মগজ যখন কুয়াশায় ঢাকা

মগজ হয় কুয়াশাচ্ছন্ন, আমরা বলে থাকি ব্রেন ফগ। একে ঠিক মেডিকেল পরিস্থিতি বলা সংগত নয়। এ হলো কিছু উপসর্গ, যেগুলো আমাদের চিন্তার ক্ষমতা খর্ব করে। হতবিহ্বল, এলোমেলো ভাব, মনঃসংযোগে সমস্যা, চিন্তাকে ভাষায় প্রকাশে সমস্যা।

১. গর্ভাবস্থা: অনেক নারী গর্ভাবস্থায় অনেক কিছু স্মরণে রাখতে অসুবিধায় পড়েন। অনেক পরিবর্তন হয় শরীরে, আর যেসব রাসায়নিক উৎসারিত হয় বাচ্চাকে সুরক্ষার জন্য—এরা করতে পারে মনে রাখার সমস্যা।

২. মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস (এমএস): এই রোগ প্রভাব ফেলে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র,আর তা মগজের দেহে সংকেত পাঠানো বদলে দিতে পারে। এমএস আছে, এমন অর্ধেক মানুষ তাঁদের স্মৃতি, মনঃসংযোগ, পরিকল্পনা আর ভাষা ব্যবহারে সমস্যায় পড়েন। লারনিং আর স্মৃতি বাড়ানোর ব্যায়াম কিছু কাজ দেয়। থেরাপিস্টের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।

৩. ওষুধ পত্র: কিছু ওষুধ ‘ওভার দ্য কাউন্টার’ (ফার্মেসি থেকে সরাসরি) কেনা যায়, আবার ব্যবস্থাপত্রেও আসে—এসব ওষুধ ঘটাতে পারে মগজ কুজ্ঝটিকা। ওষুধ গ্রহণের পর যদি দেখেন চিন্তাভাবনা এলোমেলো, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

৪. ক্যানসার আর ক্যানসার চিকিৎসা: কেমোথেরাপি ক্যানসার চিকিৎসার জন্য এসব শক্তিশালী ওষুধ ঘটাতে পারে ‘কেমো ব্রেন’, তখন স্মরণে সমস্যা, নাম–তারিখ মনে আসে না, মাল্টিটাস্ক (একসঙ্গে একাধিক কাজ) করা সম্ভব হয় না। একসময় চলে যায়, আবার অনেকের ক্ষেত্রে সময় লাগে যেতে, ক্যানসার নিজেও ঘটায় ব্রেন ফগ।

৫. মেনোপজ বা বয়ঃসন্ধি: জীবনের এমন পর্যায়ে গেলে অনেক কিছু মনে থাকে না। এমন হয় পিরিয়ড শেষ হওয়ার এক বছর পর, বয়স ৫০ হলে সাধারণত। মগজ কুজ্ঝটিকার সঙ্গে হটফ্লাস উষ্ণ ঝলক হচ্ছে, হৃদহার বাড়ছে, ঘাম হচ্ছে, দেহ তাপ বাড়ছে।

৬. ক্রনিক ফেটিগ সিনড্রোম: এমন হলে দেহ–মন দারুণ ক্লান্ত হয়ে পড়ে, হতে পারেন হতবিহবল, ভুলো মন। ওষুধ, ডাক্তারি চিকিৎসা, টক থেরাপি হতে পারে সমাধান।

৭. বিষণ্নতা: কিছু মনে থাকে না, মনঃসংযোগ হয় না। অ্যানার্জি কম, মোটিভেশন কমে বিষণ্ণতার সঙ্গে। এভাবে হয় বিষণ্ণতা, এমন প্রভাব ফেলে মগজ হয় কুয়াশাচ্ছন্ন।

৮. নিদ্রা: স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য চাই ভালো ঘুম, তবে বেশি ঘুমে হতে পারে মগজে কুয়াশা। ভালো ঘুমের জন্য সন্ধ্যায় চা–কফি বাদ, কম্পিউটার আর মোবাইল ফোনের ব্যবহার কম।

৯. লুপাস: এতে হয় ইমিউন সিস্টেমে (রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা) অসংগতি, কিছু লোকের হতে পারে মগজে কুয়াশা।