ভালো থাকুন
শিশুর ইনফ্লুয়েঞ্জার উপসর্গ
স্টেরয়েড বা রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমিয়ে দেয়, এমন ওষুধ সেবন করা কিংবা এইচআইভিতে আক্রান্ত শিশুরা ইনফ্লুয়েঞ্জায় সংক্রমিত হলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে।
ইনফ্লুয়েঞ্জা এ এবং বি বৃহদাকার আরএনএ ভাইরাস। ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত বয়স্ক রোগীর হাঁচি-কাশির মাধ্যমে বা ব্যবহৃত জিনিসপত্র থেকে এ জীবাণু শিশুর শরীরে প্রবেশ করে। এক থেকে চার দিনের মধ্যে সচরাচর এ রোগের উপসর্গ দেখা দেয়।
ইনফ্লুয়েঞ্জায় প্রতিবছর উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। কোনো কোনো শিশুর ক্ষেত্রে এই রোগ মারাত্মক আকার ধারণ করে। এতে অনেকের মৃত্যুও হয়। দুই বছরের কম বয়সী ও স্থূলকায় শিশুদের ভাইরাসে সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে। অ্যাজমা, হৃদ্যন্ত্রের জন্মগত ত্রুটি, কিডনি, যকৃৎ, স্নায়ুতন্ত্রের জটিলতাজনিত বিভিন্ন ধরনের অসুখে ভোগা শিশুদের ক্ষেত্রে এই রোগ জটিল আকার ধারণ করতে পারে। স্টেরয়েড বা রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমিয়ে দেয়, এমন ওষুধ সেবন করা কিংবা এইচআইভিতে আক্রান্ত শিশুরা ইনফ্লুয়েঞ্জায় সংক্রমিত হলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে।
উপসর্গ
■ ইনফ্লুয়েঞ্জার উপসর্গের মধ্যে রয়েছে হঠাৎ জ্বর, মাংসপেশিতে ব্যথা, কাঁপুনি, মাথাব্যথা, ক্লান্তিভাব, গা ম্যাজম্যাজ করা ও ক্ষুধামান্দ্য। শিশুর রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম হলে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের পথ তৈরি হয়। ফলে শিশু সেপসিস, নিউমোনিয়ার কবলে পড়ে। এতে জ্বরের মাত্রা অনেক বেড়ে যায় এবং শিশু গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে।
■ ইনফ্লুয়েঞ্জার কারণে অনেক সময় শিশুর শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যাও শুরু হয়। আবার কখনো গালের পাশের পেরোটিড গ্ল্যান্ড ফুলে যায়, কান পাকে। এ ছাড়া খিঁচুনি, মস্তিষ্কে সংক্রমণ দেখা দিতে পারে।
করণীয়
■ র্যাপিড অ্যান্টিজেন, আরটি-পিসিআর পরীক্ষার মাধ্যমে ইনফ্লুয়েঞ্জা নির্ণয় করা যায়। রোগ চিহ্নিত করার পর সুনির্দিষ্ট অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ প্রয়োগ করা হয়।
■ শিশুকে প্রচুর পরিমাণে তরল খাবার ও পানীয় দিতে হবে। বিশ্রামের ব্যবস্থা করতে হবে। অসুস্থ অবস্থায় শিশুকে স্কুলে পাঠানোর দরকার নেই। নিউমোনিয়া বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হলে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগের প্রয়োজন হতে পারে।
■ শিশুর জ্বর হলে প্যারাসিটামল দিতে হবে। তবে কখনো যেন সেলিসাইলেট বা অ্যাসপিরিনজাতীয় ওষুধ দেওয়া না হয়। এসব ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কিছুতেই দেওয়া উচিত নয়।
প্রতিরোধমূলক টিকা
শিশুর বয়স ৬ মাস থেকে ৮ বছরের মধ্যে ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রতিষেধক টিকা দিতে হবে। এই টিকা ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগ প্রতিরোধের কার্যকর উপায়। তবে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুদের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে টিকা দিতে হবে।
আগামীকাল পড়ুন: করোনা–পরবর্তী দুর্বলতা