বুকে ব্যথার ধরন বুঝে চিকিৎসা

.
.

বুকের বাঁ দিকে চিনচিনে ব্যথা করলেই দুশ্চিন্তা হয়। হৃদ্যন্ত্র বা হার্টে সমস্যা হয়ে গেল না তো? আজকাল কত অল্প বয়সেই লোকজনের হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে! হৃদ্রোগ ছাড়াও ফুসফুস, পাঁজরের হাড় ও মাংসপেশি, পাকস্থলীর সমস্যা এবং মানসিক জটিলতার কারণেও বুকে ব্যথা হতে পারে। সমস্যাটি মোটেও হালকাভাবে নেবেন না। তাই মাঝেমধ্যে বুকে হালকা ব্যথা হলেও গভীরভাবে খেয়াল করুন, এর ধরনটা কেমন। প্রয়োজনে হৃদ্যন্ত্রের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হবে। হৃদ্রোগজনিত বুকে ব্যথার ধরন:
১. সাধারণত বুকের মাঝখানে বা একটু বাঁ দিকে বেশ খানিকটাজুড়ে ব্যথা অনুভূত হয়। মনে হয় ব্যথাটা যেন চেপে বসেছে বা জমাট হয়ে আছে। কারও কারও মনে হতে পারে, বুকটা মুচড়ে যাচ্ছে বা পুড়ে যাচ্ছে।
২. ব্যথাটা বুক ছাড়াও ঘাড়, কাঁধ, চোয়াল, বাম হাত বা পিঠের দিকেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
৩. ভারী পরিশ্রম, হাঁটা-চলা, সিঁড়ি ভাঙা, দৌড়ঝাঁপ ইত্যাদি কারণে ব্যথা শুরু হতে পারে বা বাড়তে পারে। ভারী খাওয়াদাওয়া, খুব ঠান্ডা আবহাওয়া বা অধিক উত্তেজনার কারণেও বুকে ব্যথা হতে পারে।
৪. খানিকটা বিশ্রাম নিলে বা নাইট্রোগ্লিসারিন স্প্রে ব্যবহার করলে ব্যথা অনেকটাই কমে যায় ও আরাম মেলে।
৫. ব্যথার পাশাপাশি শ্বাসকষ্ট, বুক ধড়ফড়ানি, দুর্বলতা, দমবন্ধ হয়ে আসার মতো অনুভূতি হতে পারে।
স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ওজন, ধূমপান, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং রক্তে বাড়তি চর্বি—প্রভৃতি সমস্যায় হৃদ্রোগের ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়। হৃদ্রোগের পারিবারিক ইতিহাস থাকলেও আপনার ঝুঁকি রয়েছে। এ রকম ক্ষেত্রে বুকে ব্যথাকে গুরুত্ব দিতে হবে। ওজন কমান, উপরিউক্ত সমস্যাগুলোর চিকিৎসা নিন, ধূমপান বর্জন করুন। চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করুন, হালকা শারীরিক পরিশ্রম বা হাঁটা শুরু করুন। হৃদ্রোগ আছে কি না, পরখ করে নিন।

ডা. শরদিন্দু শেখর রায়
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউিট ও হাসপাতাল