুপ, থাইরয়েড, রক্তের শর্করা, রক্তচাপ, হিমোগ্লোবিন ইত্যাদি পরীক্ষা সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করার সময়ই করাতে হবে।

● অন্তঃসত্ত্বা নারীদের চিকিৎসকের নিয়মিত তত্ত্বাবধানে থাকা উচিত। নিয়মিত ওজন ও রক্তচাপ মাপা দরকার।

● গর্ভকালীন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। প্রসব–পরবর্তী সময়ে নিয়মানুযায়ী ডায়াবেটিস পরীক্ষা করাতে হবে। গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ থাকলে সেটিও পরবর্তী সময়ে নিয়ন্ত্রণে আছে কি না জানতে হবে।

মেনোপজের পরে

● মেনোপজের পর নারীদের হাড়ক্ষয় ও হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি বাড়ে। এ সময় চিকিৎসকের পরামর্শে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করাতে হবে।

● ৪৫ বছর বয়সের পর তিন বছর অন্তর নিয়মিত ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা দরকার।

● মেনোপজের পর আবার যোনিপথে রক্তপাত শুরু হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

● ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্য নির্ধারিত চিকিৎসাপদ্ধতি সঠিকভাবে মেনে চলা আবশ্যক।

ক্যানসারের পরীক্ষা

● নারীদের স্তন ও জরায়ুর মুখে ক্যানসারের ক্ষেত্রে দ্রুত শনাক্ত করা গেলে নিরাময়ের সম্ভাবনা বেশি থাকে।

● মাসিক শুরু হওয়া থেকে পঞ্চম দিন পর্যন্ত আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজে স্তন পরীক্ষার পদ্ধতি শিখতে হবে।

● জরায়ুমুখে ক্যানসারের জন্য ২৫ থেকে ৬৫ বছর বয়সী নারীদের তিন থেকে পাঁচ বছর অন্তর ভায়া অথবা প্যাপ স্মিয়ার পরীক্ষা করাতে হবে।

● গর্ভাশয়ে ক্যানসারের লক্ষণ দেখা দিলে বিলম্ব না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

আগামীকাল পড়ুন: মলদ্বারের ক্যানসারের চিকিৎসা