রমজানে অপারেশনের রোগীদের করণীয়

রমজান মাসে প্রাপ্তবয়স্ক ও সুস্থ সব মুসলমানের ওপর রোজা রাখা ফরজ। রোজার মাসে জিরোক্যাল নিবেদিত প্রথম আলো অনলাইনের বিশেষ আয়োজন ‘সুস্থ থাকুন রমজানেও’। অনুষ্ঠানের সাম্প্রতিক পর্বে অপারেশনের রোগীদের করণীয় বিষয়ে আলোচনা করেছেন ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের হেড অব ভাস্কুলার সার্জারি এবং সহযোগী অধ্যাপক ও কনসালট্যান্ট ডা. সাকলায়েন রাসেল।

জিরোক্যাল নিবেদিত প্রথম আলো অনলাইনের বিশেষ আয়োজন ‘সুস্থ থাকুন রমজানেও’
ছবি: সংগৃহীত

অপারেশন হওয়ার পর যদি সুস্থ বোধ করেন, তাহলে আপনি চাইলে রোজা রাখতে পারবেন। অপারেশনের পর সুস্থ হওয়ার জন্য কিছু ওষুধ খেতে হয়, যা আপনার শারীরিক সুস্থতার জন্য জরুরি। অপারেশন অনেক ধরনের হয়। এবং অপারেশন-পরবর্তী সাধারণত দুই বেলা ওষুধ দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে আপনি যে ডাক্তারের অধীনে আছেন, রোজা রাখার ব্যাপারে তাঁর সঙ্গে কথা বলে নিন। ডাক্তার যদি আপনার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে রোজা রাখার ব্যাপারে মত দেন, তাহলে আপনি রোজা রাখতে পারবেন।

অপারেশনের রোগীদের যেহেতু নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ওষুধ খেতে হয়, তাই আমরা ওষুধ খাওয়ার সময়টাকে ভাগ করে নিতে বলি। সাহ্‌রিটা সকাল হিসেবে, ইফতারকে দুপুর এবং রাতের খাবারকে রাত হিসেবে চিন্তা করে নিই। এ ক্ষেত্রে সকালের ওষুধটি আপনি সাহ্‌রিতে, দুপুরের ওষুধটি ইফতারে এবং রাতের জন্য নির্ধারিত ওষুধ রাতের খাবারের সময়ই খেতে পারেন। তাতে আপনার অপারেশন-পরবর্তী ওষুধ সেবন নিয়ে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তবে আপনার যদি ডায়াবেটিস থাকে এবং সুগার কমানোর জন্য ইনসুলিন নিয়ে থাকেন, তাহলে কিছু নিয়ম মানতে হবে। এ ক্ষেত্রেও ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে নিতে হবে।

রমজানে ভাজাপোড়া খাবার এড়িয়ে চলুন, একান্তই না পারলে বাড়িতে বানিয়ে খান
ছবি: প্রথম আলো

শরীরে ব্যথা থাকার পরও যদি রোজা রাখতে চান, তাহলে আপনি ব্যথানাশক ওষুধ নিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ হিসেবে যেটা শক্তিবর্ধক নয়, সেটা গ্রহণ করতে পারেন। অপারেশনের পর ডাক্তাররা সাধারণত রোগীকে পুষ্টিকর খাবার খেতে দেন। রোগী যদি রোজা রাখেন, তাহলে তাঁর কিছুটা পুষ্টির অভাব থেকে যায়। সে ক্ষেত্রে ইফতার থেকে সাহ্‌রি পর্যন্ত তাঁর বেশি পুষ্টিগুণসম্পন্ন ফলমূল ও খাবার খেতে হবে। অপারেশনের রোগীদের তুলনামূলক কম নড়াচড়া করতে হয়। এ ছাড়া অপারেশনের রোগীকে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।

রমজানের অনেক ভালো দিকের একটি হলো ধূমপান থেকে বিরত থাকা। রোজা রাখার ফলে প্রায় ১৪ ঘণ্টা ধূমপান থেকে বিরত থাকা হয়। রাতে আমরা গড়ে ছয় ঘণ্টা ঘুমাই। তার মানে রমজানে ধূমপায়ীদের সব মিলিয়ে প্রায় ২০ ঘণ্টা ধূমপান থেকে বিরত থাকা হয়। যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। টানা এক মাস এই অভ্যাসের ফলে অনেকেই ধূমপান ছেড়ে দিতে পারেন।

রমজান মাসে শরবতসহ নানা রকম ইফতারে অনেকেই চিনি বেশি গ্রহণ করেন। এ ক্ষেত্রে আমরা বলব, শুধু অপারেশনের রোগীদেরই নয়, চিনি সবার জন্যই ক্ষতিকর। চিনি যত কম খাবেন স্বাস্থ্যের জন্য ততই ভালো। আর মিষ্টিজাতীয় কিছু যদি খেতেই হয়, তাহলে চিনির পরিবর্তে বিকল্প কিছু খেতে পারেন।